মুম্বাই: সব রকমের ধর্মঘট নিষিদ্ধ করার আইন জারি হলো ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে। বিধানসভায় পাস হওয়া বিল রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পাওয়ার পর শনিবারই এ আইনের বিজ্ঞপ্তি জারি হয় রাজ্যে।
এ আইন অনুযায়ী প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রে ধর্মঘট বেআইনী ঘোষিত হতে চলেছে, ধর্মঘটী শ্রমিক ও ধর্মঘটের সমর্থনে প্রচারকারীর ৬ মাস থেকে এক বছরের জেল ও জরিমানা হবে।
আইনের নাম ‘মহারাষ্ট্র জরুরি পরিষেবা রক্ষা আইন, ২০১১’। এক কথায় এসমা। কিন্তু পুরনো এসমার সঙ্গে পার্থক্য হলো সরকারি, আধা সরকারি, পরিবহন, হাসপাতাল ছাড়াও যে কোনো বেসরকারি কর্পোরেট ক্ষেত্রকেও এর অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।
মহারাষ্ট্র সরকারের যুক্তি ‘স্বাভাবিক জনজীবন’ ব্যাহত করে এমন যে কোনো ধর্মঘট এবার থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত হবে। ধর্মঘটী শ্রমিককে ৬মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড ও ২ হাজার রুপি জরিমানা আরোপ করা যাবে। ধর্মঘটের ‘প্ররোচনা দিলে’ অর্থাৎ ধর্মঘটের সপক্ষে প্রচার করলে বা ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠকদের ক্ষেত্রে কারাদণ্ডের মেয়াদ ১ বছর।
মহারাষ্ট্রে ধর্মঘট এখন জামিন-অযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ধর্মঘট নিয়ে নানা আইন ও বিধি থাকলেও এই মাত্রার শ্রমিক-বিরোধী আইন ছিল না।
স্বভাবতই এ আইনের তীব্র বিরোধিতা করেছে শ্রমিক সংগঠনগুলো। রাজ্য বিধানসভায় ২০১০ সালে এ বিল নিয়ে আসা হলেও তা অনুমোদন করানো হয়নি। ২০১১-তে বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। এই আলোচনার প্রত্যেক পর্যায়েই দলমত নির্বিশেষে ট্রেড ইউনিয়নগুলো এ বিলের বিরোধিতা করে।
১৮টি ইউনিয়ন সমবেতভাবে এ বিলের বিরুদ্ধে অভিমত দিলেও তা উপেক্ষা করেই বিধানসভায় বিল পাস হয়।
সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুএই আইনের জোরালো প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, এটি দানবীয় আইন। ধর্মঘটের অধিকারের ওপরে সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়নগুলো সমবেতভাবে এই আইনের বিরোধিতা করা সত্ত্বেও এ আইন হলো। কেননা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার দেশি-বিদেশি কর্পোরেট ও বৃহৎ বাণিজ্যের হাতে বন্দি, তাদেরই দাসত্ব করছে। অর্থনীতিকে সচল রাখা শ্রমজীবী জনতার মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকারের বিরুদ্ধে এই ঘৃণ্য আক্রমণ নামিয়ে আনা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০১২
আরডি/সম্পাদনা: আবু হাসান শাহীন, নিউজরুম এডিটর