অভিযোগে বলা হচ্ছে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঋণের তদবির থেকে শুরু করে নিয়োগ বাণিজ্য সবই করছেন তিনি। কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান তার দাবি মেটাতে না পারলে শুরু করেন নানা হয়রানি।
ভুক্তভোগী ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের কাছে এমন অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, যেসব ব্যাংক থেকে তিনি সুবিধা পান সেসব ব্যাংকে সারাবছরে একবারও তদন্ত কার্যক্রম চালানো হয় না। আর সুবিধা না পাওয়ায় একবছরে একটি বেসরকারি ব্যাংকে তিনি তার বিভাগের লোক দিয়ে ২৩ বার তদন্ত চালিয়েছেন।
অভিযোগকারী ব্যাংকগুলোর দাবি, আমজাদ হোসেন নিজের লোক দিয়েই তার ‘দাবি’ মেটাতে ব্যর্থ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এফআইসিএসডিতে বিভিন্ন অভিযোগ সম্বলিত চিঠি পাঠান। এসব চিঠির আলোকে তার বিশ্বস্ত লোকদের দিয়ে তদন্ত দল গঠন করে অনুসন্ধান চালান। অনুসন্ধানের সময় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা দাবি করে তদন্ত দল। আর্থিক সুবিধা পেলে ইতিবাচক প্রতিবেদন তৈরি করে জমা দেওয়া হয়। আর সুবিধা না পেলে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অসত্য অভিযোগ দাঁড় করানো হয় প্রতিবেদনে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে এর আগে এমন অভিযোগের প্রমাণও পায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। যে কারণে তাকে পিপলস লিজিংয়ের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে পিপলস লিজিংয়ের পর্যবেক্ষক হিসেবে আমজাদ হোসেনকে নিয়োগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পর্যবেক্ষক হওয়ার পর থেকে তিনি লিজিং কোম্পানিটির কাছ থেকে নানা আর্থিক সুবিধা দাবি করেন। ব্যক্তিগত ‘সুবিধা’ না পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করেন তিনি। ‘কমিশন’ না পেলে বৈধ ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনেও বিভিন্ন অজুহাতে বাধা দিতে থাকেন এ কর্মকর্তা।
পরে তার এসব অনিয়মের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রমাণসহ অভিযোগ দেন পিপলস লিজিং কর্তৃপক্ষ। তদন্তে আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরই প্রেক্ষিতে তাকে গত অক্টোবর মাসে পিপলস লিজিংয়ের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
এবার তার বিরুদ্ধে ফিনান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্টেও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠলো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এ কে এম আমজাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনীত এসব অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। শতভাগ নিষ্ঠার সঙ্গে আমি আমার ওপর অর্পিত দায়িত্বগুলো পালন করে আসছি। অসৎ উদ্দেশ্যে কেউ আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তুলেছে। ”
বাংলাদেশ সময়: ০১০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৬
এসই/এইচএ/