ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

আসন্ন বাজেটে শতভাগ কর অবকাশ সুবিধা চায় ডিএসই

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০১৭
আসন্ন বাজেটে শতভাগ কর অবকাশ সুবিধা চায় ডিএসই

ঢাকা: আসছে বাজেটে (২০১৭-১৮ অর্থবছর) শতভাগ কর অবকাশ সুবিধা চায় দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করে ৪শ’ থেকে ৫শ’ কোটি টাকা বেশি পাবে ডিএসই। বাড়বে সরকারের রাজস্ব আয়ও।

সম্প্রতি এমনই একটি প্রস্তাব অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের কাছে দিয়েছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ।
 
এ বিষয়ে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কেএএম মাজেদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, পুঁজিবাজারের সঙ্গে এখন ১ কোটি লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত।

বিশ্বায়নের যুগেও স্বচ্ছ ও স্থিতিশীল পুঁজিবাজার গঠনের জন্য ডিএসইকে পূর্ণাঙ্গ কর অবকাশ খুবই জরুরি।
 
তিনি বলেন, ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কিম সরকার অনুমোদিত ৫ বছর মেয়াদি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এ স্কিমের আওতায় স্টক এক্সচেঞ্জের যে সংস্কার কার্যক্রম চলছে তা চলমান রাখতে ও পুঁজিবাজারের অবকাঠামোগত বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধির স্বার্থে শতভাগ হারে কর অবকাশ আগামী ২০১৯ সাল পর্যন্ত অব্যাহত রাখা একান্ত প্রয়োজন।
 
ডিএসইর প্রস্তাবনায় বলা হয়, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নের সঙ্গে সমন্বয় রেখে ডিএসই বিশ্বমানের ট্রেডিং ও ম্যাচিং সিস্টেম বাস্তবায়ন করেছে। বাজারে ব্যাপ্তি ও লেনদেন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারি ট্রেজারি বন্ডের লেনদেন, ইটিএফ, ডেরিভেটিভসের মতো অ্যাডভান্স ইন্সট্রুমেন্ট চালুর জন্য কাজ করছে। এসএমই বা স্বল্প মূলধনী কোম্পানির তালিকাভুক্তি ও লেনদেনের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের তত্ত্বাবধানে আলাদা র্বোড গঠনের কাজ এগিয়ে চলছে।
 
এছাড়াও আলাদা ক্লিয়ারিং ও সেটেলমেন্ট কোম্পানি এবং ওটিসি মার্কেটের আধুনিকায়নের কাজ অব্যাহত রয়েছে। এসব কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য ডিএসই’র আর্থিক সক্ষমতা প্রয়োজন। যার ফলশ্রুতিতে সম্ভাবনাময় পুঁজিবাজার দীর্ঘমেয়াদে নতুন উচ্চতায় স্থান পাবে।
 
এক্সচেঞ্জের আয়ের উপর যদি কর আরোপ করা হয়, সেক্ষেত্রে এক্সচেঞ্জ তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে লেনদেন ফি’র হার বাড়িয়ে দিতে বাধ্য হবে। যা পক্ষান্তরে সাধারণ বিনিয়োগকারীর ওপরই বর্তাবে। এতে পুঁজিবাজারের ওপর বিরুপ প্রভাব পড়বে। যা শিল্প ও বাণিজ্যিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করবে।
 
আর করের কারণে লেনদেন ফি বাড়িয়ে দিলে ট্রেডের পরিমাণ ব্যাপক হারে কমবে। ফলে বর্তমানের চেয়ে চারগুণ রাজস্ব আয় কমবে।
 
প্রস্তাবে আরও বলা হয়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ডিএসইতে ৯ কোটি টাকা নেট পরিচালন মুনাফা হয়েছে। সুতরাং, এখনই যদি আবার একই আয়ের ওপর কর আরোপ করা হয় তবে স্টক এক্সচেঞ্জের সফলতার ব্যাপারে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও স্বদিচ্ছার ব্যত্যয় ঘটবে।
 
এ ছাড়াও ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন অনুযায়ী এক্সচেঞ্জের বর্তমান শেয়ারহোল্ডারদের ৬০ শতাংশ শেয়ার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে অচিরেই বিক্রি করতে হবে। যদি এখনই এক্সচেঞ্জগুলোর আয়ের উপর কর বসানো হয় তবে এটি এক্সচেঞ্জের নিট আয় বিশেষভাবে কমে যাবে। যা ডিএসইর শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) এবং শেয়ার প্রতি নেট অ্যাসেট ভ্যালুর (এনএভি) ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে।
 
এতে ডিএসইর নিজস্ব শেয়ারের বিক্রয়মূল্যের ওপর বিরুপ প্রভাব পড়বে। ফলস্বরুপ আয়কর ধার ৫৩ এর অধীনে এক্সচেঞ্জের নিজস্ব শেয়ার বিক্রি থেকে অর্জিত মূলধন লাভের উপর ১৫ শতাংশ হারে কর আদায় ব্যাপকভাবে কমবে। যার পরিমাণ ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা হতে পারে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৭
এমএফআই/এসআরএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।