যশোর: টানা ভারি বৃষ্টি ও হরিহর নদের পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হতে শুরু করেছে যশোরের কেশবপুর পৌরসভার বেশ কিছু এলাকা। গত বছরও এই এলাকা প্লাবিত হয়ে প্রায় ছয় মাস জলাবদ্ধ ছিলেন এলাকাবাসী।
তবে, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ^স্ত করে বলা হয়েছে পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে দ্রুত কচুরিপনা অপসরণে কাজ শুরু করা হবে।
হরিহর নদের পানি সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় এক ফুট বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমায় পৌঁছেছে। এতে প্লাবিত হয়েছে মধ্যকুল খানপাড়া। এতে ২০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানির তোড়ে ভেঙে গেছে খোঁজাখালি খালের স্লুইস গেটের একটি কপাট। ভারি বৃষ্টির কারণে রামচন্দ্রপুর গ্রামের আব্দুল্লাহ গাজীর বসতঘরে একটি রেইনট্রি (শিশু) গাছ উপড়ে পড়ে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে।
খোঁজাখালি খালের ভাঙা কপাট দিয়ে পানি উজানে ঢুকে কেশবপুর সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার কৃষি জমি প্লাবিত হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আমন ধানের বীজতলাসহ ৩১ হেক্টর ফসল আক্রান্ত হয়েছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে বুধবার দুপুরে খোঁজাখালি খালের স্লুইস গেট এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
মধ্যকুল খানপাড়ার অধিবাসীরা জানান, পানিবন্দি অবস্থাতেই তাদেরকে সকল কাজ করতে হচ্ছে। তারা আশংকা করছেন, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে গত বছরের মতো এবারও তাদেরকে জলাবদ্ধ অবস্থায় বসবাস করতে হতে পারে। সেবার আগস্ট মাস থেকে শুরু করে প্রায় ছয় মাস তারা পানিবন্দি ছিলেন।
সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক আলাউদ্দীন আলা বলেন, কেশবপুরের জলাবদ্ধতা নিরসন করতে হলে হরিহর নদের আট কিলোমিটার অবিলম্বে খনন করতে হবে। তা-না হলে উপজেলাসহ পাশের মণিরামপুরের কিছু এলাকা এবারও বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়বে।
তিনি আশংকা করে বলেন, গতবার যে পরিস্থিতি ছিল এবার তার থেকেও ভয়াবহ অবস্থা হতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন শিকদার বলেন, হরিহর নদের কেশবপুর অংশে এক ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমায় পৌঁছেছে। জরুরি ভিত্তিতে হরিহর নদের কেশবপুর সদর হতে বড়েঙ্গা পর্যন্ত চার কিলোমিটার ও আপার ভদ্রা নদী নুরানিয়া পর্যন্ত তিন দশমিক ছয় কিলোমিটার খনন করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
খোঁজাখালি খালের স্লুইস গেটের ভাঙা কপাট বন্ধ করে দেওয়ারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে ১২ হেক্টর আমন ধানের বীজতলা, ১৮ হেক্টর পাট ও এক হেক্টর সবজি আক্রান্ত হয়েছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন বলেন, খোঁজাখালি খালের স্লুইস গেটের কপাট ভেঙে যাওয়ার খবর শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। দ্রুত জিও ব্যাগ দিয়ে ওই স্থান বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে নদের পানিপ্রবাহ ঠিক রাখতে কয়েক দিনের ভেতর কচুরিপানা অপসারণ শুরু হবে।
এসএইচ