ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

‘ট্র্যাজেডি অব পলাশবাড়ী’ প্রশংসিত কলকাতার দর্শক মহলে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৪ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৫
‘ট্র্যাজেডি অব পলাশবাড়ী’ প্রশংসিত কলকাতার দর্শক মহলে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কলকাতা: কালিন্দী ব্রাত্য জন আয়োজিত ‘ব্রাত্য জন আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসবে’ মঞ্চস্থ হলো বাংলাদেশের প্রাচ্য নাট্যগোষ্ঠীর ‘ট্র্যাজেডি অব পলাশবাড়ী’।

২০০৫ সালের ১১ এপ্রিল গভীর রাতে সাভারের পলাশবাড়িতে ধসে পড়ে ‘স্পেকট্রাম সোয়েটার অ্যান্ড নিটিং ফ্যাক্টরি’।

সে সময় ফ্যাক্টরিতে রাতের শিফটে কাজ করছিলেন শতাধিক কর্মী। সে ঘটনায় নিহত হন প্রায় ৬৪ জন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জানা যায়, কোনো রকম ঝুঁকি মোকাবেলার ব্যবস্থা ছাড়াই ঘটনার তিনবছর আগে একটি জলাভূমির ওপর ফ্যাক্টরিটি তৈরি হয়েছিল। এ ঘটনা নিয়ে গঠিত নাটকের কাহিনী।

বুধবার (১০ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কলকাতার একাডেমি অব ফাইন আর্টস মিলনায়তনে নাটকটি মঞ্চস্থ হলো।

ট্র্যাজেডি পলাশবাড়ি নাটকটিতে একক চরিত্রের নাম ‘তারাভান’। সেদিনের নাইট শিফটে কাজ করতে আসা কর্মীদেরই প্রতিচ্ছবি তিনি। নাটকটি গ্রন্থিত হয় তার স্মৃতিচক্র, স্বপচক্র আর জীবনচক্রের রোমন্থনে। যে কোনো সময় মাথার ওপর ছাদ ভেঙে পড়ে পিষে দেবে তার জীবন, এমনকি তার নড়ার উপায়টুকুও নেই।

এ রকম অবস্থায় সে যেন তার সমগ্র জীবনের পাওয়া না পাওয়ার হিসেব মিলিয়ে নেয়। সেই হিসেবে সে প্রতিনিধিত্ব করে তারই মতো শত শত তারাভানের। যাদের অনেকেই এভাবে মরে যায়, আবার কেউ কেউ বেঁচে থাকে কারখানার মেশিনের মতো নির্বাক আজ্ঞাবহ দাস হয়ে।

তারাভানের স্মৃতিচক্রের সমান্তরালে একই ঘটনাকে দেখা যায়, একজন ভিনদেশি আউটসোর্সিং পারসন মিস্টার ওয়েস্টের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। এ আকস্মিক ঘটনায় তার প্রতিক্রিয়া বিশ্বমঞ্চে যেসব চিত্র তুলে ধরে সেগুলো তারাভানরা কখনও জানে না, কিংবা জানার সুযোগ পায় না।

‘তারাভান’র চরিত্রে পারভিন পারু, স্বামীর চরিত্রে মহম্মদ রফিক, ওসমান চরিত্রে আহমেদ নোবেল তাদের অসাধারণ অভিনয় দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করেছেন। এছাড়া নজর কেড়েছেন সাহারিয়ার, রানা জুয়েল, গোপি দেবনাথ, মোহম্মদ ফারাদ আহমেদ এবং ফুয়াদ বিন ইদ্রিস।

পরিচালনায় যথেষ্ট মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন আজাদ আবুল কালাম। সেট নির্মাণে আবুল হাসনাত ভুইয়া রিপন’র কাজ অসাধারণ। নাটকে মালিকের চরিত্রে মুখোশের ব্যবহার নাটকটিকে অন্য মাত্রা দিয়েছে।

সব থেকে অভিনব ছিল এই নাটকের সমাপ্তিটি। ‘অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস’র রাস্তায় ছড়িয়ে দেওয়া হয় গোটা নাটকের সেট। ঠিক যেন পলাশবাড়ীর ভেঙে পড়া সেই কারখানার ধ্বংসস্তূপ। দর্শকরাও  সেই ধ্বংসস্তূপ পেড়িয়ে বেড়িয়ে আসেন। তখন সবার চোখেই ছিল জল।

এ নাটক কলকাতার নাট্য মোদীদের মধ্যে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে। কলকাতার দর্শকরা নাটকের মান সম্পর্কে উচ্ছ্বাসিত হয়ে আবারও এ ধরনের নাটক দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে এ নাট্য উৎসবে যোগ দিয়েছিল কলকাতা, দিল্লির নাটকদের দলসহ ফ্রান্স, শ্রীলঙ্কা, আফ্রিকা ও পাকিস্তানের নাট্যদল।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৫
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।