ঢাকা: ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটের জমজমাট আসর ন্যাটওয়েস্ট টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টকে ‘জমজমাট নয়’ বলে সমালোচনা করেছেন ইংলিশদের উইকেটরক্ষক জোস বাটলার। এবার এই টুর্নামেন্টকে নিয়ে সমালোচনায় মাতলেন পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টির সাবেক দলপতি শহীদ আফ্রিদি এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলপতি ড্যারেন স্যামি।
আফ্রিদি ও স্যামি দু’জনই এবারের টুর্নামেন্টে হ্যাম্পশায়ারের হয়ে খেলছেন। ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে খেলছেন জোস বাটলার।
চলতি বছরের ২০ মে শুরু হয় এবারের ন্যাটওয়েস্ট টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টের আসর। ২০ আগস্ট ফাইনালের মধ্যদিয়ে শেষ হবে এই মৌসুমের আসরটি। দীর্ঘ তিন মাস ধরে কেন একটি টুর্নামেন্ট চালানো হয়, এ নিয়েই যত ক্ষোভ ক্রিকেটারদের। বাটলার, আফ্রিদি, স্যামিদের মতো অনেকেই এই টুর্নামেন্টের সমালোচনা করেছেন।
কিছুদিন আগেই বাটলার জানিয়েছেন, আমরা যারা পেশাদারী ক্রিকেটার তাদের জন্য এই টুর্নামেন্টটি সত্যিই হতাশার। আইপিএলের মতো আসর আমাদের কাছে বেশি জমজমাট মনে হয়। আইপিএলের আসর প্রায় দু’মাস ধরে খেলতে হলেও আমাদের মনে কোনো হতাশা কাজ করেনা। কারণ, দর্শক প্রিয়তা আমাদের হতাশা ভুলিয়ে দেয়। ন্যাটওয়েস্ট টি-টোয়েন্টি ব্লাস্ট খেলতে অনেকেই অনীহা প্রকাশ করেন। কারণ অনেক ক্রিকেটার এই টুর্নামেন্টে খেলতে এসে নিজেদের ঘরোয়া ক্রিকেট কিংবা বাইরের কোনো টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারেনা।
ন্যাটওয়েস্ট টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টের সমালোচনা করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী ক্যারিবীয় দলপতি স্যামি জানান, এটা অনেক কঠিন একটি টুর্নামেন্ট। তিন মাস ধরে আমাদের এখানে খেলতে হচ্ছে। এটা সত্যিই অনেক দীর্ঘ সময় আর হতাশার। সপ্তাহে মাত্র একটি কিংবা দুটি ম্যাচ খেলতে হচ্ছে আমাদের। আমাদের মনে রাখা দরকার এটা টি-টোয়েন্টি ফরমেটের আসর। অথচ গতিসম্পন্ন নয়।
স্যামি আরও যোগ করেন, আমি আমার পরিবারকে নিয়ে লন্ডনে চলে আসি। তাদের নিয়ে ঘোরাঘুরি করি। প্রথম দলের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে দলের দ্বিতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলন করি। তাদের সঙ্গে নেটে সময় কাটাই। তাতে ফিটনেস ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।
ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ড এবারের ন্যাটওয়েস্ট টি-টোয়েন্টি ব্লাস্ট এর সূচি করেছে রয়েল লন্ডন ওয়ানডে কাপ এবং কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের সূচিকে মাথায় রেখে।
পাকিস্তানের সাবেক দলপতি ও সিনিয়র ক্রিকেটার আফ্রিদি জানান, তিন মাস ধরে একটি টুর্নামেন্ট খেলার জন্য মানসিকতা যথেষ্ট শক্ত রাখা দরকার। তিন মাসের প্রতি সপ্তাহে একটি করে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে গেলে ক্রিকেটারদের পারফর্ম ধরে রাখা কঠিন। আমি ইতোমধ্যেই ন্যাটওয়েস্ট টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টের অফিসিয়ালদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের অনুরোধ করেছি, পরের আসর থেকে যেন এই টুর্নামেন্ট এক মাসের মধ্যে সম্পন্ন হয়। প্রতি সপ্তাহে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার পর চারদিনের একটি ম্যাচ আবার একটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলা সত্যিই কঠিন। ক্রিকেটারদের জন্য মানিয়ে নিতে কষ্ট হয়। তবে, আমার বিশ্বাস এখানে যারা খেলছেন তারা প্রত্যেকেই পেশাদার ক্রিকেটার। আর তাদের জন্য মানিয়ে নেওয়া ক্রিকেটেরই একটি অংশ।
অনেক ক্রিকেট বোদ্ধা এবারের ন্যাটওয়েস্ট টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টকে দেখছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের মতো। ফুটবলের এই আসরে দলগুলোকে প্রতি দুই সপ্তাহে তিনটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হচ্ছে। তাদের মতে, ফুটবলের বাণিজ্যিকিকরণের সঙ্গে মেলাতে গেলে ন্যাটওয়েস্ট টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টের এমন দীর্ঘ আয়োজন অচিরেই বিলুপ্ত হবে। ক্রিকেটাররাও অনীহা প্রকাশ করবে এমন আয়োজনে নিজেদের না জড়াতে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, ০৬ জুন ২০১৬
এমআরপি