ফেবারিট হয়েও অস্কার ব্রুজনের শিষ্যরা নিজেদের প্রথম ম্যাচে দুর্ঘটনার শিকার হয় ভারতের গোকুলার কেরালার কাছে। তবে পরের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় তুলে নেয় ভারতের আরেক দল চেন্নাই সিটির বিপক্ষে।
তবে সেই ম্যাচকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা সামাল দিতে হয়েছে অস্কার ব্রুজনের শিষ্যদের। বারুদে ঠাঁসা ম্যাচটি আলোচনার খোরাক জুগিয়েছিল চারটি লাল ও চারটি হলুদ কার্ডের পাশাপাশি ‘বর্ণবাদী’ আচরণের প্রেক্ষিতে। উত্তেজনা এতই চরমে ছিল যে, লাল কার্ড দেখে বসেন বসুন্ধরার কোচ ব্রুজন।
সেদিন চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসেননি তিনি। ছিলেন না কিংস অধিনায়ক দেনিয়েল কলিন্দ্রেসও। তাদের হয়ে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন সহকারী কোচ মাহবুব হোসেন রক্সি।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বন্দর মাঠের অনুশীলনেও সাংবাদিকদের সামনে আসেননি কোচ ব্রুজন এবং অধিনায়ক কলিন্দ্রেস। তাদের হয়ে কথা বলেন মিডফিল্ডার রবিউল হাসান এবং সহকারী কোচ রক্সি।
বসুন্ধরা কিংস যে ফুটবল দর্শনে বিশ্বাসী এবং বাংলাদেশ ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি দলটি যে জয়ের জন্য খেলে তারই প্রতিফলন ছিল রক্সির কণ্ঠে। তেরেঙ্গানুর বিপক্ষে দলের কৌশল কেমন হতে পারে সে ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘বসুন্ধরা সবসময় জয়ের জন্য খেলে। আমাদের টাইটেলেই আছে, আমরা তৈরি হয়েছি জেতার জন্য। এখন যে টুর্নামেন্টে খেলছি সেখানে জয় ছাড়া বিকল্প নেই। আমরা জয়ের জন্য খেলবো। প্রতিপক্ষের কিভাবে খেলবো তা কালকেই দেখা যাবে। ’
দলের সমস্যাটা কোথায় হচ্ছে সেই ব্যাপারে রক্সি বলেন, ‘দলে কিছু পরিবতর্ন হবে। প্রতিপক্ষ কিভাবে খেলে তার উপর নির্ভর করে সে পরিকল্পনা করা হবে। আমাদের আগের দুই ম্যাচে তিন-চার খেলোয়াড় পরিবর্তন করেছি। আমাদের সময় দিতে হবে। কারণ আমরা আগেই বলেছি, আমাদের দলে জাতীয় দলের খেলোয়াড় বেশি। তার জন্য বসুন্ধরার খেলার দর্শনের সঙ্গে তাদের একটা কম্বিনেশন দরকার দলে। কারণ তারা নতুন এসেছে দলে। সময় দরকার। ’
শেষ চারে ওঠার জন্য বেশ সাঁকোই পাড়ি দিতে হবে বসুন্ধরা কিংসের। তবে প্রতিপক্ষ তেরেঙ্গানুকে বেশ সমীহই করছেন রক্সিং। তার সবচেয়ে বড় চিন্তা তাদের অধিনায়ক লি টাককে নিয়ে। বাংলাদেশের পরিবেশ বেশ পরিচিত লি টাকের।
সেই ব্যাপারে রক্সি বলেন, ‘ওরাও পজিটিভ খেলে ও মালেয়শিয়ার লিগের অনেক অনেক ভালো একটা দল। ওদের লি টাকের মতো খেলোয়াড় আছে। সে আমাদের দেশে খেলেছে। সে পরীক্ষিত খেলোয়াড়। ওকে কিভাবে রুখতে হবে এবং আমরা কিভাবে খেলবো সেই পরিকল্পনা আমাদের আছে। ’
আগের ম্যাচে কোচ ব্রুজনের লাল কার্ড নিয়ে কথা হলো আবার। তবে কোচের বিষয়টিকে পজিটিভই দেখছেন তার সহকারী রক্সি, ‘দল ভালো খেললেই কোচকে অ্যাপ্রেশিয়েট করে, দল খারাপ করলে তা কোচের উপরে আসে। সে পরিকল্পনা হিসেবে কোচ (ব্রুজন) তার কাজটাই করেছে। কোচ বারবার দেখছিলেন, ওরা (চেন্নাইয়ের খেলোয়াড়রা) আমাদের খেলোয়াড়দের বারবার ট্যাকল করছিল। ওরা চাচ্ছিল, আমাদের খেলোয়াড়দের আঘাত করে যেন তারা জিতে। বখতিয়ারকে তারা রেফারির সামনে আঘাত করেছে। তখন অস্কার (ব্রুজন) রেফারিকে বলেন, রেড ওকে (চেন্নাই খেলোয়াড়) দিতে হবে। এই বলাতে দেখা গেলো, রেফারি কোচকে লাল কার্ড দিয়ে দিল। ’
এদিকে সেমিতে যেতে হলে তেরেঙ্গানুকে ড্র করলেই চলবে। গত ম্যাচে তারা পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে কেরালার সঙ্গে। এর আগে তারা হারায় চেন্নাইকে। দুই ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষ দল তেরেঙ্গানু। একই দিনে বিকেল চারটায় শেষ চারে ওঠার লড়াইয়ে নামবে কেরালা। তাদেরও পয়েন্ট চার। তবে সেমি নিশ্চিত করার জন্য চেন্নাইয়ের বিপক্ষে জয়ের দিকে তাকিয়ে থাকবে তারা।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৯
ইউবি/এমএ