ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ত্রিপুরার ‘অনালোকিত’ এক পর্যটনস্থল ‘ছবিমুড়া’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০১৬
ত্রিপুরার ‘অনালোকিত’ এক পর্যটনস্থল ‘ছবিমুড়া’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

আগরতলা: ত্রিপুরা রাজ্যের গোমতী জেলার অন্তর্গত অমরপুর মহকুমার রাজখাং এডিসি ভিলেজে অবস্থিত এক পর্যটনস্থল ‘ছবিমুড়া’।

গোমতী নদীর খাড়া তীরে বেলে পাথরের গায়ে খোদাই করা রয়েছে বিভিন্ন দেব-দেবীর প্রতীমা।

ত্রিপুরা রাজ্যের অন্যান্য অনেক ঐতিহাসিক স্থানের মতো এ ছবিমুড়ার প্রকৃত ইতিহাস অনেকেরই অজানা।

আগরতলা থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার পর অমরপুর শহর। এ শহর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার পরই রাজখাং এলাকার গোমতী নদীতে  ‘ছবিমুড়া’ নৌকা ঘাট। সেখান থেকে নৌকায় যেতে হয় ছবিমুড়া এলাকায়। নদীর দু’দিকে ঘন জঙ্গলের ভেতর দিয়ে কিছুক্ষণ নৌকায় ভেসে গেলে নদীর গায়ে দেখা মিলবে প্রতীমার।      

কথিত ‍আছে, প্রাচীনকাল থেকে জমাতিয়া উপজাতি সম্প্রদায়ের বসবাস এখানে। জমাতিয়া লোককথা অনুসারে ছবিমুড়া হলো রুদ্রভৈরবী দেবীর স্থান। রাজা চিচিংফার প্রপিতামহ’র রাজত্বকালে তৈরি হয় দেবতামুড়া পাহাড়ের পাশ দিয়ে বয়ে চলা গোমতী নদীর তীরের গায়ে খোদাই করা শিল্পকর্ম।

এখানে এক দেবীর প্রতীমা প্রায় ২০ ফুট উ‍ঁচু, যা উপজাতিদের কাছে চাকরাখমা দেবী বলে পরিচিত। এই প্রতীমার মোট ১০টি হাত, তাই দেখতে কিছুটা দুর্গাদেবীর মতো। মাথায় রয়েছে অসংখ্য সাপ। দেবীর পায়ের নিচে আরেকটি প্রতীমা আছে। গবেষকরা একে দেবাদীদেব শিব বলে মনে করছেন। প্রতীমার নিচের স্তরে রয়েছে খোদাই করা সাপের ছবি।  

পাশেই রয়েছে বিশাল আকারের আরও একটি খোদাই করা তিন স্তরের প্রতীমা। এগুলো হলো ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর এবং সবচেয়ে নিচের স্তরে রয়েছে সাপের ছবি। পাশেই রয়েছে অসংখ্য ছোট ছোট প্রতীমা। এগুলো কিছুটা টেরাকোটা কাজের মতো।

তবে এ প্রতীমাগুলোর সঙ্গে ত্রিপুরার পিলাক ও ঊনকোটির প্রতীমার কোনো মিল নেই। এ ধরনের প্রতীমা দক্ষিণ ভারতে দেখা যায়। তবে নদীর পাড়ে নয়, দেখা যায় মন্দিরের দেয়ালে। দক্ষিণ ভারতীয় শৈলীর প্রতীমা ত্রিপুরার গহীণ অরণ্যে নদীর গায়ে এলো কীভাবে? তা এক রহস্যের জন্ম দেয়।  

নদীর আরও একটু দূরে একটি গুহা। জমাতিয়া লোকগাঁথা অনুসারে, এ গুহায় রাজা চিচিংফা তার সব সম্পদ রেখে গেছেন। এগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে বিশাল আকৃতির একটি সাপ। সাপের ভয়ে খুব কম মানুষই গুহায় প্রবেশ করেন।

আবার কথিত আছে, গুহার ভেতর সূর্যের আলো প্রবেশ করে না। ভেতরে অন্ধকার। তাই বিষধর সাপও থাকতে পারে।

কালের স্রোতে ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রতীমাগুলোর অনেকটা অংশই ভেঙে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৬
এসএন/আরআইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।