চলতি ২০২৫-২৬ রোপণ মৌসুমে নাটোর চিনিকলে ১ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন আখ উৎপাদনের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আখ রোপণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এজন্য এবার চিনিকলের ৮টি সাবজোনের ৯৭ ইউনিটে ৮ হাজার ৫০০ একর জমিতে আখ চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে মিল কর্তৃপক্ষ।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে নাটোর মিলগেট সাবজোনের বারঘড়িয়া এলাকায় আখচাষি সুজন ৫০ একর জমির বেড়ে চারা স্থাপন করার মধ্য দিয়ে নাটোর চিনিকলের ২০২৫-২৬ রোপণ মৌসুমে আখ রোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
ভার্চুয়ালি নাটোর চিনিকলসহ চালুকৃত দেশের নয়টি চিনিকলের আখ রোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অতিরিক্ত সচিব ও চেয়ারম্যান মো. রশিদুল হাসান।
এসময় তিনি বলেন, চিনি শিল্প রক্ষায় সবার আগে আমাদের কৃষকদের কল্যাণে কাজ করতে হবে এবং চিনি শিল্পের উন্নয়নে কৃষকদের আখ রোপণ করতে হবে। তাহলে আমরা চিনি উৎপাদন করে সেই আগের স্থানে ফিরতে পারবো। সব চাষিদের আখ চাষে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
নাটোর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ মো. আখলাছুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের যুগ্ম সচিব ও পরিচালক (ইক্ষু উন্নয়ন ও গবেষণা) ড. আব্দুল আলীম খান।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- নাটোর চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক জিএম (প্রশাসন) আনোয়ার হোসেন, জিএম (কৃষি) ফেরদৌসুল আলম, চিনিকলের ডিজিএম ফারুক আহমেদ, উপব্যবস্থাপক (সম্প্রসারণ) মো. আতাউর রহমান, ডিজিএম (সিপি) নজরুল ইসলাম, নাটোর চিনিকলের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আইয়ুব আলী, সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদসহ আখচাষি ও কর্মকর্তা-কর্মচারী।
এদিকে নাটোর চিনিকল সূত্রে জানা যায়, গত মৌসুমে চিনিকল এলাকায় ৮ হাজার একর জমিতে আখ চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে চাষাবাদ হয়েছে ৮ হাজার ১০ একর। আর আখ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯০ হাজার মেট্রিক টন। সেখানে উৎপাদন হয় ১ লাখ ৭ হাজার মেট্রিক টন। অর্থাৎ ১৭ হাজার মেট্রিক টন আখ বেশি উৎপাদন হয়।
সূত্র আরও জানায়, প্রতি একরে ২০ হাজার মেট্রিক টন আখ উৎপাদনের হিসাব ধরলে চলতি মৌসুমে চিনিকলের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রোপণকৃত জমিতে প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন সম্ভাব্য আখ উৎপাদন হবে। সেখানে এক লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন হলেও চিনিকল লাভজনক অবস্থায় থাকবে।
অন্যদিকে গত মৌসুমে ৫ হাজার ১৩০ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছিল। সেখানে চিনি উৎপাদন হয়েছে ৬ হাজার ১৩৮ মেট্রিক টন। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০০০ মেট্রিক টন বেশি পরিমাণ চিনি উৎপাদন হয়েছে। এবারও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আখ চাষাবাদ করা হলে এবং সময় মতো চাহিদা মাফিক কৃষকরা মিলে আখ সরবরাহ করলে চিনিকলটি আবারও লাভের মুখ দেখবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে এবার প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কৃষক আখ চাষাবাদ শুরু করেছেন।
আরএ