নয়াদিল্লি: সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলিতে ভারতীয়দের রাখা টাকার পরিমাণ বাড়ছে বলে জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক(এসএনবি)।
তারা জানিয়েছে, ২০১১-এর শেষে ব্যাংকগুলোতে ভারতীয়দের টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ হাজার ৭শ কোটি রুপি।
তবে এর মধ্যে কালো টাকার পরিমাণ কত তা জানানো হয়নি। এসএনবি জানিয়েছে, ওই টাকা বিভিন্ন দেশের গ্রাহকদের প্রতি সুইস ব্যাংকগুলোর ‘দায়’।
এর পাশাপাশি বেনামে কেউ টাকা রেখেছে কি না স্পষ্ট নয় তাও। কারণ সেই হিসেব এ ক্ষেত্রে ধরেনি এসএনবি।
সার্বিক ভাবে সুইস ব্যাংকগুলোতে মোট যে অর্থ গচ্ছিত রয়েছে, তার মধ্যে এসএনবি’র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ভারতীয়দের অর্থের পরিমাণ মাত্র ০.১৪ শতাংশ।
দেশটির ব্যাংকগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের মোট ৯০ লাখ কোটি রুপি জমা রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি টাকা এসেছে যুক্তরাজ্য থেকে, ২০ শতাংশের বেশি। এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, প্রায় ১৮ শতাংশ।
এসএনবি’র তথ্য অনুযায়ী, ব্যক্তি হিসেবে ভারতীয়দের ‘সরাসরি’ জমা টাকার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৮শ কোটি রুপি। এ ছাড়া কিছু ‘ফান্ড ম্যানেজার’ সংস্থাও একজন ভারতীয় বা ভারতীয় পরিবারের হয়ে সেখানে টাকা রাখে। সেই হিসেবে ভারত ৭৬ তম স্থানে থাকলেও পাকিস্তান অনেক এগিয়ে, ৫২তম স্থানে।
উল্লেখ্য, কালো টাকা নিয়ে গত মে মাসে ভারতীয় সংসদে শ্বেতপত্র পেশ করা হয় কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। তাতে বলা হয়েছে, ভারতীয়দের প্রতি সুইস ব্যাংকগুলোর দায় ২০০৬ থেকে ২০১০-এর মধ্যে প্রায় ১৪ হাজার কোটি রুপি কমেছে। সুইজারল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশে ভারতীয়দের বেনামি টাকা দেশে ফেরাতে সচেষ্ট হচ্ছে কেন্দ্র।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত দুটি কারণে টাকা রাখার নিরাপদ স্থান হিসেবে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে সুইজারল্যান্ড।
প্রথমত, উৎস অজ্ঞাত রাখার প্রচলনের জন্যই সুইস ব্যাংকগুলো জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু কালো টাকা নিয়ে সম্প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় টাকার উৎস সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য সংশ্লিষ্ট দেশের কাছে প্রকাশ করার জন্য আন্তর্জাতিক মহলও সুইজারল্যান্ডের উপর চাপ বাড়াচ্ছে।
এর ফলে মরিশাস, মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইয়ের মতো দেশে পাড়ি দিচ্ছে সুইজারল্যান্ডে জমা বেনামি ও কালো টাকার একাংশ।
দ্বিতীয়ত, যারা ‘বৈধ’ পথেই সেখানে টাকা রাখতেন, এই নেতিবাচক পরিবেশ থেকে বাঁচতে তারাও অন্য দেশে টাকা রাখতেই স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন। তাই সুইজারল্যান্ড ছেড়ে ভারতীয় রুপি পাড়ি দিচ্ছে অন্যত্র।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১২
আরডি/সম্পাদনা: বেনু সূত্রধর, নিউজরুম এডিটর; নূরনবী সিদ্দিক সুইন, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর