ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

এবার শিলাবৃষ্টি-বজ্রপাতের আশঙ্কা বেশি, সতর্কতার পরামর্শ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৮
এবার শিলাবৃষ্টি-বজ্রপাতের আশঙ্কা বেশি, সতর্কতার পরামর্শ কালবৈশাখী ঝড়। ছবি: নওশাদ হক তিয়াস

ঢাকা: হাড়-কাঁপানো শীত শেষে হঠাৎ করেই বাড়তে শুরু করেছে দেশের তাপমাত্রা। সেইসঙ্গে যোগ হয়েছে শিলাবৃষ্টি। যেন অস্থির হয়ে উঠেছে প্রকৃতি! কালবৈশাখীর এ মৌসুমে শিলাবৃষ্টির পাশাপাশি বজ্রপাতেরও আশঙ্কা বেশি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

বাংলা বছরের শেষ প্রান্তে শুক্রবার (৩০ মার্চ) বিকেলে হঠাৎ করেই কালো মেঘে ছেয়ে যায় গোটা আকাশ। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হয় ঝড়-বৃষ্টি।

তবে বেশ কয়েকটি জেলায় বজ্রপাতের সঙ্গে দেখা দিয়েছে শিলাবৃষ্টি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ক্ষেতের ফসল, ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন অবকাঠামো। একাধিক প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে।  

প্রকৃতির এমন বিরূপ আচরণের কারণ হিসেবে তাপমাত্রার অস্বাভাবিক তারতম্যই দায়ী বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, শীতের পর এটিই প্রথম ঝড় ও শিলাবৃষ্টি। কোনো কারণে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা হঠাৎ বেড়ে গেলে বায়ুমণ্ডল অস্থির হয়ে যায়। বায়ুমণ্ডলের ওপরের দিকে থাকে শীতল বাতাস। বাষ্পীয় ফলে জলীয়কণা ওপরে উঠে শিলায় পরিণত হয় এবং বৃষ্টির সঙ্গে মাটিতে পড়ে। শিলা বৃষ্টি সাধারণত কালবৈশাখীর মৌসুমেই ঘটতে দেখা যায়।

শুক্রবারের শিলাবৃষ্টি এবং ঝড়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শিলার আঘাতে আহত হয়েছেন অনেকে। এবারের শিলার আঁকার বেশ বড় ছিল বলেও জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এ বিষয়ে আবদুর রহমান বলেন, বড় আকারের শিলাগুলো খুবই বিপদজনক।  এধরনের শিলাগুলো অনেক ওপর থেকে পড়ে বলে আঘাতটা বেশি জোরালো হয়। এতে মানুষ মারাও যেতে পারে। এর আগে গোপালগঞ্জে প্রায় দুই কেজি ওজনের শিলা পড়েছিলো।

তিনি আরও বলেন, মূলত এপ্রিল থেকে মে মাস কালবৈশাখীর মৌসুম। এসময়ের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে ঝড়-বৃষ্টি হবে। শনিবারও (৩১ মার্চ) বিকালের দিকে কয়েকটি জায়গায় শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এসময়ে প্রচুর বজ্রপাতও হবে। ঝড়-বৃষ্টির সময় মানুষকে সতর্ক থাকা উচিত।

আবহাওয়া অফিসের আগামী তিন মাসের পূর্বাভাসে বলা হয়, অন্য বছরগুলোর তুলনায় এবার অধিক পরিমাণ শিলাবৃষ্টি এবং বজ্রসহ ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া ঝড়ের সময় খোলা স্থানে না থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার সতর্কতা জানানো হয়।

আগামী এপ্রিল মাসের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানায়, দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ৩-৪ দিন মাঝারি/তীব্র কালবৈশাখী/বজ্রঝড় ও দেশের অন্যত্র ২-৩ দিন হালকা/মাঝারি কালবৈশাখী/বজ্রঝড় হতে পারে। তাছাড়া দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ২-৩টি মৃদু (৩৬-৩৮ ডিগ্রি সে.)/মাঝারি তাপপ্রবাহ (৩৮-৪০ ডিগ্রি সে.) বয়ে যেতে পারে। এরমধ্যে অন্তত ১টি তীব্র তাপপ্রবাহে (>৪০ ডিগ্রি সে.) রূপান্তরিত হতে পারে।

এছাড়াও এপ্রিলে বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে ২টি নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং যারমধ্যে অন্তত একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

মে মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ২-৩ দিন মাঝারি/তীব্র কালবৈশাখী/বজ্রঝড় ও দেশের অন্যত্র ৩-৪ দিন হালকা/মাঝারি কালবৈশাখী/বজ্রঝড় হতে পারে। দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ১-২টি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং অন্যত্র ২-৩টি /মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।  

মে মাসেও ১ থেকে ২টি নিম্নচাপের আশঙ্কা রয়েছে, যারমধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ০৪০০ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৮
এমআইএইচ/এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।