ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

কলকাতার মিষ্টির, মিষ্টি কথা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৪
কলকাতার মিষ্টির, মিষ্টি কথা

কলকাতাঃ বাংলা ভাষার মতই বাঙালির অপর একটি প্রাণাধিক প্রিয় বস্তু মিষ্টি। খাওয়ার শেষ পাতে যদি একখানি মিষ্টি থাকে তাহলে আপামর বাঙালির রসনা-বাসনা দুটোই পরিপূর্ণ হয়।

বাঙালির কাছে মিষ্টি যেন এক অমৃত কুম্ভ, যার কোন বিকল্প হয় না। মিষ্টি প্রেমী বাঙালি অবলীলায় দাবি করেন কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কার থেকে নবীন চন্দ্র  দাসের রসগোল্লা আবিষ্কার কোন অংশে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।
 
বাঙালির ইতিহাসে রাজা  রামমোহন রায়, স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, রানি রাসমনি থেকে শুরু করে তৎকালীন যুগে  শ্রী রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ, নাট্যকার গিরিশ ঘোষ আর স্বাধীনতা উত্তর কলকাতায় অস্কার জয়ী পরিচালক সত্যজিৎ রায় সদ্য প্রয়াত মান্না দে, রিতুপর্ন ঘোষ সকলেই ছিলেন মিষ্টির প্রেমিক। আর আজকের বলিউডের অভিষেক বচ্চন, ঐশ্বর্য রাই কিংবা বিদ্যা বালানরা মিষ্টির জন্য তাদের কড়া খাদ্য রুটিন  ভাঙতে একটুও দ্বিধা করেন না।
 
প্রখ্যাত লেখক বনফুলের স্ত্রী  লীলা দেবী একবার বলেছিলেন বাঙালীর রুচির দুই জন স্রষ্টা, প্রথম জন দ্বারিক ঘোষ এবং দ্বিতীয় জন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। দুই বাঙলার মিষ্টির ঐতিহ্য সারা পৃথিবীর খাদ্য রসিকদের কাছে বাস্তবেই এক গভীর চর্চার বিষয়। মিষ্টির এত বৈচিত্র্য বোধহয় বাঙালি ছাড়া অন্য কোন জাতির আয়ত্তে নেই।
 
বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, কুমিল্লার রসমালাই, গাইবান্ধার রস মঞ্জরী, বিক্রমপুর ও কলাপাড়ার রসগোল্লা, শেরপুর ও গৌরনদীর দই যশোরের খেজুরগুড়ের সন্দেশ, শাহজাদপুরের রাঘবসাই, মুক্তাগাছার মণ্ডা, খুনলা ও মুক্তাগাছার অমৃতি,  কিশোরগঞ্জ-নেত্রকোনার গোয়া নাথ ঘোষালের আবিষ্কৃত বালিশ মিষ্টি, নওগাঁর প্যারা সন্দেশ এবং  রসমালাই-এর নাম গোটা বিশ্বের মিষ্টি প্রেমীদের হৃদয়ে সব সময়ের জন্য অমলিন  হয়ে আছে। এছাড়াও রাজশাহীর তিলের খাজা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানা মুখি, রাজশাহীর রসকদম ,মেহেরপুরের সাবিত্রী –এর নাম মিষ্টি প্রেমীদের কাছে ইষ্ট নামের মত পবিত্র।
 
সে বাংলাদেশ হোক বা পশ্চিমবাংলা পৃথিবীর যে প্রান্তে বাঙালি আছে সেখানেই  মিষ্টির প্রতি প্রেমও চিরন্তন হয়ে আছে। কলকাতাও তার ব্যতিক্রম নয়। উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতার অলিতে গলিতে ছড়িয়ে আছে মিষ্টির প্রতি বাঙালির ভালবাসার প্রমাণ। তাই যতই বাঙালির খাদ্য তালিকায় যোগ হোক চীনা, ইতালি বা আমেরিকান স্বাদ কিংবা অতিরিক্ত মিষ্টি খবার ফলে দেহের মধ্যপ্রদেশীয় অংশের অতিরিক্ত বৃদ্ধি তবুও বাঙালির মিষ্টির প্রতি ভালবাসা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পেরিয়ে অবিচল,অবিকল রয়েছে শুধু নয় উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কলকাতার মিষ্টির মানচিত্র আঁকতে গেলে উত্তর কলকাতার পাল্লা অবশ্যই ভারি হয়ে উঠবে। প্রথমেই যে নামটি মনে আসে সেটি হোল ভীম চন্দ্র নাগ। কলকাতার ভৌগলিক পরিচয়ে গঙ্গা নদী যতটা উল্লেখযোগ্য রসনার পরিচয়ে সেই রকমই ভীম নাগের সন্দেশ ততটাই উল্লেখযোগ্য।
 
কড়াপাকের সন্দেশের মহারাজ ভীম নাগের সন্দেশ তাদের ঐতিহ্য আজও বজায় রেখেছে। সময়টা ১৮২৬ সাল। গঙ্গার আপর পার হুগলী জেলার জনাই নামের এক গ্রাম থেকে কলকাতার বড়বাজারে একটি ছোট্ট মিষ্টির দোকান খুললেন ময়রা প্রাণ চন্দ্র নাথ। তার সুযোগ্য উত্তরসূরি তার ছেলে ভীম চন্দ্র নাগ সন্দেশ শিল্পকে নিয়ে গেলেন এক অন্য উচ্চতায়। জায়গা করে নিলেন ইতিহাসের পাতায়।   শোনা যায় বাঙলার বাঘ স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ভীম নাগের সন্দেশ না খেয়ে রাতে ঘুমতে যেতেন না। রানি রাসমনির বাড়িতে যেকোনো উৎসবে ভীম নাগের কড়া পাকের সন্দেশ ছিল একটি আবশ্যিক মিষ্টি।
 
ইতিহাসের পাতায় আরও এক প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব রাজা রামমোহন রায়ও ছিলেন ভীম নাগের সন্দেশের ভক্ত। ভীম চন্দ্র নাগের সেই দোকান আজ বউবাজারে বাঙালি জাতির মিষ্টির প্রতি ভালবাসার প্রমাণ হিসেবে উজ্জ্বল ভাবে অবস্থান করছে।
 
এতো গেল কড়া পাকের সন্দেশের কথা এবার আসি নরম পাকের সন্দেশের কলকাতার কড়চায়। নরম তুলতুলে এই সন্দেশ মুখে পুড়লে মনে হয় শুধু মাত্র একটিবার এই স্বাদ পাবার জন্য জন্ম- জন্মান্তর ধরে এই বাঙলায় ফিরে ফিরে আসা যায়।
 
তবে এই স্বাদের কথা বলার আগে সন্দেশের সৃষ্টির ইতিহাস নিয়ে কিছু কথা বলা দরকার। না হলে এই পথ চলা সম্পূর্ণ হয়ে উঠবে না। তবে এই ইতিহাস মুখে মুখেই প্রচারিত। এর কোন প্রামাণ্য লিখিত উপাদান সহজলভ্য নয়।

অতীতে বাঙলার একটি বিশেষ অংশকে বলা হোতো ‘গৌড় বঙ্গ”। মনে করা হয় ‘গুড়’ শব্দটির থকেই এই ‘গৌড়’ শব্দটি এসেছে। এছাড়াও বাংলাকে রাঢ়, বরেন্দ্রী, পুণ্ড্র, হরিকেল, সমতট, ইত্যাদি ভাগে ভাগ করা হোতো।   গৌড় বঙ্গে উৎপাদিত হত ব্যাপক পরিমাণে দুধ।   উনিশ শতকের গোঁড়ার দিকে ছানার সঙ্গেই চিনি মিশিয়ে তৈরি হয়েছিল সন্দেশ। সাল তারিখ সঠিকভাবে জানতে পারা না গেলেও মনে করা যেতেই পারে সেই সময় থেকেই শুরু হয়েছিল নরম পাকের সন্দেশের পথ চলা। যার প্রথম নামটি ছিল ‘মাখা সন্দেশ’।
 
বাঙালির মিষ্টির মধ্যে পর্তুগিজ প্রভাবের প্রমাণও পাওয়া গেছে। ফ্রান্সিয়োস বারনিয়ার নামে এক ফরাসি পরিব্রাজকের লেখা থেকে জানা যায় পর্তুগিজ অধিকৃত বাংলায় মিষ্টির অধিক প্রচলনের কথা। সময়টা ১৬৫৯ থেকে ১৬৬৬ সাল। বারনিয়ার-এর লেখা থকে জানা যায় পর্তুগিজরা দই তৈরি করতে যথেষ্ট পারদর্শী ছিলেন।

১৮৪৪ সালে গিরিশ চন্দ্র দে আর নকুর চন্দ্র নন্দী মিলে কলকাতার হেদুয়ার কাছে রাম দুলাল স্ট্রীটে তৈরি করেন একটি মিষ্টির দোকান। সেই সময় থেকেই এরা জলভরা, কাঁচাগোল্লা, শঙ্খ সন্দেশ পরিবেশন করে বাঙালির রসনাকে তৃপ্ত করে চলেছেন। নরম পাকের সন্দেশের এই দোকান কলকাতার অন্যতম প্রাচীন ও সেরা। বিবেকানন্দ থেকে সত্যজিৎ রায় অথবা অভিষেক থেকে অমিতাভ বচ্চন, কোয়েল মল্লিক সকলেই নকুরের মিষ্টির ভক্ত। অভিষেক বচ্চনের বিয়ের অনুষ্ঠানে এই দোকান থেকেই গিয়েছিল সন্দেশ।
 
১৮৫১, কলকাতার ইতিহাসের পাতায় নজর রাখলে দেখা যাবে কবিয়াল ভোলা ময়রার নাম। যার কাছে কবিগান শিখতে এসেছিলেন পর্তুগিজ অ্যান্টনি ফিরিঙ্গী। কলকাতার বাগবাজারে ছিল এই ভোলা ময়রার দোকান। যদিও অনেক খোজ করেও এর থেকে বেশি তথ্য উদ্ধার করা গেল না।
 
পশ্চিমবঙ্গের মিষ্টির জগতে দ্বারিক ঘোষ নামটি সুবর্ণ অক্ষরে লেখা আছে। ১৮৮৫ সালে তিনি কলকাতায় তার প্রথম উদ্বোধন করেন। অল্পদিনের মধ্যেই সন্দেশ প্যারা-এর জন্য তিনি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। বর্তমানে সারা কলকাতায় এই গোষ্ঠীর ৯টি দোকান আছে।
 
সন্দেশের পরেই আসে রসগোল্লার কথা। রসনা তৃপ্তির সমস্থ রস নিজের অন্তরের মধ্যে লালন করে রসগোল্লা যুগ যুগ ধরে বাঙালিকে তৃপ্ত করে আসছে। আর রসগোল্লার কথা উঠলেই মনে আসে মধ্য কলকাতার কে সি দাসের দোকানের কথা। পাঁচ পুরুষ ধরে কলকাতার প্রাণ কেন্দ্র ধর্মতলায়  এই দোকানটি অবস্থিত। রসগোল্লার আবিষ্কারক নবীন চন্দ্র দাস এই দোকান তৈরি করেন। ঐতিহ্যবাহী রসগোল্লার সাথে সাথে লালমোহোন, রাজভোগ রয়্যাল, অমৃত কুম্ভ, রসমালঞ্চ,ছানার টোস্ট সুধু কলকাতা বা ভারতে নয়ে গোটা বিশ্বে বিখ্যাত। দক্ষিণ ভারতের ব্যঙ্গালেরু শহরে রসগোল্লাকে আরও উন্নত করে তুলতে এরা বিশেষ গবেষণাগার তৈরি করেছে।
 
তবে রসগোল্লাকে নিয়ে কিছু বিতর্কও আছে। ঐতিহাসিকদের মতে রসগোল্লার জন্ম  ভারতের ওড়িশায়। যেখানে এর নাম ছিল ক্ষীর মোহোন। যেটি প্রাচীন কাল থেকেই ভারতের অঙ্গরাজ্য উড়িষ্যার ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি। তবে ইতিহাসকে সম্মান জানিয়েও বাঙালি মিষ্টি রসিকদের একটাই যুক্তি রসগোল্লাকে বিশ্ববাসীর কাছে হাজির করে তাকে নতুন করে আবিষ্কার করেছেন নবীন চন্দ্র দাস। আর বাস্তবেও এর স্বাদ, গুণমানের যথেষ্ট উন্নতি ঘটিয়েছেন তিনিই এবং রসগোল্লা নামটিও তাঁর দেওয়া।
 
এছাড়াও কলকাতায় আরও আছে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের বিখ্যাত চিত্তরঞ্জন মিষ্টান্ন ভাণ্ডার এদের বিখ্যাত চিত্রকূট কলকাতার বহু বিয়েতে বর এবং কনে পক্ষকে তত্ত্ব হিসেবে পাঠানো হয়।
 
এবার আসা যাক দক্ষিণ কলকাতায়, ভবানিপুরের বিখ্যাত মিষ্টির দোকান বলরাম মল্লিক এবং রাধারমণ মল্লিকের কথায়। প্রানহারা সন্দেশের জন্য বিখ্যাত এই দোকান। গুণমানের বিচারে এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে কলকাতার প্রথম সারির দোকান গুলি যথেষ্ট উন্নত। বলরাম মল্লিকের পাকশালায় কাজ করে একটি জাপানি রোবট। যে নয় নয় করেও ৯৯ ধরনের মিষ্টি তৈরি করতে পারে। প্রানহারা সন্দেশে এই রোবট কারিগরের জুড়ি মেলা ভার।

এছাড়া আছে দক্ষিণ কলকাতার বাঞ্ছারাম। এদের বিখ্যাত মিষ্টি ‘আবার খাবো’। আছে যুগল কিশোর ঘোষের প্রতিষ্ঠিত যুগোলস সুইটস, যুগোলস এর মিষ্টি দই। সঙ্গে আছে ছানার জিলিপি এবং কাঁচাগোল্লা যা খুবই বিখ্যাত। গাঙ্গুরামের রাবড়ি আর মিষ্টি দই এর কথা না বললে প্রতিবেদনটি কোন ভাবেই সম্পূর্ণ হতে পারে না।
 
 তবে সময়ের সাথে সাথে মিষ্টি তৈরির ভাবনায় এসেছে পরিবর্তন। ব্যবহার হচ্ছে আধুনিক যন্ত্র, রোবট। গুণমান বজায় রাখতে কলকাতার প্রথম সাড়ির মিষ্টির দোকান গুলির কারখানায় বসেছে গুণমান পরীক্ষা করার বিঞ্জান সম্মত ব্যবস্থা। এছাড়াও চলছে স্বাদ এবং গন্ধ নিয়ে নিরন্তর গবেষণা। আর এই গবেষণায় নাম যুক্ত হয়েছে ইন্ডিয়ান ইনিশটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি,খড়গপুর) এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম।
 
দক্ষিণ গোলার্ধের মিষ্টির সঙ্গে যোগ হয়েছে উত্তরের স্বাদ। আর প্রাচ্য-প্রাশ্চাত্যের মিলনে কড়াপাক আর নরম পাকের সন্দেশের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চকোলেট এর মিশ্রণ আর এই মিশ্রণ একটা নতুন স্বাদ যোগ করেছে মিষ্টিতে।
 
তবে এই সন্দেশের এই নতুন স্বাদ নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি । ঘটা করে এই বিষয় নিয়ে বিতর্ক সভার আয়োজন করা হয়েছিল কলকাতায়, কিন্তু শেষ কথা বলেছে জনগণ। সাদরে গ্রহণ করেছে চকলেট সন্দেশ। আর এটাই কলকাতার মিষ্টির জগতে নবতম সজ্ঞোজন। যদিও এর আগেই দই এবং সন্দেশের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আম থেকে আনারস নানা রকম ফলের স্বাদ।
 
এবার নজর রাখা যাক মিষ্টির ব্যবসার দিকে। কৌটোতে ভরে কে সি দাসের রসগোল্লা অনেকদিন আগেই বিদেশে পাড়ি দিয়েছিল। বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে চলে যাচ্ছে কলকাতার এই সব দোকান গুলির মিষ্টি। তবে ১৯৬০ সালে সম্ভবত প্রথম সোভিয়েত রাশিয়ার মন্ত্রীসভায় হাজির হয় সন্দেশ। রাশিয়ায় যাকে অভিহিত করা হয়েছিল ‘বাঙালির বিস্ময়’ নামে।
 
 বেঙ্গল সুইটমিট মেকারস অ্যাসোসিয়েশান– এর তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে পশ্চিমবাংলায় এদের ১ লক্ষের আশেপাশে সদস্য  আছে, এবং এদের ব্যবসা যোগ করলে যেটা দাঁড়ায় সেটা প্রায় ৬০ বিলিয়ন রুপি। এছাড়াও গোটা পশ্চিমবঙ্গে আরও অনেক মিষ্টির দোকান আছে যারা এদের সদস্য নয়। সেই ব্যবসাটা হিসাবের মধ্যে আনলে হয়তো অঙ্কটা ১০০ বিলিয়ন রুপিকে ছাড়িয়ে যাবে।
 
মিষ্টি তৈরিতে মূল উপাদান দুধ। পশ্চিমবঙ্গে বেশ কয়েকটি বড় মাপের দুগ্ধ উৎপাদন প্রকল্প আছে। ২০১১-২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গে ৪৬,৭২,০০০ টন দুধ উৎপাদিত হয়েছিল। বড় প্রকল্প গুলি ছাড়াও রাণাঘাট, নবদ্বীপ ইত্যাদি জায়গা থেকে প্রচুর পরিমাণে ছানা প্রতিদিন কলকাতায় আসে। আর সেই ছানা থেকেই তৈরি হয় সুস্বাদু সব মিষ্টি। যুগ যুগ ধরে বাঙালিকে অমৃত স্বাদে মাতোয়ারা রেখেছে।
 
যেকোনো শুভকাজের আগে দুই বাঙলার সংস্কৃতিতে মিষ্টি মুখের প্রচলন আছে। আর হয়তো সেই কারণেই পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগে করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছিলেন,  “ বাংলাদেশের থেকে আমরা ইলিশ নেব আর তার বদলে কলকাতা থেকে দেব মিষ্টি। ” যদিও বাংলাদেশের মানুষ হয়তো তার কাছ থেকে আরও অন্য কিছু চায়। তবে ব্রিটিশ বহুজাতিক চকোলেট কোম্পানি ‘ক্যাডবেরি’ – এর বিজ্ঞাপনের ভাষাটি এই ক্ষেত্রে খুবই ইঙ্গিত পূর্ণ এবং আশা জাগানো ‘শুভ কাজের আগে একটু মিষ্টি মুখ হয়ে যাক...’

বাংলাদেশ সময়: ০২৫৬ ঘণ্টা, ১৯ মার্চ , ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।