ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০২২
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবি

ঢাকা: বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় জাস্ট ট্রানজিশন উদ্যোগ গ্রহণ ও শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীর চাকরির নিশ্চয়তাসহ সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবি করেছে বাংলাদেশ অক্যুপেশনাল সেইফটি, হেলথ অ্যান্ড এনভাইরনমেন্ট ফাউন্ডেশন (ওশি)।

শনিবার (৫ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ ওশি ফাউন্ডেশন ও ফ্রেডরিক এবার্ট স্টিফটাং (এফইএস), বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ওশির নির্বাহী পরিচালক আমিনুর রশিদ চৌধুরী বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় জাস্ট ট্রানজিশন উদ্যোগ গ্রহণ: ক্ষয়ক্ষতি প্রশমন ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতে করণীয় বিষয়ক একটি ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন।

আগামী ৬-১৮ নভেম্বর মিশরের শারম-আল-শেইখে অনুষ্ঠেয় ২৭তম জলবায়ু সম্মেলনের প্রাক্কালে (কপ-২৭) জলবায়ু পরিবর্তন ও জাস্ট ট্রানজিশন বিষয়ে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া ও সুপারিশমালা পেশ করাসহ দেশের শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীর উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা, বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দক্ষতা ও পুনঃদক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ এবং সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে বাস্তবায়িত কার্যক্রম সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরাই এ সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য।

ওশির নির্বাহী পরিচালক আমিনুর রশিদ চৌধুরী তার ধারণাপত্রে উল্লেখ করেন যে, ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আর এক মিটার বাড়লে দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চল থেকে প্রায় ৩০ মিলিয়ন ‘পরিবেশগত উদ্বাস্তু’ বাস্তুচ্যুত হবে এবং জনসংখ্যার একটি বড় অংশের কর্মক্ষেত্র, জীবিকা এবং দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যের ওপর অকল্পনীয় বিরূপ প্রভাব ফেলবে।

তিনি বলেন, মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা কার্যক্রমের একটি প্রধান অগ্রাধিকার ক্ষেত্র হিসেবে জাস্ট ট্রানজিশনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেখানে নতুন কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা উন্নয়নকে অনেক বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট অথরিটিকে (এনএসডিএ) স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্লানে শ্রমিকদের দাবি বিবেচনা ও একীভূত করার জন্য ট্রেড ইউনিয়নগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ন্যায্য রূপান্তরের জন্য সামাজিক সংলাপ, দক্ষতা উন্নয়ন নীতি, পেশাগত স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং সামাজিক সুরক্ষা উদ্যোগগুলো গ্রহণ ও নিশ্চিত করা অপরিহার্য।

শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকায় জলবায়ুর প্রভাব প্রশমন ও জাস্ট ট্রানজিশন প্রতিষ্ঠায় ওশির সুপারিশগুলো হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় স্থানীয় বাস্তবতার ওপর ভিত্তি করে ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনগুলোর এ সংক্রান্ত নীতি, কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন এবং গবেষণা কার্যক্রম হাতে নেওয়া।

পরিবেশ বিপর্যয়, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি ও কর্মক্ষেত্রে প্রভাব এবং টেকসই কর্ম সম্পর্কে শ্রমিক ও ইউনিয়ন সদস্যদের সচেতনতা ও দক্ষতা বাড়ানো। জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও তাদের পরিবারের জন্য ব্যাপক সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি গ্রহণে বিভিন্ন পর্যায়ে অ্যাডভোকেসি ও লবিং করা। ‘জাস্ট ট্র্যানজিশন' ইস্যুতে সরকার ও মালিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে সংলাপে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হওয়া ও কর্মক্ষেত্র পর্যায়ে সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে একে বিস্তৃতিকরণ। মালিক ও শ্রমিক পক্ষের মধ্যে যৌথ দরকষাকষি প্রক্রিয়া ও চুক্তিতে গ্রিন জব ও জাস্ট ট্রানজিশনের মতো বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার অভিযোজন প্রক্রিয়ায় নিজেদের সক্ষমতা ও সম্পৃক্ততা বাড়ানোর মাধ্যমে সীমিত কার্বন অর্থনীতির দিকে যাত্রার পথ প্রশস্ত করা। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এবং কর্মসংস্থান হারানো শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীর জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান, দক্ষতা/পুনঃদক্ষতা উন্নয়ন এবং সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০২২
আরকেআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।