হারমানপ্রীত কৌরের অপরাজিত ১৭১ রানের অনবদ্য ইনিংসে ভর করে নারী বিশ্বকাপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভারত। বৃষ্টিবিঘ্নিত ৪২ ওভারের ম্যাচে চার উইকেট হারিয়ে টিম ইন্ডিয়ার ছুঁড়ে দেওয়া ২৮২ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ২৪৫ রানে গুটিয়ে যায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া।
ডার্বির কাউন্টি গ্রাউন্ডে হারমানপ্রীতের ১১৫ বলের ঝড়ো ইনিংসটি ওয়ার্ল্ডকাপে তৃতীয় সর্বোচ্চ ও সব মিলিয়ে পঞ্চম। ২০টি চার ও ৭টি ছক্কা হাঁকান ২৮ বছর বয়সী এ অলরাউন্ডার। ৯.২ ওভারে দলীয় ৩৫ রানে দুই উইকেট হারানোর পর ক্রিজে আসেন। ক্যারিয়ার সেরা দর্শনীয় ব্যাটিংয়ে রেকর্ডবুকে জায়গা করে নেন। এটি তার তৃতীয় ওডিআই সেঞ্চুরি। চার বছর কমলদাস ছিলেন হারমানপ্রীতের কোচ। পাঞ্জাবের মোগা গ্রামে জ্ঞান জ্যোতি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন তিনি। হারমানপ্রীতদের বাড়ি থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরত্ব সেই স্কুলের। কিন্তু পুরো অঞ্চলে ক্রিকেট শেখার একমাত্র জায়গা ছিল সেই স্কুল। কমলদাস জানান, ‘আমি তার ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ হয়েছি কিন্তু এতটুকুও আশ্চর্য হইনি। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বিশ্ব ক্রিকেট নড়েচড়ে বসেছে। কিন্তু, সত্যি বলছি হারমানপ্রীতের ব্যাটিং স্টাইল এমনই। সে অনুশীলনে মগ্ন থাকলে একটা বল ঝুলিয়ে নিজের শট সিলেকশন করে। তাকে এমনও সময় দেখেছি একটা বলকে ঝুলিয়ে ২ হাজার বার শট নেয়। যতক্ষণ না তার শট সিলেকশন পছন্দ হচ্ছে, সে এভাবেই চালাতে থাকে। তার ছোটোবেলা থেকেই এমনটা দেখে আসছি। ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ক্রিকেট একাডেমিতে অনুশীলন বন্ধ থাকলেও সে বিশ্রাম নিতো না। ’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘হারমানপ্রীত সাধারণ অনুশীলনের সময়ও বেশ সিরিয়াস মুডেই থাকে। স্কুল একাডেমি থেকেই তাকে দেখছি, সঠিক টাইমিং ছাড়া সে অনুশীলন বন্ধ করে না। সে যখন একাদশ শ্রেণিতে পড়তো, তখন তার বয়স ১৪ বছর। মাঠে বসে তার খেলা দেখছিলাম। ডিস্ট্রিক্ট সিনিয়র দলের হয়ে সে ব্যাটিংয়ে নামে। মনে আছে তার হাঁকানো চারটি ছক্কার দুটিই জানালার গ্লাস ভেঙেছিল। গ্রাউন্ডের জানালার গ্লাস নয়, সেটা ছিল গ্রাউন্ডের বাইরের দুটি বাড়ির জানালার গ্লাস। মনে আছে বাড়ির মালিক হতভম্ব হয়ে মাঠে ছুটে এসেছিলেন হারমানপ্রীতকে বকাঝকা করতে। কিন্তু, তার চমকানো ব্যাটিং দেখে ম্যাচ শেষে উল্টো হারমানপ্রীতের অটোগ্রাফ নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এটা কখনো ভুলবো না। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘণ্টা, ২২ জুলাই ২০১৭
এমআরপি