কলকাতা: কলকাতায় এসে মঙ্গলবার (৭ জুলাই) বিজেপি কর্মীদের এক সভায় ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এগুনোর পরামর্শ দিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।
হাওড়ায় ওই সভায় দলের মধ্যে কোন রকম উপদলীয় মনোভাবকে প্রাধান্য না দেবার আবেদন করেন তিনি।
লোকসভা নির্বাচনের ব্যাপারে কথা বললেও ২০১৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের বিষয়ে তিনি মুখ খোলেননি। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি এবং শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় সংঘাত হলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত সরকার সম্পর্কে কোন কথা বলেননি বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি।
এই বক্তব্যের পরই পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রথম প্রশ্ন কেন ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের কথা না বলে সরাসরি ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের কথা বললেন বিজেপি সভাপতি?
এর একটি কারণ সম্ভবত পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি’র আশানুরূপ সংগঠন গড়ে না ওঠা অন্যদিকে বিজেপি শাসিত গুজরাট এবং রাজস্থানে বিজেপি’র আগের থেকে নড়বরে অবস্থা।
বহু চেষ্টা করেও লোকসভা নির্বাচনে মোদী হাওয়া পশ্চিমবঙ্গে ধরে রাখতে পারেনি বিজেপি। অন্য দিকে গুজরাটে নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী করার জন্যে উজাড় করে যে ভোট গুজরাটবাসীরা দিয়েছিল সেই আবেগ আগামী লোকসভা নির্বাচনে কাজ করবে না ,সে কথা বিজেপি সম্ভবত অনুভব করতে পেরেছে।
আবার বিজেপি শাসিত রাজ্য রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে এবং আইপিএল কর্তা ললিত মোদিকে নিয়ে নানা নিয়ম বহির্ভূত অর্থনৈতিক লেনদেনের প্রশ্ন সামনে আসছে। এর ফলে রাজস্তানেও ভোট কমতে পারে বিজেপি’র। তাই আগে থেকেই সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেবার পরিকল্পনার অংশ হতে পারে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা আগাম কর্মীদের জানিয়ে দেওয়া।
এছাড়া মাত্র আট-দশ মাস পরের বিধানসভা ভোটে ভালো ফল করা সম্ভব নয় বুঝতে পেরেই হয়তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ভবিষ্যতের জোট সমীকরণ মাথায় রেখেই বিধানসভা নির্বাচনের কথা মুখে না বলে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা বললেন বিজেপি সভাপতি। এর ফলে যেমন একদিকে জোট সম্ভাবনা অক্ষত থাকলো অন্যদিকে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য দলকেও তৈরি থাকার পরামর্শ দেওয়া গেল।
অমিত শাহের এই বক্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৫
আরআই