ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

করোনা

পুঁজিবাজারে মূলধন কমেছে ৬০ হাজার কোটি টাকা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২০
পুঁজিবাজারে মূলধন কমেছে ৬০ হাজার কোটি টাকা

ঢাকা: চলতি বছরের বেশি সময় ধরেই দেশের পুঁজিবাজারে ছিল অস্থিরতা। তারল্য ও আস্থা সংকটের মধ্য নতুন করে যুক্ত হয় করোনা আতঙ্ক। এ আতঙ্কে শেয়ার বিক্রি করে পুঁজি নিয়ে বাজার ছেড়েছেন অনেক বিনিয়োগকারীরা। যার ফলে চলতি মাসজুড়ে পুঁজিবাজারে বাজার মূলধন কমেছে ৬০ হাজার কোটি টাকা। একইসঙ্গে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ সূচক ৪৭২ পয়েন্ট ও অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক দুই হাজার ৪১৪ পয়েন্ট কমেছে।

ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিকে, মার্চজুড়েই পুঁজিবাজারে করোনার প্রভাব ছিল।

প্রতিনিয়ত পতনের নতুন রেকর্ড গড়ে দেশের পুঁজিবাজার। স্টক এক্সচেঞ্জ ও নিয়ন্ত্রণ সংস্থা শত চেষ্টা করেও পতন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়। বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে দাবি ওঠে পুঁজিবাজার বন্ধ রাখার। এমন অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তে শেয়ারের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারণ করা হলে তলানি থেকে রক্ষা পায় দেশের পুঁজিবাজার। ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণটি বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত ছিল।

এ ব্যাপারে ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট বর্তমান পরিচালক রকিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, করোনা ভাইরাস আতঙ্কে যখন বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাজার ধসে কোন প্রণোদনায় কাজ করছে না। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে ও ক্রমাগত দরপতন হচ্ছে, বাজারে শেয়ারের দাম ফ্রি ফল হচ্ছে, লাখো বিনিয়োগকারী যখন দিশেহারা ঠিক তখনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর একটি সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারে দরপতন ঠেকাতে বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে। এতে করে বাজারে শেয়ারের দাম ফ্রি ফল বন্ধ হয়েছে এবং এতে করে লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। তার কারণ শেয়ার প্রাইস ঠিক করে দেওয়া অর্থাৎ একটি শেয়ারের দাম নির্দিষ্ট দামের নিচে নামতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী এ সিদ্ধান্ত অত্যন্ত যুগোপযোগী এবং সঠিক বলে তিনি জানান। এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আগামী দিনে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলেও তিনি জানান।

এ ব্যাপারে ডিএসইর আরেক পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, করোনা আতঙ্কে বাজারে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণে বাজার বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে বলে তিনি জানান।

অন্যদিকে বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ১ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত মোট ১৮ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে বাজার মূলধন ৩০ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা হারিয়েছে। একই সময়ে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) বাজার মূলধন ২৯ হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা হারায়।

জানা গেছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ কার্যদিবস ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ৪২ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা। ২৫ মার্চ পর্যন্ত ডিএসইতে ১৮ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। আর এ ১৮ কার্যদিবসে বাজার মূলধন ৩০ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১২ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকায়। অর্থাৎ এ ১৮ কার্যদিবসের প্রতি কার্যদিবসে বাজার মূলধন ২ হাজার ৭০২ কোটি টাকা করে কমেছে।

একই সময়ে সিএসইতে বাজার মূলধন ২৯ হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা কমেছে। ফেব্রুয়ারির শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন ছিল ২ লাখ ৭৪ হাজার ১১০ কোটি টাকা। আর ২৫ মার্চ বাজার মূলধন দাঁড়ায় ২ লাখ ৪৪ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা। অর্থাৎ এ সময়ে প্রতি কার্যদিবসে সিএসই বাজার মূলধন হারিয়েছে ১ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা করে।

২৫ মার্চ পর্যন্ত ১৮ কার্যদিবস শেয়ারবাজারে লেনদেন হয়েছে। এ ১৮ কার্যদিবসের মধ্যে বেশির কার্যদিবসই পতন হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)। ডিএসইতে এ সময় পর্যন্ত প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪৭২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮ পয়েন্টে। অপর দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১২৩ পয়েন্ট কমে ৯২১ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৬৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৩১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২ হাজার ৪১৪ পয়েন্ট বা কমে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৩২৮ পয়েন্টে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৬ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২০
এসএমএকে/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।