ঢাকা: প্রথম ওয়ানডেতে হারের পর দক্ষিণ আফ্রিকা বন্দনায় মেতেছিলেন সবাই। যাদের ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং বিশ্বসেরা তাদের বিপক্ষে জয়ের আশা করাটা বাড়াবাড়ির পর্যায়েই পড়ে! আরেকটু ভালো খেলে বড়জোর লড়াই করা যেতে পারে! না, টাইগার ক্রিকেটাররা শুধু লড়াই করেনি মিরপুরে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে।
এমন দাপুটে জয়ে পাল্টে গেছে দু’দলের মনোভঙ্গি। আত্মবিশ্বাস থাকলে কি করতে পারে টাইগাররা তা ঘরের মাঠে দেখে গেছে জিম্বাবুয়ে (৫-০), পাকিস্তান (৩-০) ও ভারত (২-১)।
এবার দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ঘরের মাঠে টানা চার সিরিজ জয়ের রেকর্ড গড়ার হাতছানি মাশরাফি বাহিনীর সামনে। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের ভেন্যু যখন বন্দরনগরী চট্টগ্রাম; তখন তো ফেবারিট থেকেই ম্যাচ শুরু করতে পারে বাংলাদেশ!
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিবা-রাত্রির ম্যাচ শুরু বুধবার (১৫ জুলাই) বিকাল তিনটায়। এ মাঠে সর্বশেষ ১০ ওয়ানডের আটটিতেই জিতেছে টাইগাররা। এ কারণে ‘লাকি ভেন্যু’তে খেলতে নামার আগে যেন ফেভারিট হয়ে উঠেঠে বাংলাদেশ।
২০০৮ সালে বাংলাদেশ সফরে এসে এই মাঠে একটি ওয়ানডে খেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তখন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্টেডিয়াম নামেই পরিচিত ছিল এই ভেন্যু। ওই একবারই এই স্টেডিয়ামের সঙ্গে পরিচিত হতে পেরেছে অতিথি দল। বর্তমান দলে থাকা হাশিম আমলা ও জেপি ডুমিনি ছিলেন সেই ম্যাচে। হাশিম আমলা ৯ রানে অপরাজিত ছিলেন আর জেপি ডুমিনিকে ব্যাটিংয়েই নামতে হয়নি। গ্রায়েম স্মিথের অপরাজিত সেঞ্চুরি ও হার্শেল গিবসের অর্ধশতকে ৯ উইকেটে ওই ম্যাচ জেতে প্রোটিয়ারা।
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচকে ঘিরে মঙ্গলবার দু’দলই অনুশীলন করেছে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বলেছেন, ‘সব ম্যাচই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচ জেতার সামর্থ আমাদের আছে। যেহেতু সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে ১-১ এ সমতা এসেছে। তাই তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচের গুরুত্ব অনেক বেশি। কারণ আমরা এ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকাকে কখনও সিরিজে হারাতে পারিনি। ’
তবে সাকিব মনে করেন জিততে হলে সেরাটাই খেলতে হবে মাঠে, ‘আমরা দলের টিমওয়ার্ক নিয়ে ভালো খেলার চেষ্টা করবো। পুরো দলের ভালো পারফরমেন্সের ওপরই জয়ের সম্ভাবনা নির্ভর করবে। ব্যাট-বল-ফিল্ডিং তিনটি বিভাগকেই ভালো করতে হবে। তিনটি বিভাগের যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে সিরিজ জয় সম্ভব। ’
দ্বিতীয় ম্যাচে টাইগারদের সঙ্গে পেরে না উঠলেও শেষ ম্যাচে ঘুঁরে দাড়াতে চায় সফরকারী দল। মঙ্গলবার ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের প্রতিনিধি হয়ে কথা বলেন ইমরান তাহির।
প্রোটিয়া এই লেগস্পিনার জানান, ‘শেষ ম্যাচে কি হয়েছে তা নিয়ে আমরা মোটেও চিন্তিত নই। সবকিছু ভুলে আমরা আবার নতুনভাবে শুরু করতে চাই। গত ম্যাচে কি হয়েছে তা ভুলে যেতে চাই। সবকিছু ভুলে গিয়ে চ্যালেঞ্জ নিতে আমরা প্রস্তুত। দক্ষিণ আফ্রিকা লড়াই করতে ভালোবাসে। ’
উইনিং কম্বিনেশন ধরে রেখেই কাল মাঠে নামতে পারে বাংলাদেশ। তবে শেষ মুহূর্তে যদি দলে কোনো পরীক্ষা-নীরিক্ষা করতে চায় টিম ম্যানজমেন্ট তাহলে লিটন দাসের জায়গায় খেলানো হতে পারে এনামুল হক বিজয়কে।
অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা দলে আসতে পারে একাধিক পরিবর্তন। একজন করে ব্যাটসম্যান ও বোলারের জায়গায় পরিবর্তন করতে পারে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার টিম ম্যানেজমেন্ট। পেসার ক্রিস মরিসের জায়গায় বাংলাদেশ সফরে প্রথমবারের মতো মাঠে নামতে পারেন মরনে মরকেল।
টাইগারদের সম্ভাব্য একাদশ:
মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, লিটন দাস/এনামুল হক, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেন।
প্রোটিয়াদের সম্ভাব্য একাদশ:
হাশিম আমলা (অধিনায়ক), কুইন্টন ডি কক, ফাফ ডু’প্লেসিস, রাইলি রুশো, জেপি ডুমিনি, ডেভিড মিলার, ফারহান বেহারদিন, কাগিসো রাবাদা, ইমরান তাহির, কাইল অ্যাবট ও ক্রিস মরিস/মরনে মরকেল।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৫
এসকে/এমজেএফ
** সুযোগ কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ