ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

আশ্রয়কে‌ন্দ্রে সাতক্ষীরা উপকূ‌লের ১ লাখ ৫৯ হাজার মানুষ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৭ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২০
আশ্রয়কে‌ন্দ্রে সাতক্ষীরা উপকূ‌লের ১ লাখ ৫৯ হাজার মানুষ

সাতক্ষীরা: ঘূ‌র্ণিঝড় আম্পা‌নের প্রভা‌বে সাতক্ষীরা উপকূ‌লের নদ-নদীতে পা‌নি বৃ‌দ্ধি পে‌য়ে‌ছে। থে‌মে থে‌মে হ‌চ্ছে বৃ‌ষ্টি, বই‌ছে ঝ‌ড়ো বাতাস। সেইসঙ্গে উপকূ‌লের জরাজীর্ণ বে‌ড়িবাঁধ নি‌য়ে বাড়‌ছে আতঙ্ক। য‌দিও ঝ‌ড়ের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষ‌তি কমা‌তে মঙ্গলবার (১৯ মে) রাত ১২টা পর্যন্ত সাতক্ষীরা উপকূ‌লের এক লাখ ৫৯ হাজার মানুষকে স‌রি‌য়ে নিরাপদ আশ্রয়কে‌ন্দ্রে নেওয়া হ‌য়ে‌ছে। প্রস্তুত র‌য়েছে ১৮ শতা‌ধিক আশ্রয়কেন্দ্র। 

এ‌দি‌কে বুধবার (২০ মে) সকাল ৬টার বু‌লে‌টি‌নে আবহাওয়া অ‌ধিদপ্তর সাতক্ষীরা, মোংলা ও পায়রা বন্দরসহ তৎসংলগ্ন এলাকায় ১০ নম্বর মহা‌বিপদ সং‌কেত জা‌রি করে‌ছে।  

এরপরও অ‌নে‌কে বা‌ড়িঘর ছে‌ড়ে আশ্রয়কে‌ন্দ্রে আস‌তে চা‌চ্ছেন না।

য‌দিও প্রশাসন স‌র্বোচ্চ শ‌ক্তি প্র‌য়োগ ক‌রে তা‌দের আশ্রয়কে‌ন্দ্রে স‌রি‌য়ে নি‌চ্ছে। অনরবত চল‌ছে মাই‌কিং। প্রশাসন, পু‌লিশ, নে‌ভি, কোস্টগার্ড, ফায়ার সা‌র্ভিসসহ সি‌পি‌পি সদস্যরা মানুষ‌কে নিরাপদ আশ্রয়কে‌ন্দ্রে নি‌তে স‌র্বোচ্চ চেষ্টা চালা‌চ্ছে।

অন্য‌দি‌কে, ঝুঁ‌কিপূর্ণ বে‌ড়িবাঁধই এখন একমাত্র উ‌দ্বে‌গের কারণ হ‌য়ে দাঁড়ি‌য়ে‌ছে। সাতক্ষীরা উপকূ‌লের অন্তত ৩৭টি প‌য়ে‌টে বে‌ড়িবাঁ‌ধের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক হওয়ায় ভয়াবহ জ‌লোচ্ছ্বা‌সের আশঙ্কায় দিন কাটা‌চ্ছে মানুষ।

শ্যামনগ‌রের পদ্মপুকু‌রের শা‌হিন বিল্লাহ জানান, নদী‌তে এখন পূর্ণ জোয়ার। সেইসঙ্গে বৃ‌ষ্টি বই‌ছে ঝ‌ড়ো বাতাস। ঝুঁ‌কিপূর্ণ বাঁধই যেন গলার কাটা। কি হ‌বে কিচ্ছু বলা যা‌চ্ছে না। পদ্মপুকু‌রের পাতাখালী চ‌ন্ডিপু‌রের বাঁধ রক্ষায় স্বেচ্ছাশ্র‌মে মানুষ এখনও কাজ কর‌ছে।

গাবুরা ইউ‌পি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম ব‌লেন, মানুষ‌জন‌কে নিরাপদ আশ্র‌য় কে‌ন্দ্রে নেওয়া হ‌য়ে‌ছে। কিন্তু সমস্যা বে‌ড়িবাঁধ নি‌য়ে।  

শ্যামনগর উপ‌জেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আ ন ম আবুজর গিফারী জানান, সাতক্ষীরার সব‌চে‌য়ে ঝুঁ‌কিপূর্ণ গাবুরার প্রায় আট হাজার মানুষ‌কে নিরাপ‌দে স‌রি‌য়ে আনা সম্ভব হ‌য়ে‌ছে। বাকিরা গাবুরার সাইক্লোন শেল্টারসহ স্কুল, মস‌জিদ ও অন্যান্য পাকা ‌নিরাপদ ভব‌নে আশ্রয় নি‌য়ে‌ছে। সব‌মি‌লি‌য়ে গতরাত ১২টা পর্যন্ত শ্যামনগ‌রের উপকূলীয় এলাকাগু‌লো থে‌কে ৮০ হাজার মানুষকে আশ্রয় কে‌ন্দ্রে আনা হ‌য়ে‌ছে।  

এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ বে‌ড়িবাঁধগু‌লো রক্ষায় বালুর বস্তা ডা‌ম্পিং করা হ‌চ্ছে। ইতোম‌ধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রগু‌লো‌তে পর্যাপ্ত শুকনা খাবার, ইফতার ও সেহ‌রির ব্যবস্থা করা হ‌য়ে‌ছে।  

‌জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল ব‌লেন, মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত সাতক্ষীরা উপকূ‌লের এক লাখ ৫৯ হাজার মানুষ‌কে স‌রি‌য়ে নিরাপদ আশ্রয়কে‌ন্দ্রে নেওয়া হ‌য়ে‌ছে। একজন মানুষও যা‌তে নিরাপদ আশ্রয়ের বাই‌রে না থা‌কে, সেজন্য স‌র্বোচ্চ চেষ্টা চালা‌নো হ‌চ্ছে।  

দু‌র্যোগকালীন জরুরি ত্রাণ তৎপরতার জন্য ই‌তোম‌ধ্যে ২৫০ মে‌ট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হ‌য়ে‌ছে। আশ্রয়কেন্দ্রগু‌লো‌তে সাবান, মাস্কসহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণসহ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার স‌র্বোচ্চ চেষ্টা করা হ‌চ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৪ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।