ঢাকা, সোমবার, ৪ কার্তিক ১৪৩২, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৭

সারাদেশ

ফরিদপুরে এ কে আজাদের গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:১২, অক্টোবর ১৯, ২০২৫
ফরিদপুরে এ কে আজাদের গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ  ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি

ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদের গণসংযোগে হামলার ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক নায়াব ইউসুফের পক্ষে স্লোগান দিয়ে এই হামলা চালানো হয়।

হামলায় এ কে আজাদের গাড়িবহরের মধ্যে দুটি গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে।  
 
তবে পুলিশের হস্তক্ষেপের কারণে বড় কোনো অঘটন ঘটা ছাড়াই এ কে আজাদ তার বহর নিয়ে ওই এলাকা ত্যাগ করেন।

রোববার (১৯ আগস্ট) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে ফরিদপুর সদরের কৃষ্ণ নগর ইউনিয়নের পমানন্দপুর বাজার এলাকায়।


বিকেল ৪টার দিকে এ কে আজাদ পরমানন্দপুর বাজারে যান। প্রথমে তিনি পরমানন্দপুর বাজার সংলগ্ন জামে মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি বাজার এলাকায় এসে গণসংযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় সদর উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক লুৎফর রহমান ও কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের যুবদলের সভাপতি নান্নু মোল্লার নেতৃত্বে একটি মিছিল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। মিছিলকারীরা এ কে আজাদকে উদ্দেশ্য করে স্লোগান দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। মিছিলকারীরা ‘অ্যাকশন অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ স্লোগান দিয়ে এ কে আজাদকে ঘিরে ফেলার চেষ্টা করে। এসময় মিছিলকারীদের নায়াবা ইউসুফের পক্ষে স্লোগান দিতে শোনা যায়। নায়াব কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর-৩ আসনে বিএনপির একাংশের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী।

ওই সময় এ কে আজাদের নিজস্ব নিরাপত্তাবাহিনী তাকে ঘিরে রাখেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে যুবদলের নেতাকর্মীদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় মিছিলকারীদের সঙ্গে পুলিশের তর্ক-বিতর্ক হয়। পরে পুলিশের অনুরোধে এ কে আজাদ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেল সোয়া ৫টার দিকে পরমানন্দপুর মাঠে অবস্থান নেওয়া এ কে আজাদের গাড়িবহর পুলিশ প্রহরায় একে একে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তবে শেষের দুটি গাড়িতে আখ দিয়ে আঘাত করে কাঁচ ভাঙচুর করে যুবদলের নেতাকর্মীরা।

জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ফরিদপুর সদর উপজেলার ইউনিয়নে যুবদলের কোনো কমিটি নেই। পরমানন্দপুরে আমার কোনো লোক এ ঘটনা ঘটায়নি।

ফরিদপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ কে আজাদ বলেন, রাজনীতির এ সহিংসতার ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। এ ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। গত নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগ প্রার্থী শামীম হকও এ জাতীয় আচরণ করেননি। নায়াব ইউসুফের কাছ থেকে এ জাতীয় আচরণ এলাকাবাসী প্রত্যাশা করেনি। এ সব ঘটনা রাজনৈতিক সংকটকে ঘণিভূত করবে।

এ কে আজাদ বলেন, তিনি এ ঘটনার জন্য মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক নায়াব ইউসুফ বলেন, আমি এই সবের মধ্যে নেই। আমি আমার নেতাকর্মীদের দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছি, এ জাতীয় কোনো কাজ না করতে।  

নায়াব ইউসুফ বলেন, এ কে আজাদ আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করছেন তার কোনো ভিত্তি নেই, তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব কথা বলছেন যাতে আমার ক্ষতি হয়। তিনি বলেন, তার বহরের সঙ্গে আওয়ামী লীগ পদধারী নেতারা থাকেন। এদের দেখে জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, পরমানন্দপুরে আজ ছিল হাঁটের দিন। সেখানে এ কে আজাদ গণসংযোগ করতে গিয়েছিলেন। অপরদিকে যুবদলের লোকজনও গণসংযোগ করছিল। এসময় দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থায় চলে এলে এক সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।  

ওসি বলেন, এসময় পুলিশ অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এ কে আজাদের গাড়িবহর নির্বিঘ্নে পার করিয়ে দেয়।

দুটি গাড়ি ভাঙচুরের বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ জানায়, একটি এ কে আজাদের বহরের এবং অন্যটি আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর। এ ঘটনায় অভিযোগ এলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন পুলিশ।

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।