ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

ব্রহ্মপুত্র-যমুনা-সুরমা-কুশিয়ারার পানি দ্রুত বাড়ার শঙ্কা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০১ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২০
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা-সুরমা-কুশিয়ারার পানি দ্রুত বাড়ার শঙ্কা

ঢাকা: শুক্রবারের মধ্যে দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ার আশঙ্কার রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এক্ষেত্রে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, সুরমা-কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমার ওপর উঠে আবার বন্যা পরিস্থিতির দেখা দিতে পারে।

আবহাওয়া অধিদফতর দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে আগে বলেছে, জুনের চেয়ে জুলাই মাসে বড় বন্যার শঙ্কা রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকেও বৃহস্পতিবার উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলের ২৩ জেলায় লম্বা সময় ধরে বন্যার আশঙ্কায় জেলা প্রশাসকদের আগাম প্রস্তুতির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ভারত ও বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতরের বরাত দিয়ে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানিয়েছেন, শনিবারের নাগাদ উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয় প্রদেশে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস আছে। ফলে, এ সময়ে উত্তরাঞ্চলের এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি সমতল দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।

ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীসমূহের পানি সমতল স্থিতিশীল আছে, যা বিপৎসীমার নিচে অবস্থান করছে। শুক্রবারের (১০ জুলাই) মধ্যে এই নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়া করতে পারে। বৃদ্ধি পেতে পারে মেঘনা, গঙ্গা-পদ্মার পানির সমতলও।

ইতিমধ্যে আসাম, মেঘালয়, দার্জিলিং ও সিকিমে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ শুরু হয়ে গেছে। দেশের উত্তরাঞ্চলেও বৃহস্পতিবার ভারী বর্ষণ হয়েছে। জুনের শেষে যে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, সেটাও হয়েছিলে এইসব অঞ্চলে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের কারণে।

বৃহস্পতিবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইনে এক ব্রিফিংয়ে বলেন- ১১ জুলাই থেকে দেশের ২৩ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির দেখা দিতে পারে। জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, রাজবাড়ী, শরিয়তপুর, ফরিদপুর, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, চাঁদপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর ও নওগাঁ।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই ২৩টি জেলায় পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে সব জেলায় ২০০ মেট্রিকটন করে চাল, দুই হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার এবং শিশু খাদ্যের জন্য দুই লাখ টাকা, গো-খাদ্যের জন্য দুই লাখ টাকা এবং নগদ তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে যেন পানি বাড়লেও মাঠ প্রশাসন ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়াতে পারে।

আবহাওয়া অধিদফতর শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ দেওয়া এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে, মৌসুমী বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ বিস্তৃত রয়েছে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় বিরাজ করছে।

এই অবস্থায় রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২০
ইইউডি/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।