কলকাতা: ভারত ভ্রমণে এসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২৭ বছর বয়সী এক ইসরায়েলি নারী। একই কাণ্ডের শিকার হন তার ভারতীয় বান্ধবী ও কর্ণাটকের স্থানীয় একটি হোম-স্টের নারী স্বত্বাধিকারী।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটকের হাম্পি গ্রামের সানাপুর লেকের কাছে। জানা গেছে, ভুক্তভোগী ইসরায়েলি নারী ও তার ভারতীয় বান্ধবী ও তিন বন্ধু (একজন যুক্তরাষ্ট্রের, দুজন ভারতীয়) ইউনেস্কো স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের মর্যাদা পাওয়া পর্যটন কেন্দ্র হাম্পিতে রাতের আকাশ পরিদর্শনে যান।
সানাপুর লেকের কাছেই টুঙ্গাভদ্র খালের পাড়ে খোলা আকাশের নৈশ দৃশ্য উপভোগ করছিলেন তারা। এসময় তিন যুবক মোটরসাইকেলে চড়ে তাদের কাছে আসে। আগন্তুকরা পেট্রোল পাম্পের খোঁজ করেন। হোম-স্টের নারী স্বত্বাধিকারী তাদের জানান, আশপাশে কোনো পেট্রোল পাম্প নেই। তখন ওই তিন যুবক তাদের কাছে অর্থ দাবি করে। ভুক্তভোগীরা সেটি দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ভুক্তভোগী নারীদের তিন পুরুষ বন্ধুকে ঠেলে খালের পানিতে ফেলে দেয়।
এরপর তারা ইসরায়েলি নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। তারপর তারা ভারতীয় নারীকে ধর্ষণ করে। এ সময় তাদের বন্ধু যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ড্যানিয়েল ও ভারতের মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা পঙ্কজ খালের পানিতে সাঁতরে নিজেদের রক্ষা করেন। কিন্তু তাদের অপর বন্ধু ও ওড়িশার বাসিন্দা বিভাস পানিতে তলিয়ে যান। শনিবার (৮মার্চ) ভোরে সানাপুর লেক থেকে তার মরদেহ উদ্ধার হয়।
পরে ভুক্তভোগীরা স্থানীয় গঙ্গাবতী গ্রামীণ থানায় ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৩০৯(৬)(চাঁদাবাজি), ৩১১ (হত্যা বা মারাত্মকভাবে আহত করার জন্য ডাকাতি), ৭০(১) (গণধর্ষণ), ১০৮ (খুনের চেষ্টা) ধারায় মামলা দায়ের করে। মামলা আমলে নিয়ে ঘটনার তদন্তের জন্য ছয় সদস্যের একটি টিম গঠন করে তদন্তে নামে পুলিশ।
মামলা এজাহারে ভুক্তভোগী ভারতীয় নারী উল্লেখ করেন, অভিযুক্তরা তাকে টেনে খালের পাড়ে নিয়ে ধর্ষণ করে। তাদের মধ্যে একজন তার গলা চেপে ধরে, অন্য দুজন তাকে ধর্ষণ করেন। তার কাছে ৯৫০০ রুপি ও দুটি মোবাইল ছিল, সেগুলো ছিনতাই করা হয়েছে। এ ঘটনার পর অভিযুক্তদের একজন তার ইসরায়েলি বান্ধবীকে খাল পাড়ে নিয়ে ধর্ষণ করে। বাকিরা পরে এমন অপকাণ্ডে যোগ দেয়। ঘটনার পরপরই তারা এলাকা থেকে পালায়।
সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ইসরায়েলি নারীকে চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ড্যানিয়েল ও পঙ্কজও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, আসামিরা সবাই স্থানীয় বাসিন্দা। কেননা, তারা তেলেগু ও কন্নড় ভাষায় কথা বলছিল। তাদের ধরতে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। ঘটনাস্থল ঘিরে রাখা হয়েছে।
কোপ্পালের পুলিশ সুপার আর এল আরাসিদ্দি ঘটনা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, মামলার দায়ের হওয়ার পর দ্রুতই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আসামিদের ধরার জন্য পুলিশের ছয় সদস্যের বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, ৮ মার্চ, ২০২৫
ভিএস/এমজে