ঢাকা: স্প্যানিশ লা লিগায় প্রত্যাশিত জয় পেতে মাঠে নেমেছিলো বার্সেলোনা। প্রতিপক্ষ ভিয়ারিয়ালকে ঘরের মাঠ ক্যাম্প ন্যুতে আতিথ্য দেয় কাতালান জায়ান্টরা।
এ ম্যাচের শুরুতে বার্সা কোচ লুইস এনরিক ৪-৩-৩ ফরমেশনে শুরুর একাদশে মাঠে নামিয়েছিলেন ক্লদিয়ো ব্রাভো, দানি আলভেজ, জেরার্ড পিকে, জাভিয়ের মাসচেরানো, জরদি আলবা, রাফিনহা, বাসকুয়েটস, আন্দ্রে ইনিয়েস্তা, লিওনেল মেসি, নেইমার আর লুইস সুয়ারেজকে।
প্রায় ৮০ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে ঘরের মাঠে স্বাগতিকরা ম্যাচের ১২তম মিনিটেই লিড নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। কাতালানদের হয়ে উরুগুয়ের তারকা স্ট্রাইকার সুয়ারেজকে ব্রাজিল তারকা আলভেজ বল বাড়িয়ে দেন। লিভারপুলের সাবেক তারকা কোনাকুনি শট নিলেও তা কোনো রকমে প্রতিহত করেন ভিয়ারিয়ালে গোলরক্ষক আসেনজো।
প্রথম ২০ মিনিট বার্সা ফুটবলাররা তাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণে বল রেখেছিল ৭০ শতাংশ। তারপরও গোলের দেখা মিলছিল না কোপা দেল রে’র সেমিফাইনালে উঠা দলটির। ২১ মিনিটের মাথায় সুয়ারেজ আবারো গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করেন। ভিয়ারিয়ালের ডি-বক্সে উরুগুয়াইন তারকা বল পেয়ে জোড়ালো শট নিলেও তা গোলবারের পাশ দিয়ে বাইরে চলে যায়।
খেলার ৩০ মিনিটের মাথায় লিড নেয় অতিথি হিসেবে খেলতে নামা ভিয়ারিয়াল। কাউন্টার অ্যাটাকে স্বাগতিকদের হতভম্ভ করে দিয়ে গোল করেন ডেনিশ চ্যারিভ। মারিও গাসপারের জোড়ালো শটে পা লাগিয়ে বলের গতিপথ পরিবর্তন করেন চ্যারিভ। আর তাতে বার্সার ডিফেন্সের ফাঁক গলে স্বাগতিকদের জালে বল জড়িয়ে গেলে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ভিয়ারিয়াল।
তবে, প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার দশ সেকেন্ড আগে বার্সাকে সমতায় ফেরান ব্রাজিল সেনসেশন নেইমার। আর্জেন্টাইন অধিনায়ক মেসির দারুণ এক পাস থেকে গোলবারে শট নেন রাফিনহা। এবারো ভিয়ারিয়ালের গোলরক্ষক আসেনজো তা রুখে দেন। তবে, ফিরতি বল পেয়ে নেইমার শট নিলে তা রুখতে পারেন নি তিনি। ফলে, বিরতিতে যাবার আগে ১-১ গোলের সমতা নিয়ে মাঠ ছাড়ে দুই দল।
বিরতির পর ৫১তম মিনিটে আবারো লিড নেয় ভিয়ারিয়াল। মাঝমাঠে বার্সার পুরোনো সৈনিক পিকে বলের নিয়ন্ত্রণ ঠিক মতো নিতে না পারলে বল পেয়ে যান দস সান্তোস। প্রায় মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ে বার্সার গোলরক্ষককে কিছুটা ফাঁকি দিয়ে বল বাড়িয়ে দেন লুসিয়ানো ভিয়েত্তোকে। সেখান থেকে লুসিয়ানোর গোল করতে বেগ পেতে হয়নি।
তবে, নিজেদের মাঠ বলেই হয়তো বার্সা খুব দ্রুতই ম্যাচে ফিরে আসতে চেয়েছিল। গোল হজমের দুই মিনিটের মাথায় ম্যাচে আবারো সমতায় ফিরে আসে কাতালানরা। সমতাসূচক গোলটি করেন রাফিনহা। ইনিয়েস্তার পাস থেকে সুয়ারেজ গোলবারে শট নিলে আসেনজো তা প্রতিহত করেন। তবে, ফিরতি বলে মেসি হেড করলেও তা ডিফেন্সে বাধা পেয়ে রাফিনহার সামনে গিয়ে পড়ে। আর সেখান থেকে জোড়ালো শটে গোল করেন তিনি।
দ্বিতীয়বারের মতো সমতায় ফেরার আরও দুই মিনিট পর প্রথমাবারের মতো লিড নেয় বার্সা। এবারে দলের হয়ে গোল করেন আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকর মেসি। সুয়ারেজের দারুণ এক পাস থেকে বল পেয়ে ডানপায়ের শটে গোলটি করেন মেসি। ফলে, ম্যাচের ৫৫ মিনিটে ৩-২ গোলে এগিয়ে থাকে বার্সা।
খেলার ৬২ মিনিটের মাথায় আবারো বার্সার জালে বল জড়িয়ে দেয় ভিয়ারিয়ালের রুইজ। তবে, অফসাউটের কারণে গোলটি বাতিল হয়। একই মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে নেইমার প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে বল নিয়ে ঢুকে পড়ে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিতে পারলেও নিজের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে না পারলে গোল আদায় করতে ব্যর্থ হন। কয়েক সেকেন্ড পর একই আক্রমণ থেকে হেড করে গোল করতে ব্যর্থ হন সুয়ারেজ।
ম্যাচের বাকি সময়ে আর কোনো গোল না হলে ৩-২ গোলের ব্যবধান নিয়েই মাঠ ছাড়ে বার্সেলোনা। আর এ জয়ের ফলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের থেকে এক পয়েন্ট কম নিয়ে মেসিদের সংগ্রহ ৫০ পয়েন্ট। ২১ ম্যাচ খেলে বার্সা ১৬ ম্যাচে জয়, দুটি ম্যাচে ড্র আর তিনটি ম্যাচে হেরেছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৪০০ ঘণ্টা, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫