ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

‘আই অ্যাম তাসকিন, উই আর তাসকিন’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৬ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৬
‘আই অ্যাম তাসকিন, উই আর তাসকিন’ ছবি: সোহেল সরওয়ার- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: অনুপম দত্ত। সরকারি সিটি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তরের এই শিক্ষার্থী।

শারীরিক প্রতিবন্দ্বী। দাঁড়িয়ে থাকা তার পক্ষে বেশ সহজবোধ্য নয়। কিন্তু অনুপমও আজ সব প্রতিবন্ধকতা জয় করে দাঁড়িয়েছেন লাইনে। ‘অবিচার’ প্রতিবন্ধকতার বাঁধ মানছে কবে?

দাবি একটাই তাসকিন  আহমেদ ও আরাফাত সানির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধের খড়গ তুলে নেওয়া হোক। এবং তাসকিনকে এ বিশ্বকাপই বোলিং করার অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হোক।

সোমবার বিকেল সাড়ে চারটা। নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সম্মুখে প্রায় শতাধিক মানুষ দাঁড়িয়েছিল তাসকিন ও সানিকে নিষিদ্ধের প্রতিবাদে। প্রায় সবার হাতেই বিভিন্ন বক্তব্য লেখা ফেস্টুন। ঢাকার পরে চট্টগ্রামেও হয়ে গেল ‘অবিচারের’ প্রতিবাদ।

সেসব ফেস্টুনগুলোর কয়েকটির বক্তব্য এমন-‘আমরা কেনো বারবার ষড়যন্ত্রের শিকার হবো’, ‘রুখে দাঁড়াব সকল অবৈধতার বিরুদ্ধে’, ‘আই অ্যাম তাসকিন, উই আর তাসকিন’, ‘তিন মডেল নিপাত যাক, ক্রিকেট বিশ্ব মুক্তি পাক’। এছাড়া আরও কত ক্ষোভ ও প্রতিবাদের ভাষা। সেই প্রতিবাদের মানবন্ধনে ছিলেন শিশু থেকে কিশোর, কিশোর থেকে যুবক।

মানববন্ধন শেষে প্রতিবাদ মিছিল বের করে তারা। মিছিলটি কাজির দেউড়ি মোড় ঘুরে পুনরায় এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া সাত বন্ধু-নাহিম, আবির, রাব্বি, জুয়েল, আয়াজ, জাহান সুলতানা আর জিকু আশরাফের ডাকে সাড়া দিয়ে ফেসবুকে ‘লাইটার ইয়ুথ ফাউন্ডেশন’ নামের একটি সংগঠনের পেজের মাধ্যমে সংগঠিত হয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে ছুটে আসেন প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা।

তাসমিয়া মোস্তাফা আর নাদিয়া তাবাস্সুম নামের দুই বন্ধু এসেছেন নগরীর হালিশহর এলাকা থেকে। আলহাজ ইয়াকুব আলী উচ্চ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে সদ্য এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া এই দুই বন্ধু বলেন, ‘মানলাম আরাফাত সানির বোলিং অ্যাকশনে সমস্যা আছে। কিন্তু তাসকিন আহমেদের? শুধুমাত্র বাউন্সারের কারণে কোনো বোলারকে নিষিদ্ধ করতে পারে না। আইসিসির নিয়েমে এরকম কিছু নেই। তারপরেও কেনো তাসকিনকে নিষিদ্ধ করা হলো। এটা ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়। আমরা আইসিসিরি কাছে বিশ্বকাপের মধ্যেই তাসকিনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। ’

আবার কেউ কেউ তাসকিন আর আরাফাত সানির নিষিদ্ধের বিষয়টিতে ভারতের ষড়যন্ত্র দেখছেন।

তাদেরই একজন চট্টগ্রাম জর্জ কোর্টের শিক্ষানবিশ আইনজীবী মাহমুদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘২০১৫ সালের ১৯ মার্চ বিশ্বকাপে ভারত আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে কোয়ার্টার ফাইনালে আমাদের হারিয়ে দিয়েছিল। তার ঠিক একবছর পর ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ আবারও ষড়যন্ত্র করল ভারত। বাংলাদেশের ক্রিকেটের উত্থান সহ্য করতে না পারা ভারতের হাত ধরেই হচ্ছে এসব ষড়যন্ত্র। ’

একটা ছেলের হাতে দেখা গেল স্রেফ একটা ছোট্ট সাদা একটা কাগজ। সেই কাগজে বড় বড় করে লেখা ‘আইসসিসি-ইউ ক্যান স্টপ তাসকিন, বাট ইউ ক্যান নট স্টপ তাসকিন ম্যানিয়া।

তাসকিন ইস্যুতে একদিন আগে বেঙ্গালুরে সংবাদ সম্মেলনে ক্যাপ্টেন মাশরাফির চোখে জ্বল দেখেছে বিশ্ব, ঢাকার শাহবাগ প্রকম্পিত হয়েছে বিক্ষোভে। এবার চট্টগ্রামেও প্রতিবাদ-ক্ষোভ। এরপর হয়তো ছড়িয়ে পড়বে অন্যান্য জায়গায়ও।

সত্যিই-‘অন্যায়’ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া পর্যন্ত তাসকিন ইস্যু ঘিরে প্রবল উন্মাদের বিস্ফোরণ থামানো যাবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, মার্চ, ২০১৬
টিএইচ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।