ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ইটভাটায় হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৩ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২৩
ইটভাটায় হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ ...

চট্টগ্রাম: সাতকানিয়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় আধুনিক একটি ইটভাটা দখলচেষ্টা, ভাংচুর-লুটপাটের অভিযোগ করেছেন মোহাম্মদ নোমান নামের এক ব্যবসায়ী।  

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী মোহাম্মদ নোমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০২১ সালের মার্চ মাসে এক কোটি পঁচিশ লাখ টাকায় নয় বছরের জন্য বিক্রয় চুক্তির মাধ্যমে ওসমান গণি একটি আধুনিক ইট ভাটা ক্রয় করেন।

ইট ভাটা নেওয়ার এক বছর অতিবাহিত না হতেই মৃত নাছির আহমদের পুত্র আনচারুল হক গত ১৮ মে সন্ধ্যায় সাতকানিয়া উপজেলার এওচিয়া আদর্শগ্রাম এলাকায় সন্ত্রাসীদের নিয়ে হামলা চালান।

তিনি আরও বলেন, ২০ জনের অধিক সন্ত্রাসী নিয়ে মোহাম্মদ নোমানের পরিচালনাধীন ব্রিক ফিল্ডটিতে হামলা করেন আনচারুল হক।

হামলাকারীরা তিনটি একনলা বন্দুক, লোহার রড, হকিস্টিক ও দেশিয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিতে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। হামলাকারীরা চার হাজারের অধিক কাঁচা ইট ভেঙ্গে দেওয়ার পাশাপাশি ক্যাশ ভেঙ্গে চল্লিশ হাজার টাকা লুট করে। তারা এ সময় প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাত-পা বেঁধে জিম্মি করে জীবননাশের চেষ্টা চালায় এবং পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দিতে বলে। প্রকল্পের মালিক নোমান নিরুপায় হয়ে তাৎক্ষণিক এক লাখ টাকা তুলে দেন। সন্ত্রাসীরা আরো চার লাখ টাকা ১২ ঘন্টার মধ্যে না দিলে মালিক নোমানকে হত্যার হুমকি দিয়ে যায়।  

প্রকল্পটির মালিক মোহাম্মদ নোমান নিরুপায় হয়ে ২৩ মে সাতকানিয়া থানায় ১৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন- কামাল উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম, সৈয়দুল হক, মোহাম্মদ ঈসা, আবুল কালাম, মোহাম্মদ ফারুক, আবদুল মান্নান, মোহাম্মদ মনজুর হাসান, আবু তাহের, আবদুল কাদের, মো. জামশেদুল করিম চৌধুরী, খোরশেদুল আলম, মোহাম্মদ আবু বক্কর প্রকাশ কালা বক্কর।

সাতকানিয়া থানায় মামলা দায়ের করার পরও আসামিরা এসএমবি ব্রিক ফিল্ডের মালিককে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি অব্যাহত রেখেছে।

তিনি বলেন, নিজের পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে এই ব্রিক ফিল্ড ক্রয় করেছি। আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে ধার-দেনা করে কষ্টে প্রকল্পটিতে উৎপাদন অব্যাহত রেখেছিলাম। কিন্তু ২৩ মে সন্ধ্যায় সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। আবারও সন্ত্রাসী হামলার ভয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রকল্প এলাকায় যাচ্ছে না। তিনি মামলায় অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন রিপন তালুকদার, তাইজুল ইসলাম ওমান প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, এ বিষয়ে প্রকল্প মালিক মোহাম্মদ নোমানের অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী গত ১৩ মে শালিসি বৈঠকের আয়োজন করেন। তিনি প্রকল্পটিতে কোনও প্রকার হস্তক্ষেপ না করতে স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ আনচারুল হককে লিখিত নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে মোহাম্মদ নোমানকে  ব্যবসা পরিচালনা করার পরামর্শ দেন।  

অভিযুক্ত আনচারুল হক সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মোতালেব এর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এর আগে বুধবার রাতে হঠাৎ এম এ মোতালেবের ব্যক্তিগত সহকারী আবু তৈয়ব মোক্তার সাংবাদিকদের ফোন করে সংবাদ সম্মেলনের কথা জানান। সেই সঙ্গে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হল ৫ হাজার টাকা দিয়ে বুকিং দেন।  

কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলে অজানা কারণে সংবাদ সম্মেলন স্থগিত করেন মোক্তার। পরক্ষণে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আনচারুল হকের বিরুদ্ধে আনিত সমস্ত তথ্য উপাত্ত নিয়ে হাজির হন ভুক্তভোগী মোহাম্মদ নোমান। পরে তিনি নিজেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে আনচারুল হকের সমস্ত ফিরিস্তি তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২১২ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২৩ 
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।