ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৫ আগস্ট ২০২৫, ১০ সফর ১৪৪৭

ক্রিকেট

সীমানার ভেতর ও বাইরে দেখিয়ে দেওয়ার সিরিজ

সাজ্জাদ খান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:৫২, জুন ৬, ২০১৫
সীমানার ভেতর ও বাইরে দেখিয়ে দেওয়ার সিরিজ ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: এখনো ঢাকায় পা রাখেনি ভারতীয় ক্রিকেট দল। তবে উত্তেজনার পারদ এখনই অনুভব করতে শুরু করেছেন টাইগারভক্তরা।

কলকাতায় অনুশীলন শেষ করে ৮ জুন সকালে ঢাকার ফ্লাইট ধরবেন কোহলি-হরভজন-রোহিত-রাহানেরা। ভৌগলিক অবস্থানে ভারত প্রতিবেশী দেশ হলেও ক্রিকেটীয় শক্তির বিচারে তারা বাংলাদেশের থেকে অনেক দূরে। টেস্ট ৠাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান যেখানে ৯ নম্বরে, ভারত সেখানে ৩ এ।

শক্তির বিচারে এই ফাঁরাকের কারনেই হয়তো শেষ পাঁচ বছরে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে ভারতের অনীহা। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বাংলাদেশকে তাদের দেশে সফরের আমন্ত্রন জানাবে সেটাও অনেক দূরের ভাবনা। তবে এই দূরের ভাবনা কাছে চলে আসতে পারে যদি ভারতের বিপক্ষে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে মাঠে নিজেদের যোগ্যতা প্রমান করতে পারে বাংলাদেশ।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দাপুটে পারফরম্যান্স আর ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে অসাধারণ সাফল্যের কারণে এবার ভারত সিরিজে তিন ম্যাচ ওয়ানডের সঙ্গে যোগ হয়েছে একটি টেস্ট ম্যাচও। ১০ জুন ফতুল্লায় টেস্ট দিয়েই সিরিজ শুরু। গত বছর কেবল তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলে গিয়েছিল ভারত। সেবার দলের প্রথম সারির ক্রিকেটারদের ছাড়াই ওয়ানডে সিরিজে অংশ নেয় তারা।

তবে এবার প্রেক্ষাপট একেবারেই ভিন্ন। ৠাংকিং, ক্রিকেটীয় ইতিহাস সবকিছু ছাপিয়ে ভারত-বাংলাদেশ এখন যেন এক কাতারের দল! সেটা অনুধাবন করতে পেরে পূর্ণশক্তির দল নিয়েই বাংলাদেশকে মোকাবেলা করতে আসছে ভারত।

বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতকে হারিয়েই দিতে বসেছিল টাইগাররা। মাঠে আম্পায়ারদের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত গুলো না আসলে ম্যাচের ফলাফল অন্যরকম হতে পারতো। শুধু সীমানার ভেতরেই নয়; অনিয়ম হয়েছে সীমানার বাইরেও। আইসিসির জায়ান্ট স্ক্রিনে ভারতকে উৎসাহ যোগান দেওয়ার মতো ‘জিতেগা ভারত-জিতেগা ভারত’ স্লোগান ভেসে উঠেছিল।   যে কারণে আইসিসি’র সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ পর্যন্ত করেন বাংলাদেশের আ হ ম মুস্তফা কামাল।  

মাঠ ও মাঠের বাইরের নানা ঘটনায় বাংলাদেশের জন্য এখন ‘মহাগুরুত্বপূর্ন’ সিরিজ হয়ে দাঁড়িয়েছে আসন্ন  ভারত সিরিজ। মেলবোর্নের সেই পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিংয়ের বাজে স্মৃতি এখনো বেশ তাজা টাইগার সমর্থকদের কাছে। টাইগার ক্রিকেটাররাই-বা কি করে ভুলবেন সেই বেদনা?

ভারত সিরিজের জন্য মিরপুরে অনুশীলনে প্রায় প্রতিদিনই সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন কোনো না কোনো ক্রিকেটার। সাংবাদিকদের ‘কমন’ একটা প্রশ্ন থাকে ক্রিকেটারদের কাছে। বিশ্বকাপে ওরকম একটা ম্যাচের পর....? কৌশলে ক্রিকেটাররা এড়িয়ে যান বিষয়টি। মনের ভেতর আগুন টগবগিয়ে উঠলেও ওসব নিয়ে কথা বলা ঠিক হবে না ক্রিকেটারদের জন্য। সেটা বুঝতে পেরেই প্রশ্নের জবাবে একাট্টা ক্রিকেটাররা। ঘুরেফিরে আসে একটাই উত্তর, ‘ওসব নিয়ে আমরা ভাবছি না। অনুশীলনে যার যেই কাজ সেটাই করছি। ’

সব আগুন ঢেলে দিতে হবে মাঠে। আর  সেই কাজটা ঠিকঠাক করতে মিরপুরে কঠোর অনুশীলন করছে বাংলাদেশ দল। কেউ কেউ আবার আনুষ্ঠানিক অনুশীলন শেষে করছেন বাড়তি অনুশীলন। ভারত সিরিজ যে টাইগারদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ন সেটা মুখে না বললেও অনুশীলনে ক্রিকেটারদের গভীর মনযোগ-বাড়তি পরিশ্রমই সব প্রমান করে।

পাকিস্তান সিরিজ সফলভাবে শেষ হয়েছে, সামনে এবার ভারত। তারপর দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও দেশের মাটিতে সিরিজ। নভেম্বরে বাংলাদেশ সফরে আসতে চায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। চলতি বছরে পাকিস্তান সিরিজের ধারাবাহিকতায় ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ভালো করতে পারলে বাংলাদেশের ক্রিকেট পৌঁছে যাবে ‘এলিট’ দলগুলোর কাতারে।

আসন্ন ভারত সিরিজে ভালো খেলে মোমেন্টাম তৈরি করে সামনের সিরিজগুলোতে আরও ভালো করার অপেক্ষায় টাইগাররা, অপেক্ষায় টাইগারভক্তরা, অপেক্ষায় দেশের ১৬ কোটি ক্রিকেট প্রাণ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৭ ঘন্টা, ০৬ জুন ২০১৫
এসকে/এমআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।