ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ইফতারে ফলের যোগান দিতে প্রস্তুত কলকাতার বড় বাজার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০২৪
ইফতারে ফলের যোগান দিতে প্রস্তুত কলকাতার বড় বাজার

কলকাতা: একদিন পরই উঠতে পারে রমজানের চাঁদ। এরপর শুরু হয়ে যাবে সিয়াম সাধনার মাস।

রোজার দিনগুলোতে অন্যতম আকর্ষণ ইফতার। দিনভর সিয়াম সাধনার পর ইফতারের পাতে ফলের গুরুত্ব সর্বত্র। তাই প্রতিদিনের ইফতারের পাতে ফলের যোগান দিতে কোমর বেঁধে প্রস্তুত কলকাতার বড় বাজারের ফলের আড়ত ও মেছুয়া বাজার।

কলকাতার মেছুয়া পাইকারি ফল বাজারে দেশি-বিদেশি সব ধরনের ফল পাল্লা হিসেবেই বিক্রি হয়। একপাল্লা সমান পাঁচ কেজি। যদিও অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ করে এই রোজার মৌসুমে কেজিপ্রতিও বিক্রি হয়ে থাকে। এখনও শহরের সেই ফল বাজারে তেমন ভিড় নেই। তবে রোজা শুরু হলেই বেশি পরিমাণে ফল কিনতে মুসল্লিদের ভিড় উপচে পড়বে মেছুয়া বাজারে।

এ সময়টায় সরকারিভাবে দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও কালোবাজারিদের অঙ্গুলীহেলনে রোজা শুরু হলেই ফলের দাম যে এবারও বাড়তে পারে, শুক্রবার (৮ মার্চ) ফলপট্টিতে তার আজ পাওয়া গেছে।

বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী, একডজন কলার দাম দাঁড়িয়েছে ৫০ থেকে ৬০ রুপি। আপেল দাম শুরু হয়েছে ২৫০ রুপি প্রতিপাল্লা। তরমুজ একপাল্লার দাম পড়ছে ১২৫ রুপি। বেদানা মান অনুযায়ী, প্রতিপাল্লা আড়াইশো থেকে ৩শ রুপি। আনারস প্রতি ডজন ৪৫০ থেকে সাড়ে ৮শ রুপি। পাকা পেঁপে পাল্লাপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০ রুপি।

ইফতারের শসার কদর বেশি। ৪০-৫০ রুপি শশা এখনই বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ রুপিতে। আঙুর কেজিপ্রতি ৬০-৮০ রুপি। মাঝারি সাইজের মুসম্বি লেবুর এক পিসের দাম পৌঁছেছে ১৫- ২০ রুপি। এখনই একটি শরবত খাওয়ার লেবুর দাম পড়ছে ৫-৬ রুপি।

মেছুয়া বাজারে খেজুর ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সিরাজ জানিয়েছেন, সারাবছরে আয়ের জন্য আমরা রমজানের ওপর ভরসা করে থাকি। এ বছর বাজার ভালো হবে বলে তিনি আশাবাদী। তবে খেজুরের দাম একই থাকবে। খেজুরের মান অনুযায়ী কেজিপ্রতি ১৫০ থেকে হাজার রুপি। এছাড়া ট্যাটকো খেজুর ৩শ রুপি, নূরী ২৮০ রুপি, মাবরুম ৪শ রুপি কলমি ৬৫০ রুপি, হিলি ২৯০ রুপি, কিমিয়া ৩৪০ রুপি এবং আলু খেজুর ১১০ রুপি। সবচেয়ে কম দাম চট খেজুর, ৮০- ৯০ রুপি।

মেছুয়া বাজারের ‘ফ্রন্ট মার্চেন্ট ফেরিয়া অ্যাসোসিয়েশন’র অন্যতম সদস্য মো. আকবর জানিয়েছেন, অন্যান্য বাজারের তুলনায় মেছুয়া বাজারের সবধরনের ফলের দাম কম থাকে। এখানে পাইকারি এবং খুচরা দুইভাবেই কেনা-বেচা হয় হয়ে থাকে।

তবে বর্তমানে বাজারে আসা ক্রেতাদের একাংশ অভিযোগ, রমজানের শুরু হতেই প্রতিবছর ফল এবং আনাজের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। আনাজের দাম বাড়লে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাজার নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও, ফলের ক্ষেত্রে সরকারের সেরকম ভূমিকা দেখা যায় না। সে কারণে রমজান এলেই ফলের দাম বাড়তে থাকে। রমজানের সময় ফলের বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকে, সরকারের তা দেখা উচিত।

মেছুয়ার ফল ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায়, ভিনরাজ্য থেকে ফলভর্তি ট্রাক আনতে খরচও বাড়ছে। তারা জানাচ্ছেন, আগে নাসিক থেকে এক ট্রাক আঙুর আনতে যেখানে খরচ হতো প্রায় ৮০ হাজার রুপি, সেটাই এখন জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পড়ছে দেড় লাখ রুপি। তাই অনেকেই ভিন রাজ্য থেকে ফল আনার সাহস পাচ্ছে না। তবে রমজানের সময় চাহিদা থাকায় অনেকে ব্যবসায়ী মজুদ শুরু করে দিয়েছেন।

তবে চাহিদার তুলনায় এবার যোগান কম হলে ফলের দাম বাড়তে পারে বলেও জানাচ্ছেন অনেক ফল ব্যবসায়ীরা। তবে সব মিলিয়ে এক প্রকার ফলের পসরা নিয়ে প্রস্তুত কলকাতার ফল ব্যবসায়ীরা। কারণ চাঁদ উঠলেই শুরু হবে রমজান। তখন ব্যস্ততা বেড়ে যাবে বহুগুণ। তাই প্রস্তুত ফল ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২৪
ভিএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।