ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

পুঁজিবাজার স্থিতিশীলে প্রয়োজন পাঁচ ইস্যুর বাস্তবায়ন

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০১৬
পুঁজিবাজার স্থিতিশীলে প্রয়োজন পাঁচ ইস্যুর বাস্তবায়ন

ঢাকা: ছয় বছর পর বেশ কিছু সুখবরে ইতিবাচক ধারায় হাঁটছে দেশের পুঁজিবাজার। এ বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে পাঁচটি ইস্যুর বাস্তবায়ন প্রয়োজন বলে মনে করে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশেন (বিএমবিএ)।

ইস্যুগুলো হচ্ছে- পুঁজিবাজ‍ার পরিচালনায় ‍সুশাসন নিশ্চিত করা, শিগগিরই ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট চালু, মার্জিন ঋণে অর্থ সংকটে থাকা ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের জন্য পলিসি সহায়তা, মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিটধারী হোল্ডারদের ওপর আরোপিত ট্যাক্স প্রত্যাহার করে তাদের ক্যাপিটাল গেইনের আওতায় আনা এবং ভালো ভালো কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করা।

বিএমবিএ’র এ ইস্যুগুলোর সঙ্গে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ঐকমত্য পোষণ করেছে। বেশ কিছু বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা কাজ করছে। কয়েকটি বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের স্মরণাপন্ন হয়েছে।

বিএমবিএ’র সভাপতি ছাইদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, স্থিতিশীল রাখতে পুঁজিবাজ‍ার পরিচালনায় ‍ প্রয়োজন সুশাসন নিশ্চিত করা। এটি নিশ্চিত করা হলে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে। পাশাপাশি বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়বে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের।

তিনি বলেন, লেনদেনের পরিমাণ ও বাজারের পরিধি বাড়াতে নতুন নতুন কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করা এবং অন্যান্য খাতের মতো সহজ শর্তে বিশেষ তহবিল সুবিধা দেওয়া দরকার।

পাঁচটি ইস্যুর সঙ্গে একমত পোষণ করেন চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) এমডি সাইফুল ইসলাম মজুমদার। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, একটি স্থিতিশীল বাজারের জন্য প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ। তাদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ইক্যুইটি মার্কেট শক্তিশালী হবে বলেও মনে করেন তিনি।

ঢ‍াকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক শরিফ আতাউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজন নতুন নতুন প্রোডাক্ট আনা ও একটি সক্রিয় বন্ড মার্কেট চালু করা।

তিনি বলেন, ‘বন্ড মার্কেটে বিনিয়োগের অনেক মানুষ রয়েছে। কিন্তু দু:খের বিষয়, আমাদের দেশে বন্ড মার্কেট নেই’।

বিএসইসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, ২০১০ সালের পর কমিশন নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি দক্ষ ও জবাবদিহিতামূলক পুঁজিবাজার গঠন করতে সমর্থ হয়েছে। ফলে বাজারের উন্নয়নে এখন প্রয়োজন বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনা। তাদের বর্তমানে ১০ শতাংশ কর সুবিধা দেওয়া রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও পুঁজিবাজারে আসছে না। তাই এ বিষয়ে প্রয়োজন অর্থ মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ।

সম্প্রতি বিএমবিএ’র অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ভবিষ্যত অত্যন্ত উজ্জ্বল। আগামী দুই বছরের মধ্যে এর প্রতিফলন দেখা যাবে।

তার কারণ ব্যাখ্যা দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ধসের পর আমরা শক্ত বাজার ব্যবস্থা তৈরি করেছি। এতে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের বিশ্বাস ও আস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ভবিষ্যত অত্যন্ত উজ্জ্বল’।

এদিকে সর্বস্তরে ব্যাংকের সুদের হার কম থাকা, স্টক এক্সচেঞ্জগুলোতে বিদেশি কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের আগমন এবং নেগেটিভ ইক্যুইটিতে থাকা ৬ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গড়ে ওঠার সুখবরে আস্থা ফিরছে বিনিয়োগকারীদের। তারল্য সংকটে থাকা বাজারে গত কয়েক মাস ধরে সূচক-লেনদেন ও বেশিরভাগ শেয়ারের দাম বাড়ছে। একই সঙ্গে যোগ হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের হারানো মূলধন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৬
এমএফআই/এসএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।