রোববার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে হতে যাচ্ছে দুই স্বাগতিকের লড়াই! নিউজিল্যান্ড চাইবে প্রথমবারের মতো শিরোপার স্বাদ নিতে, অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া ঘরের মাঠের সুবিধা নিয়ে পঞ্চমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করতে চাইবে।
শুরু থেকেই দুর্দান্ত দাপটের সঙ্গে খেলছে এবারের বিশ্বকাপের সহযোগী আয়োজক নিউজিল্যান্ড।
কিউইদের সব খেলোয়াড়ই রয়েছে সেরা ফর্মে। ব্যাটিং-বোলিং সব ক্ষেত্রে অলরাউন্ডিং নৈপূণ্য দেখিয়ে দলকে ইতিহাসের সাক্ষি হওয়ার দোরগোড়ায় নিয়ে এসেছে ম্যাককালাম বাহিনী।
অন্যদিকে গ্রুপ পর্বে ৫ খেলায় ৪টি জয় এবং নকআউট পর্বে দুটিতেই জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। সেমিফাইনালে গতবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে ৯৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া।
এ বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত ছয়বার বিশ্বকাপে ফাইনাল খেলার গৌরব অর্জন করেছে অজিরা। এর মধ্যে ৪ বারই বিশ্বচ্যাম্পিয়নের মুকুট পরেছে তারা।
বিশ্বকাপের ১১তম আসর যৌথভাবে আয়োজন করেছে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। আর বিশ্বমঞ্চের ফাইনালেও খেলবে এ দু’দল। তাই এই দুই দল নিয়ে ক্রিকেট ভক্তদের বিশেষ করে দু’দেশের দর্শকদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা রয়েছে।
সরকারি হিসাব মতে, নিউজিল্যান্ডের প্রায় সাড়ে ৬ লাখ লোক অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করে। যা নিউজিল্যান্ডের মোট জনসংখ্যার ১৫ ভাগ। যদিও দু’দেশেরই প্রধান খেলা রাগবি, আর নিউজিল্যান্ড বর্তমানে রাগবির বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। তবে রাগবি ভক্তদেরও মনযোগ এখন ক্রিকেট কেন্দ্রিক। তারা নিজের দেশকে ক্রিকেটেও চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছে।
সবমিলিয় রোববার মেলবোর্ন স্টেডিয়ামে ৮০ থেকে ৯০ হাজার দর্শক সমাগম হবে- এমনটাই ধারণা করছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা।
চার বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াও কিন্তু তাদের শিরোপা পুনরুদ্ধারে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। গ্রুপ পর্বে নিউজিল্যান্ডের কাছে তাদের মাটিতে হারলেও লড়াইটা হয়েছে জমজমাট। অজিদের সামনে এবার উল্টো প্রতিশোধের পালা! নিজেদের মাটিতে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইটা ধরে রাখতে পারলে বিজয়ের মুকুট তাদের হাতেই উঠবে এটা সহজেই বলা যায়।
ইতিহাস এবং পরিসংখ্যান অজিদের পক্ষে হলেও পুরো টুর্নামেন্টের পারফরম্যান্স বিচারে নিউজিল্যান্ডকে নিয়ে নতুন করে গেম প্ল্যান করতে হচ্ছে ক্লার্ক বাহিনীর। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক লিজেন্ডরাও এজন্য দলকে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে উৎসাহ দিচ্ছেন।
নিজেদের মাটিতে শেষ সাতবারের দেখায় সবকটাতেই টস হেরেছে অজিরা। তবে টস হারলেও জয় তুলে নিয়েছে ৫টিতে। আর মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে গত পাঁচ বছরে ১২টি খেলার দুটো বাদে সবকটিতেই জিতেছে অজিরা।
নিউজিল্যান্ড প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে ইতিহাস গড়তে চাচ্ছে, অন্যদিকে অজিরা নিজেদের ঘরে আরো একটা ট্রফি তুলতে চাচ্ছে।
একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে দু’দলের মধ্যে ১২৫ বার দেখা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৪টিতে অজিরা এবং ৩৫টিতে ব্লাক ক্যাপরা জয় পেয়েছে। বাকি ৬ খেলার কোনো ফলাফল আসেনি।
১৯৭৪ সালের ৩০ মার্চ ডুনেডিনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম জয় পেয়েছিল অজিরা। আর চলতি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে অজিরা এক উইকেটে হেরেছে নিউজিল্যান্ডের কাছে।
ছয় সপ্তাহে ৪৮টি ম্যাচ শেষে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে হতে যাচ্ছে ১১তম বিশ্বকাপ আসরের ফাইনাল। ক্রিকেট বিশ্ব রোববার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৯টায় দেখতে পাবে দুই স্বাগতিকের জমজমাট লড়াই।
মেলেবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড কি নতুন ইতিহাসের জন্ম দিবে, নাকি ঘরের ছেলেদের নাম আবার নতুন করে ইতিহাসের পাতায় লেখাবে?
মেলবোর্নে অনুষ্ঠিতব্য ফাইনালে কে হাসবে শেষ হাসি। কার হাতে উঠবে বিশ্বচ্যাম্পিয়নের ট্রফি। এমন উৎসাহ-উৎকণ্ঠা নিয়েই ক্রিকেট ভক্তদের অপেক্ষা...।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৫