ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

শীতের দাপটে বিপর্যস্ত কুড়িগ্রাম, তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২২
শীতের দাপটে বিপর্যস্ত কুড়িগ্রাম, তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি 

কুড়িগ্রাম: মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকাসহ ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। তীব্র শীতের দাপটে ব্যাহত হচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম।

শনিবার (২৯ জানুয়ারি) কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) তাপমাত্রা ছিল সর্বনিম্ন ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশা বিরাজ করছে। নদীপথে ঘন কুয়াশা থাকায় নৌযান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না যাত্রীরা। সড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।

এদিকে সদ্য বেড়ে ওঠা আলু ক্ষেতে ছত্রাকের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। ছত্রাকের আক্রমণ থেকে আলু ক্ষেত রক্ষায় ঘন ঘন ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে কৃষকদের। লাল হয়ে যাচ্ছে বোরো বীজতলা। শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় শীতজনিত রোগ জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। জেলার হাসপাতালগুলোতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।

২৫০ শয্যার কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে রোগী ভর্তি রয়েছে ২৯৬ জন। এরমধ্যে ১২ শয্যার ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৩৯ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে ৩৬ জন শিশু। এছাড়া নবজাতকসহ ৪২ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে ৪৮ জন। এর মধ্যে আটজন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. পুলক কুমার সরকার বাংলানিউজকে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৭৪ জন ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ডায়রিয়া আক্রান্ত ১৪ জন এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত চার জন। আর শিশু রয়েছে ১৮ জন।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, শুক্রবার ( ২৮ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। শনিবার (২৯ জানুয়ারি) তা বেড়ে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়েছে। সকালে হালকা কুয়াশা পড়লেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের দেখা মিললেও তাতে উষ্ণতা থাকছে না। উত্তরের হিমেল হাওয়ার কারণে ঠাণ্ডা বেশি অনুভূত হচ্ছে। এ শৈত্যপ্রবাহ আরও দুই থেকে তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রশীদ বাংলানিউজকে জানান, তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রির নিচে অবস্থান করলে কৃষিতে কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হবে। আলুতে লেট ব্লাইডের আক্রমণ হতে পারে। এছাড়াও বোরা বীজতলা লালচে হয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। আমরা ক্ষয়ক্ষতি কমাতে আলু ক্ষেতে ছত্রাকনাশক স্প্রে করার কম্পোজিশন কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে জানিয়ে দিচ্ছি।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বাংলানিউজকে জানান, শীতে মানুষ যাতে কষ্ট না পায় এজন্য সরকারিভাবে প্রাপ্ত প্রায় ৭০ হাজার কম্বল উপজেলাগুলোতে সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়াও ছয় হাজার সোয়েটার বিতরণ করা হয়েছে। শীত বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে শীতবস্ত্রের আরও চাহিদা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২২
এফইএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।