ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চবি উপাচার্যের বাংলো ও পরিবহন ভাঙচুর: ১০৩ শিক্ষকের নিন্দা 

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩
চবি উপাচার্যের বাংলো ও পরিবহন ভাঙচুর: ১০৩ শিক্ষকের নিন্দা 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেনে দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ও উপাচার্যের বাসভবনে হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ১০৩ জন শিক্ষক নিন্দা জানিয়েছেন।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জ্ঞাপন করেন তারা।

ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ মামুন বাংলানিউজকে বিবৃতির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ১০৩ জন শিক্ষকের সম্মতি নিয়ে এ বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে দুইজন শিক্ষকের নাম বাদ পড়েছে।

সেটা আমরা সংশোধন করে দিবো।  

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে বেশ কিছু ছাত্র মারাত্মক ভাবে আহতের প্রেক্ষিতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাংলো, শিক্ষক ক্লাব, পুলিশ বক্স ও পরিবহন দফতরে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটতরাজ ও ক্ষতিসাধন করে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসমাজ ছাত্র-ছাত্রীদের এহেন আচরণে ব্যথিত, ক্ষুব্ধ ও বিস্ময়ে হতবাক।

ট্রেন দুর্ঘটনায় ছাত্র-ছাত্রী আহত হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। দুর্ঘটনায় আহতদের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা। তাদের দ্রুত সুস্থতায় সব রকমের ব্যবস্থা গ্রহণ করায় প্রশাসনকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু এ ঘটনার দোহাই দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদের ব্যাপক ক্ষতিসাধন সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য, অনৈতিক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের শামিল। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। এ হামলার পেছনে কোনো ইন্ধনদাতা থাকলে সেটিও খুঁজে বের করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশাপাশি কোনো নিরপরাধ ছাত্র-ছাত্রী যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ করছি।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা কখনোই ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিপক্ষ নয়। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও ভালবাসার। অথচ কিছু সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীর নৈতিক অধঃপতন, বেপরোয়া ও অছাত্রসুলভ আচরণের জন্য গোটা ছাত্রসমাজের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। ছাত্র-যুব সমাজের নৈতিকতা, মূল্যবোধ, সংস্কৃতির ক্রমঅবনমন ও এ ধরনের হিংসাত্মক আচরণের বহিঃপ্রকাশ আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলছে। আমরা আশা করবো তারা এ ধরনের সন্ত্রাসী আচরণ ও কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখবে। এক্ষেত্রে যুব সমাজের মধ্যে নৈতিকতা ও মূল্যবোধ সৃষ্টিতে শিক্ষক সমাজ, পরিবার ও রাষ্ট্রের যে ভূমিকা রয়েছে তা পালনে আন্তরিক হওয়ার জন্য সকল পক্ষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হওয়ার কারণে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা সবাই পরিবহন তথা বাস ও শাটল ট্রেনের ওপর নির্ভরশীল। সুতরাং ছাত্র-ছাত্রীদের আসা-যাওয়ার অন্যতম বাহন শাটল ট্রেনের সুযোগ-সুবিধা দ্রুততম সময়ে বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

বিবৃতি দেওয়া শিক্ষকদের মধ্যে আছেন, ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ মামুন, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহাবুবুল হক, প্রাণ রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. দ্বৈপায়ন শিকদার, মাইক্রো বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আবুল মনসুর, বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. দানেশ মিয়া, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রাহমান নাসির উদ্দিন এবং সমাজতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান সহ ১০৩ জন শিক্ষক এ বিবৃতি দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩
এমএ/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।