ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৭ আগস্ট ২০২৫, ১২ সফর ১৪৪৭

সারাদেশ

নোয়াখালী মাইক্রোবাস দুর্ঘটনা

ঘুম ঘুম চোখে গাড়ি চালাচ্ছিলেন চালক, শেষ একটি পরিবার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:১০, আগস্ট ৬, ২০২৫
ঘুম ঘুম চোখে গাড়ি চালাচ্ছিলেন চালক, শেষ একটি পরিবার নিহতদের বাড়িতে স্বজন ও এলাকাবাসী

চালক ঘুম ঘুম চোখে গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন বেঁচে ফেরা যাত্রীরা। তারা জানান, বেশ কয়েকবার চালককে সাবধানতা বজায় রেখে গাড়ি চালাতে বলেছিলেন।

কিন্তু চালকের বেপরোয়া গতি এবং খামখেয়ালিপনায় একইসঙ্গে সাতটি তাজা প্রাণ ঝরে গেল।

গাড়িতে মোট ১৩ জন যাত্রী ছিল, এর মধ্যে চালকসহ ছয়জন যাত্রী বেঁচে ফিরেছেন।

বেঁচে ফেরা যাত্রী ওমান প্রবাসী বাহার, তার বাবা আবদুর রহিম ও শ্বশুর ইসকান্দর মির্জা জানান, গাড়ি চালানোর সময় চালককে ঘুম ঘুম চোখে লক্ষ্য করা গেছে। তাকে বার বার অনুরোধ করা হয়েছে, গাড়ি থামিয়ে একটু ঘুমিয়ে নিতে। কিন্তু তিনি শোনেননি। তার খুব তাড়া ছিল।

গাড়ি চালকের পুরো পরিচয় জানা যায়নি, তার নাম রাজু বলে জানিয়েছেন তারা।  

ওমান প্রবাসী বাহারের শ্বশুর ইসকান্দর মির্জা বলেন, ফেনীর মহিপাল এলাকায় আমরা যাত্রাবিরতি নিই। চালককে বলেছি দুই ঘণ্টা গাড়িতে রেস্ট করে নিতে প্রয়োজনে আমরা একটু পরে যাব, কিন্তু তিনি শোনেননি। তার খুব তাড়া ছিল, তাই দ্রুত চলে আসছেন। তার চোখে ঘুম ছিল, তাই গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে খালে নামিয়ে দেন।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর আমি চালককে আটক করি। কিন্তু তার মালিক এসে তাকে নিয়ে যায়।

ওমান প্রবাসী বাহার বলেন, চালক অসংলগ্ন ভাবে গাড়ি চালিয়েছেন। আমরা যখন কুমিল্লাতে ছিলাম, তখনও একটি ড্রাম ট্রাকের সঙ্গে তিনি লাগিয়ে দিতে চেয়েছেন। সেখান থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পাই।

বাহারের বাবা আবদুর রহিম বলেন, পুরো দোষ চালকের। তার ভুলের কারণে আমাদের সাতজন প্রাণ হারিয়েছে।

চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে। চালক পালিয়ে গেছে। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন স্থানে চালকের বিষয়ে তথ্য দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ঢাকার বিমানবন্দর থেকে আসার সময় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ পূর্ব বাজারের যাত্রীবাহী একটি মাইক্রোবাস খালে পড়ে যায়। এতে একই পরিবারের তিন মেয়ে শিশুসহ সাতজন নিহত হয়।  

এ দুর্ঘটনায় বেঁচে ফিরেছেন গাড়িচালকসহ ছয়জন।  

নিহতদের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের পশ্চিম চৌপল্লী গ্রামের কাসালী বাড়ি। ওই বাড়ির ওমান প্রবাসী বাহারকে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে নিয়ে আসার সময় পথে বাড়ি থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।  

নিহতরা হলেন- প্রবাসী বাহারের মা মুরশিদা (৫০), স্ত্রী কবিতা (২৩), মেয়ে মীম (২), নানী ফয়জুননেছা (৮০), ভাইয়ের স্ত্রী লাবনী (২৫), ভাতিজি লামিয়া (৮) ও রেশমী (৯)।  

বেঁচে ফেরা যাত্রীরা হলেন- প্রবাসী বাহার ও তার বাবা আবদুর রহিম, শ্বশুর ইসকান্দর মির্জা, তার শ্যালক রিয়াজ ও ভাইয়ের স্ত্রী সুইটি এবং গাড়ি চালক রাজু।  

** একই পরিবারে নিহত ৭: পরিবারে শোকের মাতম

** নোয়াখালীতে মাইক্রোবাস খালে, নিহত ৭ 

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।