ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খেলা

ফিকে হয়ে আসছে বাংলাদেশের স্বপ্ন

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৫
ফিকে হয়ে আসছে বাংলাদেশের স্বপ্ন

ইয়াসির উবাইদ, সিলেট থেকে: ২০১৩ সালে সাফ ফুটবলে বাংলাদেশ দলের পরাজয়ের কারণ ছিল বিদেশের মাটিতে দর্শক ও মানসিক চাপ আর ঘরের মাটিতে ঠিক একই ঘটনার পূনরাবৃত্তি ঘটল গতকাল বৃহস্পতিবার! আবারো চাপ সমস্যা!

দেশ অথবা বিদেশ যেখানেই খেলা হোক, চাপের কারণেই পরাজিত বাংলাদেশ! দীর্ঘ ১৫ বছর পরে যখন দেশের মাটিতে এতোবড় আয়োজন তখন উদ্বোধনী ম্যাচেই মালয়েশিয়ার অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কাছে পরাজিত বাংলাদেশ জাতীয় দল। এখন হাওয়ায় দুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য।

পুরো বিষয়টি ঝুলে আছে 'এ' গ্রুপের অপর দুই প্রতিপক্ষ মালয়েশিয়া-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ম্যাচের ফলাফলের উপর।

শনিবার যদি শ্রীলঙ্কা-মালয়েশিয়া ম্যাচটি ড্র হয় তবে বন্ধুর হবে বাংলাদেশের পথ! আর যদি জয় পায় মালয়েশিয়া তবে সুযোগ থাকবে বাংলাদেশ দলের। কিন্তু সেখানেও গোল গড়ের বিষয়টি চলে আসবে। তবে দুঃখজনক বিষয় গত দুই সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচগুলোর দিকে তাকালেই ভয় ধরে যায়। কারণ গত দুই সাফেই গ্রুপ পর্বের বাধা পেরুতে ব্যর্থ বাংলাদেশ ফুটবল দল।

২০১১ সালের সাফ ফুটবলে নিজেদের মান রক্ষার ম্যাচে মালদ্বীপের কাছে ৩-১ গোলে হেরে বিদায় নেয় বাংলাদেশ। আর ২০১৩ সাফে ২-১ গোলে পাকিস্তানের কাছে হেরে আবারও গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে যায়!

অনূর্ধ্ব-২৩ দল নিয়ে এ আসরে অংশ নিলেও প্রথম ম্যাচেই মালয়েশিয়া তাদের যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছে। প্রতিপক্ষ যে হোক একটি জাতীয় দলকে হারিয়ে তাদের মনোবল নিশ্চয় বেড়ে গেছে বহুগুন। আর সেটি কাজে লাগিয়ে তারা এবার শ্রীলংকা বধের স্বপ্নে বিভোর।

দলটির প্রধান কোচ রাজিব ইসমাইল এর আগেও দুইবার এসেছিলেন বাংলাদেশে, খেলেছেন খেলোয়াড় হিসেবে। এবার এলেন কোচ হিসেবে। জয়ের বিষয়ে অনেকটাই প্রত্যয়ী এ মালয়েশিয়ান। জানালেন, ' প্রথম ম্যাচে স্বাগতিদের পরাজিত করেছি। এখন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ন। এ ম্যাচেও জয় চাই আমরা। আমি মনে করি, শ্রীলঙ্কার সাথে বেশ ভালোই লড়াই হবে আমাদের। তবে আমাদের লক্ষ্য থাকবে এ ম্যাচে জয় নিয়েই সেমিফাইনাল ওঠা। ' এ ম্যাচে জয় পেলে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সেমিফাইনালে উঠবে মালয়েশিয়ার যুবারা।

আর কোচের সুরেই কথা বললেন মালয়েশিয়ার অধিনায়ক নাসিরুল নাঈম, 'শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমরা ভালো খেলতে চাই। ম্যাচ বাই ম্যাচ ভালো খেলেই পরবর্তী রাউন্ডে উঠতে চাই। গ্রুপ পর্বের বাধা পেরিয়ে সেমিফাইনাল, তারপর ফাইনাল। ঠিক এভাবেই এগিয়ে যেতে চাই। ’

ওদিকে শ্রীলঙ্কা দলের কোচ কাভাজোভিচ বলেন, ‘আমরা ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম কোনো লক্ষ্য ছাড়াই মাঠে নামছি। এমনকি প্রতিপক্ষকে নিয়ে বিশ্লেষণ পর্যন্ত করিনি। এ টুর্নামেন্টে আমরা কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আসিনি! কারণ আমাদের কোনো প্রস্তুতি নেই। এমনকি মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের মতো প্রতিপক্ষের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সামর্থ নেই দলের। '

তিনি আর যুক্ত করেন, 'আমাদের খেলোয়াড়রা গত ২০দিন ধরে বিশ্রামে ছিল। ঘরোয়া লিগে তারা মাত্র মৌসুম শেষ করেছে। এখনো তারা ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। আর মালয়েশিয়া দল সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই নেই। ’

অধিনায়ক সুজান পারেরা বলেন, ‘আমি বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাদেরকে এই টুর্নামেন্টে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। আমরা মাত্র কয়েকদিনের প্রস্তুতি নিয়ে এখানে এসেছি। আগেরবার বাংলাদেশ সফরে এসে ভালো ফুটবল খেলেছিলাম। আশা করছি এবারও ভালো খেলতে পারব। ’

শ্রীলঙ্কা দলের কোচ আর অধিনায়কের কথাতেই বোঝা যাচ্ছে দলটির বর্তমান অবস্থা। এখন বাংলাদেশ দলের ভাগ্যে কি আছে তা অনেকটাই নির্ভর করছে এ ম্যাচের উপর। কিন্তু খেলাটি যখন ফুটবল তখন শেষ বাঁশি না বেজে ওঠা পর্যন্ত কিছুই বলা মুশকিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, ৩০ জানুয়ারি ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।