ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

শিশির বিন্দু-হিম বাতাস জানান দিচ্ছে শীত আসছে

জিসান আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২০
শিশির বিন্দু-হিম বাতাস জানান দিচ্ছে শীত আসছে ঘাসের ডগায় শিশির বিন্দু/ ছবি: বাংলানিউজ

চুয়াডাঙ্গা: ‘হেমন্ত তার শিশির ভেজা/আঁচল তলে শিউলি বোঁটায়, চুপে চুপে রং মাখাল/আকাশ থেকে ফোঁটায় ফোঁটায়। ‍’ কবি সুফিয়া কামালের লেখা ‘হেমন্ত’ কবিতায় বাংলার হেমন্তের রূপ ধরা দিয়েছে নিবিড়ভাবে।

ঠিক তেমনি শরৎ শেষে হেমন্তের বর্তমান চেহারা যেন বলে দিচ্ছে ঘটেছে ঋতুর পালাক্রম। ঠিক কবির নিপুণ হাতে লেখা কবিতার চরণের মতো।

ক্লান্ত দুপুরে সোনাঝড়া রোদের পাশাপাশি সকাল সন্ধ্যায় ঘাসের ডগায় জমা শিশির বিন্দু, হিম বাতাস ও কুয়াশার উপস্থিতি এই বার্তাই দিচ্ছে কার্তিকের হাত ধরে চলে এলো নবান্নের ঋতু হেমন্ত। শুধু চুয়াডাঙ্গার নয় বরং সারা বাংলার প্রকৃতির চিত্র এমনই।

নিম্নচাপের প্রভাবে কয়েকদিনের বৃষ্টি উসকে দিল প্রকৃতিকে। ফলে সে জানান দিতে শুরু করেছে শীত আসছে! এরইমধ্যে বিদায় নিয়েছে দেবী দুর্গা।

চুয়াডাঙ্গার প্রতিটি মাঠে চোখ মেললেই দেখা যায় ঘাস ও ধানের কচি ডগায় জমছে শিশির বিন্দু। সেই সঙ্গে অনুভূত হচ্ছে হিম হাওয়া। যেন হেমন্ত তার প্রকৃতির সবটুকু উজাড় করে বিলিয়ে দিচ্ছে।  

লেখক ও কবি কাজল মাহমুদের মতে, এটা ঠিক, ঋতুবৈচিত্র্যের অনিবার্য প্রভাবে বাংলায় শীত আসবেই। তবে বাঙালির জীবনে শীতের আগমন অবিমিশ্র অনুভূতি নিয়ে আসে। ঠিক বসন্ত বা শরতের মতো আমরা তাকে আবাহন করি না। শীতে বাংলার রূপ বদলায় নিজস্ব রীতিতে। হেমবরণী হেমন্ত হিমেল হাওয়ায় উপস্থাপন করে শীতের নাচন। তার আগমনীকে মধুর আমেজের সূর্যরশ্মির সঙ্গে মিলিয়ে দেয় সকালের সোনারোদ। কুয়াশা নামের প্রাকৃতিক চাদরে ঢাকা পড়ে চরাচর। বাজারে নতুন নতুন শাকসবজি, সাতসকালে খেজুর রস, গৃহিণীর ডালের বড়ি দেওয়ার তোড়জোড়, রাস্তার ধারে পিঠা বিক্রি। এ সবকিছুই শহরের শীতকালকেই উপস্থাপন করে।

শীতের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলার আবহমান সাংস্কৃতিক চর্চাও। শীত মানেই যেন উৎসব! কবিগান, জারিগান, পুতুলনাচ, সার্কাস, যাত্রাপালা, নাট্যমেলা আরও কত কী! সবগুলোরই আসর যেন পূর্ণতা পায় শীতের রাতে। মাঘীপূর্ণিমার উল্লাস সেও তো হিম সমীরণ থেকে বেরিয়ে আসা অনবদ্য নিসর্গের চিত্রপট। এতসব রূপকল্পের মাঝেও শিশির বিন্দুর নিঃশব্দ পতনের মতো প্রত্যাশা পৌষমাসে কারো যেন সর্বনাশ না হয়।

এবছর শীতে রয়েছে আতঙ্ক-আশঙ্কা। কেননা বর্তমানে করোনা ভাইরাস কিছুটা স্বস্তিতে রাখলেও শীতে তার বিস্তার ঘটতে পারে। সেই আশঙ্কা থেকেই সবার প্রত্যাশা, শীত যেন ম্লান না করে শীতের বৈচিত্র্য।  

বাংলাদেশ সময়: ০৭১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২০
এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।