ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

৬ নদীর পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়ে, বিস্তৃত হচ্ছে বন্যা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২০
৬ নদীর পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়ে, বিস্তৃত হচ্ছে বন্যা

ঢাকা: দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাত বেড়েছে। ফলে দেশের ছয়টি নদীর পানি আবারও বিপৎসীমার ওপরে উঠে গিয়ে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, দু'এক দিনের মধ্যে ব্রহ্মপুত্রের পানিও বিপৎসীমা অতিক্রম করবে। ফুলে ফেঁপে একাকার হবে দেশের অন্য বন্যাপ্রবণ নদ-নদীর পানিও।

পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। পদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেতে পারে।

রোববার (১২ জুলাই) নাগাদ ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি নুনখাওয়া ও চিলমারী পয়েন্টে, যমুনা নদী বাহাদুরাবাদ, সারিয়াকান্দি ও কাজিপুর পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এ সময় তিস্তা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে এবং বিপৎসীমার আরও অনেক ওপরে অবস্থান করার আভাস রয়েছে।

অপরদিকে ধরলা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। আর মেঘনা অববাহিকার সুরমা নদী সিলেট পয়েন্টে পুরাতন সুরমা নদী দেরাই পয়েন্টে এবং সমেশ্বরী নদী দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

এই অবস্থায় নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, নাটোর, সিলেট, সুনামগঞ্জ এবং নেত্রকোনা জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।

বর্তমানে তিস্তার পানি ডালিয়ায়, যমুনার পানি ফুলছড়িতে, সুরমার পানি কানাইঘাট, সুনামগঞ্জ, সারিঘাটে সারিগোয়াইনের পানি, লরেরগড়ে যদুকাটার পানি ও গুড় নদীর পানি সিংড়ায় বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আবহাওয়া অফিস আগেই জানিয়েছে বৃষ্টিপাত বেড়ে মধ্য জুলাইয়ে বড় বন্যার শঙ্কা রয়েছে।

এক পূর্বাভাসে সংস্থাটি জানিয়েছে, মৌসুমী বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। আর মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় বিরাজ করছে।

সোমবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যা নাগাদ রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। বৃষ্টিপাতের এ প্রবণতা কমবে সপ্তাহের শেষের দিকে।

এদিকে, সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।

শনিবার দেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ১৫৩ মিলিমিটার। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ভারতের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে চেরাপুঞ্জিতে ৫২৩ মিলিমিটার।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২০
ইইউডি/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।