ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ওয়াসার এমডি পদে ফজলুল্লাহর ১৬ বছর, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৪
ওয়াসার এমডি পদে ফজলুল্লাহর ১৬ বছর, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার দাবি

চট্টগ্রাম: টানা ১৬ বছর চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে থাকা প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহর নিয়োগ বাতিল, দুর্নীতি-অনিয়মের তদন্ত করে শাস্তির আওতায় আনা ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের নেতারা।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের মাধ্যমে পাঠানো স্মারকলিপিতে এ দাবি জানানো হয়।

 

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের নেতা মো. জানে আলম, ছাত্র ও যুব সংগঠক এবং ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমান, ছাত্রনেতা রাসেল উদ্দীন, রায়হান উদ্দীন প্রমুখ। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মো. সাদি উর রহিম জাদিদ উপস্থিত ছিলেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই ওয়াসা এমডিকে স্বপদে বসিয়ে রেখে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে তদন্ত ও অভিযুক্ত ব্যক্তির ব্যবস্থাপনায় তদন্ত টিম তদন্ত কার্য সম্পাদন শুধু হাস্যকর বিষয় না, এটা জনগণের সঙ্গে তামাশার শামিল। যার বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ তাকে স্বপদে বহাল রেখে ও অভিযুক্ত ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে তদন্ত টিমের তদন্ত সম্পাদনের মতো বিগত সরকারের আমলে হাস্যকর রীতি অব্যাহত রাখা হলে বিপুল পরিমাণ ছাত্র-জনতার আত্মাহুতি দিয়ে বর্তমান সরকারকে দায়িত্ব দেওয়ার সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতার শামিল হবে। এমডি ফজলুল্লাহকে চেয়ারে বসিয়ে রেখে তার দুর্নীতি তদন্ত সঠিক ভাবে সম্পাদন সম্ভব হবে না। তার অধীনে থেকে কেউ অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে তথ্য দিতে সাহস করবেন না। অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আগে তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। পদ ছাড়লে তখনই সঠিক তদন্ত সম্ভব এবং সব অনিয়ম-দুর্নীতির বিস্তারিত খতিয়ান বেরিয়ে আসবে।

বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর পরই সিদ্ধান্ত নেন বিগত আওয়ামী সরকার আমলে নিয়োগ পাওয়া সব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হবে। সব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল ও অনেকেই পদ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও বিগত সরকার আমলে ৮ দফায় ১৬ বছর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে নিয়োজিত চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি পদ না ছেড়ে নানা চক্রান্তে নিয়োজিত। ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষ অবলম্বন করে অনিয়ম দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যসহ নিজের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে ওয়াসাকে। এই সময়ের মধ্যে ১৪ বারের বেশি পানির দাম বাড়িয়ে চট্টগ্রামবাসীর ওপর পানির দামের বোঝা চাপিয়েছে। এখনো শহরের এক-তৃতীয়ংশ মানুষ ওয়াসার পানি পায় না, আর ময়লা, লবণাক্ত পানির যন্ত্রণা ও ভুতড়ে বিলের যন্ত্রণায় জর্জরিত।  

ওয়াসার বাস্তবায়ন করা ও চলমান প্রতিটি প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। এমনকি নিজের মেয়ের প্রতিষ্ঠানকে সুয়্যারেজ প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়াসহ আত্মীয়স্বজনকে চাকরি দেওয়ার ঘটনাও আছে। অনিয়মে জড়িত, তার আত্মীয় ও ওয়াসা কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই দেশত্যাগ করতে শুরু করেছেন। এমডি ফজলুল্লাহ যেকোনো সময় দেশত্যাগ করার আশঙ্কা রয়েছে। দ্রুত তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা না হলে আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী এমপিদের মতো পালিয়ে যাবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৪
এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।