ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

ইয়াসের প্রভাবে বরগুনায় অর্ধ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৫ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২১
ইয়াসের প্রভাবে বরগুনায় অর্ধ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত জোয়ারের পানিতে প্লাবিত এলাকা। ছবি: বাংলানিউজ

বরগুনা: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারের চাপে বরগুনার নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার বিভিন্ন স্থানে অর্ধ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন এসব এলাকার হাজারো মানুষ।

স্বল্প উচ্চতার বেড়িবাঁধের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত ও নাজুক বাঁধের কারণে এসব এলাকায় পানি ঢুকে পড়ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

এছাড়া উঁচু জোয়ারের কারণে বরগুনার বাইনচটকি, বড়ইতলা ও পুরাকাটা ফেরিঘাটের সংযোগ সড়কসহ গ্যাংওয়ে তলিয়ে গেছে। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফেরি চলাচলও বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে বরগুনার পশ্চিম গুলবুনিয়া, বড়ইতলা এবং ঢালভাঙা এলাকায় ঘুরে দেখা দেছে, এসব এলাকার নদীর তীরের লোকালয় সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। ভেসে গেছে এসব এলাকার বেশ কিছু পুকুরের মাছ।  

পাথরঘাটা পূর্ব রুপদোন এলাকার বাসিন্দা মো. শামসুল হক বলেন, এই এলাকায় জোয়ারের চাপে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ধসে পড়েছে। সেই পানির চাপে তার বসবাসের ঘরটিও ভেঙে গেছে।

বড়ইতলা এলাকার বাসিন্দা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আমাদের এই এলাকায় বাঁধ বলতে কিছু নেই। বেশি উচ্চতার জোয়ারে আমাদের এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। প্লাবিত হওয়ায় এসব এলাকার হাজারো মানুষের ঘরে আজ রান্না হবে না বলেও জানান তিনি।

পাথরঘাটা উপজেলার পদ্মা গ্রামের বাসিন্দা মোসলেম আলী বলেন, বরগুনা জেলার মধ্যে সব থেকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে পদ্মা এলাকা। এখানে কোনো বেড়িবাঁধ নেই। জিও ব্যাগ দিয়ে এখানে নদীর পানির প্রবাহ প্রতিহত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু তা কোনো কাজে আসছে না। এখান থেকে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে অন্তত সাতটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ভেসে গেছে ফসলের মাঠসহ পুকুর ও মাছের ঘের।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬০ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বরগুনা জেলায় ২২টি পোল্ডারে ৮০৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে জেলার ২৯ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে।

বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক মো. মাহতাব হোসেন বলেন, বরগুনার নদ-নদীতে আজ ৩.৩২ মিটার উচ্চতায় জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়েছে। যা বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার উপরে।

এ বিষয়ে বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার আলম বলেন, জেলার বিভিন্ন স্থানে ২৯ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। উঁচু জোয়ারের কারণে এসব বাঁধ দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়াও উচু জোয়ারের কারণে বাঁধের বাইরের এলাকাগুলোও প্লাবিত হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।