ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

সংসদ সদস্য হয়েও লাল পাসপোর্ট, গাড়ি-বাড়ি নিইনি: মাশরাফি 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২০
সংসদ সদস্য হয়েও লাল পাসপোর্ট, গাড়ি-বাড়ি নিইনি: মাশরাফি  সতীর্থ মুশফিক ও সৌম্যের সঙ্গে খুনসুঁটিতে মাশরাফি: ছবি-মাহমুদ হোসেন

সিলেট: লাল-সবুজের জার্সি গায়ে কেটেছে জীবনের রঙিন সময়। ক্রিকেটে বাংলাদেশের দূত হয়ে বিশ্ব চষে বেড়িয়েছেন। বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।
 

সেই মাশরাফি ক্রিকেট জগতের অধিনায়কত্ব যখন ছেড়ে দিচ্ছেন তখন আবেগ যেন ধুলায় লুটায়। যার অস্তিত্ব জুড়ে কেবল ক্রিকেট।

অধিনায়কত্ব ছাড়ার সময়ও স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে ‘ম্যাশ’ দিয়ে গেছেন কিছু বার্তা ও রেখে গেছেন নিজের মর্যাদার জায়গাটুকু। যার কারণে উত্তরসূরিরা তাকে অনুসরণ করেই চলবে, চলতে হবে।

বৃহস্পতিবারের (০৫ মার্চ) গোধুলি বেলায় পশ্চিম আকাশে সূর্য যেন একটু আগেই অস্তমিত হয়ে গেলো! আর দিনটি যে সিলেটেই স্মরণীয় হয়ে থাকবে ক্রিকেট দুনিয়ার জন্য তা কেবল মাশরাফির অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণায়।

অধিনায়কত্বের বিদায় লগ্নে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কিংবদন্তি অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেন, ‘আমার যা কিছু অর্জন, সবই ক্রিকেট খেলা দিয়ে। ক্রিকেট দিয়ে দিন শুরু এবং শেষ। ক্রিকেট খেলোয়াড় না হলে মাছের ব্যবসা করতাম। যেহেতু আমাদের অনেক মাছের ঘের আছে। ’ 

নিজের অধিনায়কত্ব মিস করবেন কি না— সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নে মাশরাফি বলেন, ‘যখন আমি খেলোয়াড় ছিলাম, তখনো অনুভব করিনি। যখন অধিনায়ক হয়েছি, তখনও এটা মনে করিনি। আবার এখন সংসদ সদস্য আছি, সেটাও অনুভব করিনি। লাল পাসপোর্ট নিইনি। আমি গাড়ি নিইনি, বাড়ি নিইনি। আমি সব সময় এগুলো থেকে দুরে থাকার চেষ্টা করেছি। ’ 

তিনি বলেন, ‘অধিনায়ক হিসেবে যখন এই চেয়ারটাতে ছিলাম না তখন সম্ভাব্য সব ভাল করার চেষ্টা করেছি এটা পাওয়ার জন্য। এই চেয়ারে যখন পৌঁছেছি, তখন বুঝেছি, আমার পাওয়া শেষ। আমি এটাকে পজিটিভ হিসেবে ব্যবহার করেছি। ’ 

ম্যাশ বলেন, আমি সব সময় বলে আসছি, খেলাটা আমার লাইফ না। তবে লাইফের সব থেকে বড় অংশ। আমি এখানে বসেছি, এই খেলার জন্য, জীবনে যা কিছু অর্জন করেছি, সব খেলার জন্য। তাই এখানে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে অবশ্যই কঠিন। ’

এমন কথায় কার না চোখে জল ছলছল করবে, যেমনটি ছিল মাশরাফির চোখে। তা কেবল উপস্থিতদের ভাবিয়েছে। মাশরাফি বুঝিয়েছেন, দেশপ্রেম কাকে বলে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ দলের জার্সি গায়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দূতের দায়িত্ব পালন করেছি। যেভাবে হোক বোর্ড আমাকে সহযোগিতা করেছে। আর আপনি যখন ভাল করতে থাকবেন, তখন সবাই সহযোগিতা করে। ’ 

‘যখন আমার ভুল ধরা হয়, তখন প্রতিবাদ করতে পারি না।  মনে হয়, আমি ভুলই করেছি। এটা যদি আমার পারিবারিক সিদ্ধান্ত হয়, তখন আমি বিপক্ষে দাঁড়াতে পারতাম। আর নামটা যখন বাংলাদেশ, গায়ে বাংলাদেশের জার্সি নিয়ে খেলি, তখন তর্কের জায়গা থাকে না। কারণ অনেক বড় দায়িত্ব। সবার আবেগ জড়িয়ে থাকে। তাই দায়িত্ব নিয়েই খেলতে হয়। ’, যোগ করেন মাশরাফি।  

প্লেয়ারদের অনেক মতামত থাকে। তাদের কথা শুনতে হয়। আর সমালোচনা হলেও দিনশেষে আমরা খেলোয়াড়রা, মাথা নত করে থাকতে হয়, জানান মাশরাফি।  

তিনি বলেন, ‘আমরা খুব সহজে বলি ও ডিসিপ্লিন মানছে না। যারা অনুর্ধ্ব-১৯ খেলেছে তারা কি বলেছে, কোথাও অনেক কিছু করে ফেলেছে। আপনারাই তুলে ধরেন। আসলে খেলোয়াড়দের আবেগ নিয়ে কেউ ভাবে না। অনেক কঠিন সময়ের মধ্য দিয়েও তাদের যেতে হয়। তাদেরও অনেক কিছু মেনে নিতে হয়। যখন খারাপ সময় আসে, তখন পরিবারেরও অনেক দায়িত্ব থাকে। সেটা খেয়াল রাখা আবশ্যক। ’ 

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘন্টা, মার্চ ০৫, ২০২০
এনইউ/ইউবি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।