ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ঈদ সামনে রেখে কলকাতায় ফলের দামে হাত পোড়ার উপক্রম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০১৬
ঈদ সামনে রেখে কলকাতায় ফলের দামে হাত পোড়ার উপক্রম ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কলকাতা: ঈদের আগে কলকাতার ফলের বাজারে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে গড়ে প্রায় ৪০ শতাংশরও বেশি। কলকাতার বিভিন্ন ফলের বাজার ঘুরে যে দাম পাওয়া গেলো, তার দিকে নজর রাখলে মধ্যবিত্তের নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় হবে।

রমজান মাসের শুরু থেকেই ফলের বাজারে দাম ধীরে-ধীরে বাড়তে শুরু করে। ঈদ যত এগিয়ে আসছে ফলের বাজারে দাম ক্রমশই বাড়ছে।

শুক্রবার (০১ জুলাই) কলকাতার বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা গেল ফলের যোগান যথেষ্ট থাকলেও দাম অন্যান্য সময়ের থেকে অনেকটাই বেশি।

কলকাতার ফল ব্যবসায়ীরা এর কারণ হিসেরে ফলের বেশি চাহিদার কথা বলছেন। অন্যদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ অন্যান্য বছরের থেকে দাম এই বছরে কিছুটা বেশি। এ কারণ রমজান মাসে তাদের যথেষ্ট অসুবিধা হচ্ছে।

শুধু কাঁচা ফলের দামই বেড়েছে এমনটা নয়, বেড়েছে শুকনো ফলের দাম। যেমন- কাজু, কিসমিস, আখরোট ও পেস্তা। কলকাতার বাজারে লিচু বিক্রি হচ্ছে ৪শ’ ৫০ রুপি কিলো। যদিও এগুলি ভিন রাজ্যের। আঁশফল (কাঠলিচু) বিক্রি হচ্ছে ৩শ’ রুপি প্রতিকেজি। হিমসাগর, চৌসা এবং ল্যাংড়া আম কিলো প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ১শ’ ২০ রুপির মধ্যে। অ্যালফানসো আম ৯০ রুপি করে প্রতিটি আম বিক্রি হচ্ছে কলকাতার শপিং মলগুলোতে। মুসাম্বি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১শ’ রুপির মধ্যে।
কলকাতার নিউ মার্কেটে ইফতারের বাজার করতে এসে দাম বৃদ্ধির একটা চিত্র তুলে ধরলেন ক্রেতা জামির হোসেন। তিনি বলেন, গত এক মাস আগে পাকা পেঁপে বিক্রি হচ্ছিল ৪০ থেকে ৫০ রুপি কিলো। বর্তমানে তার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ রুপি প্রতি কিলো।

কলকাতার বাজারগুলিতে বর্তমানে আনার বিক্রি হচ্ছে প্রতি কিলো ১শ’ ৬০ রুপি, এক মাসে আগেও যার দাম ছিল ১শ’ ২০ রুপি কিলো। তরমুজ বর্তমানে ৭০ রুপি কিলো বিক্রি হলেও দিন বিশেক আগে পর্যন্ত ৪০ রুপি কিলো বিক্রি করেছেন বলে জানালেন নিউ মার্কেট এলাকার ফল ব্যবসায়ীরা।

দেশি ফলের দাম বেড়েছে শুধু তাই নয়, বিদেশ থেকে যে ফল আমদানি করা হয় সেগুলির দামও বেড়েছে। গত একমাসে প্রতিটি কিউই ফলের দাম ২০ রুপি থেকে বেড়ে ৩০ রুপি হয়েছে। চেরি ফলের দাম ৩শ’ রুপি কিলো থেকে বেড়ে ৪শ’ ৫০ রুপি কিলো প্রতি বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে এসে জামের দাম কিলো প্রতি ২শ’ ৬০ রুপি শুনে আঁতকে উঠলেন কলকাতার এক বরিষ্ঠ নাগরিক রাজু মণ্ডল। তার দাবি বছর পনের আগেও জাম কিনে খাবার কথা ভাবাই যেত না। পাড়ার গাছে নীচে পরে থাকতো অজস্র জাম। কিন্তু নগরায়ন আর ফাঁকা জমিতে বহুতল ভবনের দাপটে  জাম, জামরুল, আঁশফল (কাঠলিচু) গাছগুলি হারিয়ে গেছে শহর থেকে।

এ দিকে কাজু , কিসমিসে দাম করতে গিয়ে দেখা গেল সেখানেও হাত পোড়ার উপক্রম। সাধারণ কাজু যেগুলি ৪শ’ রুপি থেকে শুরু করে ১ হাজার ৫শ’ রুপি কিলো বিক্রি হয়ে থাকে, সেগুলি শুক্রবার ৬শ’ থেকে ২ হাজার ৫শ’ রুপি কিলো বিক্রি হচ্ছে।

ঈদের আগে মশলার চাহিদা বাড়ে। কলকাতার মশলার দোকানগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মতামত জানা গেল, মশলার দাম খুব একটা বাড়েনি। এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৮শ’ থেকে ১ হাজার ২শ’ রুপি কিলো এবং দারচিনি ৬শ’ রুপি কিলো দরে পাওয়া যাচ্ছে।

মশলার বাজার খুব চড়া না হলেও ফলের বাজার যথেষ্ট চড়া। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ডাল এবং সবজির দাম। তাই উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠার মুহূর্তে চাপ পড়ছে ভোক্তাদের পকেটে। যদিও এ কারণে থেমে নেই উৎসবের আমেজ। তাই অর্থনীতির তত্ত্বকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দামের সমানুপাতিক হারে বাজারে ভিড় বাড়ছে প্রতিটি মুহূর্তে। আর সেই ভরসাতেই আছেন ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, ০১ জুলাই, ২০১৬
ভিএস/জিসিপি/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।