ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মৌমাছিরা অনুপস্থিত তাই আমের ঘাটতি পশ্চিমবঙ্গে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৫ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০১৪
মৌমাছিরা অনুপস্থিত তাই  আমের ঘাটতি পশ্চিমবঙ্গে ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কলকাতা: কলকাতার বাজারে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে অমৃত ফলের চাহিদা। আর সেই চাহিদার যোগান দিতে গিয়ে দোকানিরা বার বার ফোন দিচ্ছেন পাইকারের ঘরে।

কিন্তু চাহিদা মত যোগান দিয়ে উঠতে  পারছে না পাইকাররাও। চিরন্তন ‘চাহিদা যোগান’ তত্ত্ব মেনে তাই দাম বাড়ছে আমের।

সবে পার হয়েছে “জামাই ষষ্টি”, অনেক জামাই এখনও শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করছেন। আর সেই সুযোগ ছাড়তে নাছোড় শাশুড়িরা। বাজারের সেরা আম, লিচু সকালে বিকেলে হাজির করছেন জামাইয়ের পাতে। কিন্তু সেই আম কিনতে বাজারে গিয়ে চোখে সরষে ফুল দেখছেন শ্বশুর মশাইরা। একদিকে চড়া দাম অন্য দিকে মনের সাধ মেটাতে গিয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ছেন তারা।

অনেক জামাই আবার কাজের চাপে জামাই ষষ্টির দিন হাজির হতে পারেননি শ্বশুরবাড়িতে। তাই তারা বেছে নিয়েছেন শনিবার অথবা রোববার–এর মত ছুটির দিনগুলোকে। তাই মূল অনুষ্ঠান শেষ হলেও আমের চাহিদা তুঙ্গে।

আর এই তুঙ্গে ওঠা চাহিদা এবং বাড়তে থাকা দাম নিয়ে বাজারগুলিতে দামদামির ফলে বিক্রেতা এবং ক্রেতার মধ্যে আমের মিষ্টতা মিলিয়ে গিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে আমলকীর কষাটে স্বাদ।

কিন্তু কেন এই চাহিদা যোগানের ফারাক? এ বিষয়ে কলকাতার পাইকারি বাজারগুলোতে খোঁজখবর নিয়ে যেটা জানা গেল সেটা হোল, এই বছর আমের ফলন বেশ কিছুটা কম হয়েছে। তাই চাহিদা অনুযায়ী আমের যোগান নেই বাজারে।

পশ্চিমবঙ্গে মূলত মালদা এবং মুর্শিদাবাদ জেলা গোটা রাজ্যে আমের সরবরাহ করে থাকে। বিদেশের বাজারগুলোতেও এই দুই জেলা থেকে আম রপ্তানি হয়। এছাড়াও অন্যান্য আরও কয়েকটি জেলা থেকে আমের অল্প যোগান আসে বাজারে।

দুই জেলার চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানালেন, দুই জেলাতেই এই বছর আমের ফলন কম হয়েছে। এর কারণ হিসেবে তারা জানাচ্ছেন আমের বাগানগুলোতে এই বছর মৌমাছিদের উপস্থিতি ছিল খুব কম।

সাধারণত আমের মুকুল আসলে মৌমাছিরা বাগানে হাজির হয়। আর তাদের পায়ে এবং গায়ে লেগে যাওয়া মুকুলের রেণু ফলন বাড়াতে সাহায্য করে। কিন্তু এই বছর কোন অজানা কারণে বাগানগুলিতে খুব কম মৌমাছির দেখা মিলেছে। চাষিদের ধারণা এর ফলেই ফলন অনেকটাই কম হয়েছে।

পরিবেশবিদদের মতে এটি অবশ্যই আমের ফলন কম হওয়ার একটি কারণ হতে পারে। তবে মৌমাছিরা কেন বাগানগুলিতে কম এসেছে সেই প্রসঙ্গে কোন স্পষ্ট উত্তর না পাওয়া গেলেও সকলেই মোটামুটি ভাবে দায়ী করছেন প্রাকৃতিক দূষণকে।

তবে আরও একটি মতামত উঠে এসেছে। আমের বাগানে পোকা রুখতে যে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়ে তার প্রভাবেও মৌমাছিদের আগমন কম হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। আগামী দিনে রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ না করলে ফলন আরও কমে যেতে পারে বলে মত পরিবেশবিদদের। এই প্রসঙ্গে চাষিদের সচেতন করা দরকার বলে মনে করছেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, জুন ০৭ , ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।