ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

ইউসুফের দৃষ্টিতে শচীন-দ্রাবিড়দের সমকক্ষ নন কোহলি

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০১৭
ইউসুফের দৃষ্টিতে শচীন-দ্রাবিড়দের সমকক্ষ নন কোহলি ছবি: সংগৃহীত

শচীন টেন্ডুলকারের বিদায়ের পর ভারতীয় ক্রিকেটে যে বিরাট শূন্যতা তৈরির শঙ্কা জেগেছিল, সেটি বিরাট কোহলির ব্যাটেই পূর্ণ হচ্ছে বলে মনে করেন অনেকেই। তবে, ক্রিকেটবোদ্ধারা যতই কোহলির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন না কেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি মোহাম্মদ ইউসুফের ভাবনাটা ভিন্ন।

ক’দিন আগেই কোহলির নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কার মাটিতে রেকর্ড জয় পায় ভারত। ৩০৪ রানের সেই জয়টি দেশের বাইরে ভারতের সবচেয়ে বড় জয়।

আর সে ম্যাচে দ্বিতীয় ইনিংসে দারুণ এক সেঞ্চুরি করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন কোহলি নিজেই। দলের রেকর্ড জয়ের পাশাপাশি নিজের ব্যক্তিগত একটি রেকর্ডও পূর্ণ করেন বর্তমান ক্রিকেটের সেনসেশন কোহলি। এই রেকর্ড গড়তে তিনি পেছনে ফেলেন দেশটির কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারকে।

টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে মাত্র ১৭ ইনিংসে ১ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান কোহলি। এর আগে ১৯ ইনিংসে অধিনায়ক থাকাকালে ১ হাজার রান করেছিলেন লিটল মাস্টার শচীন। কোহলি এখন পর্যন্ত ৫৮টি টেস্ট খেলেছেন। যেখানে ৫০.০৩ গড়ে ১৭টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি সাড়ে চার হাজারেরও বেশি রান করেছেন।

ভারতের গ্রেট সুনীল গাভাস্কার বলেছিলেন, টেন্ডুলকারের ওয়ানডের ৪৯ সেঞ্চুরির রেকর্ড বিরাট কোহলির হাতেই ভাঙতে চলেছে। টেস্ট রেকর্ডের দিক দিয়ে টেন্ডুলকার হয়তো নিজেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে গেছেন। কিন্তু, ১৮৯টি ওয়ানডে খেলে কোহলি তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছেছেন ২৮ বার। টেন্ডুলকারের নামের পাশে ২০০ টেস্ট ম্যাচ ছাড়াও আছে ৫১টি টেস্ট সেঞ্চুরির রেকর্ড। কোহলির রকেট-গতিতে ছোটা টেন্ডুলকারের রেকর্ডকে কি সত্যিই চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দিয়েছে? সময় বলে দেবে।

তবে, পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ইউসুফের মতে, মানের দিক থেকে টেন্ডুলকার বা রাহুল দ্রাবিড়ের সমকক্ষ নন কোহলি। এমনকি মান বিবেচনায় কোহলির চেয়ে ভিভিএস লক্ষ্মণকেও এগিয়ে রাখলেন মোহাম্মদ ইউসুফ। টেন্ডুলকার-দ্রাবিড়-লক্ষ্মণদের সমসাময়িক ক্রিকেটার হিসেবে ইউসুফ জানেন টেন্ডুলকার-দ্রাবিড়দের মান কতো উঁচুতে, ‘শচীন-দ্রাবিড় লক্ষ্মণদের সমমানের নন কোহলি’।

নিজের এই অভিমতের পেছনে একটা যুক্তিও তুলে ধরেছেন ইউসুফ, ‘আমাদের সময়ে ক্রিকেটের মানের তুলনায় বর্তমান সময়ের ক্রিকেটারের মান সমান নয়। কোহলি খুবই ভালো ব্যাটসম্যান। আমিও তার খেলা দেখতে পছন্দ করি। কিন্তু আমি মনে করি, সে টেন্ডুলকার, দ্রাবিড়, লক্ষ্মণদের সমমানের নয়। অনেকেই হয়তো আমার সঙ্গে একমত হবেন না। সেই সময় ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, শোয়েব আখতার, সাকলায়েন মুশতাকের বিপক্ষে রান করাটা অসাধ্য ছিল। আমাদের সময় বোলারদের মান অনেক উঁচু ছিল। শচীন সেই সেরা বোলারদের বিপক্ষে রান করেছেন। ’

ইউসুফ আরও যোগ করেন, ‘আমি বলছি না যে কোহলি মানসম্পন্ন ব্যাটসম্যান নয়। সে অবশ্যই মানসম্পন্ন ব্যাটসম্যান। কিন্তু সময় এখন বদলে গেছে। অস্ট্রেলিয়া দলে নেই গ্লেন ম্যাকগ্রা বা শেন ওয়ার্নের মানের বোলার। ভারতের অনিল কুম্বলে, শ্রীনাথ দুর্দান্ত বোলার ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা বা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলেরও তখন দুর্দান্ত বোলিং লাইনআপ ছিল। শ্রীলঙ্কা অনেক বেশী নির্ভরশীল ছিল মুরালিধরনের উপর। শচীন-দ্রাবিড়রা মানসম্পন্ন বোলার এবং দলের বিপক্ষে রান করেছে। আমি মনে করি টেন্ডুলকার ও দ্রাবিড় গ্রেট। আর এখন কোহলিদের সময়ে রান করাটা অনেক সহজ। কারণ এখন ব্যাটিংবান্ধব উইকেট বানানো হচ্ছে। এখন তো সব দেশের উইকেট প্রায় একই রকম। তাই রান করাটা অনেক সহজ। ’

ব্যাটসম্যান হিসেবে টেন্ডুলকার-দ্রাবিড়ের চেয়ে কোহলিকে পিছিয়ে রাখলেও অধিনায়ক হিসেবে কোহলিকে এগিয়ে রেখেছেন ইউসুফ, ‘আমাদের সময় দুই দলই মাঠে আক্রমণাত্মক থাকত। সৌরভ গাঙ্গুলীর কথাই ধরুন, তার দলের বিপক্ষে নামার আগে দারুণ উত্তেজিত থাকতাম আমরা। কোহলির ভেতর সেই আক্রমণাত্মক ভাব আছে। দলপতি হিসেবে ক্রিকেটে এটা থাকা দরকার। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, ০৫ আগস্ট ২০১৭
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।