ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

কলকাতার সংগ্রহশালা

নজরুলের ব্যবহার করা সামগ্রী ছাড়তে নারাজ চুরুলিয়া

রক্তিম দাশ. সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১২
নজরুলের ব্যবহার করা সামগ্রী ছাড়তে নারাজ চুরুলিয়া

কবির বাসস্থান চুরুলিয়া থেকে: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, কলকাতায় ইন্দিরা ভবনের নাম পরিবর্তন করে নজরুল ভবন নামকরণ করে সেখানে একটি সংগ্রহশালা গড়ে তোলাসহ নজরুল একাডেমী করা হবে। এর জন্য কবির জন্মভিটা চুরুলিয়াসহ বিভিন্ন স্থান থেকে তার ব্যবহ্রত সামগ্রী, পদক এনে সংগ্রহশালাটি গড়ে তোলা হবে।

আর এখানেই আপত্তি জানিয়েছে চুরুলিয়া।

১৯৪২ সালের জুলাই কবি নীরব হওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামের কয়েকজন যুবক মিলে গড়ে তোলেন ‘চুরুলিয়া নজরুল একাডেমী ও সংগ্রহশালা’।

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ি, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কবির জন্ম শতবর্ষে ১৯৯৯ সালে ঘুরে যান একাডেমী ও সংগ্রহশালা। সে সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীও।

বিরোধী দলনেত্রী থাকাকালীন মমতা বলতেন, নজরুলকে নিয়ে কিছুই করেনি বামফ্রন্ট সরকার। ক্ষমতায় আসার ছ’মাস পর তিনি ঘোষণা দিলেন নজরুল একাদেমী ও সংগ্রহশালার।

চুরুরিয়া নজরুল একডেমীতে যে সংগ্রহশালাটি রয়েছে, সেখানে কবি ও কবির স্ত্রী প্রমিলা দেবীর ব্যবহ্রত পোষাক, পালঙ্ক, দুটি গ্রামোফোন প্লেয়ার, কিছু রের্কড ও কবির ১০টি পাণ্ডুলিপি, ১৯৪৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া জগত্তারিণী পদক আর ১৯৬০ সালে ভারত সরকারের দেওয়া পদ্মভূষণ সম্মাননা। আর এখানেই রয়েছে কবির স্ত্রী প্রমীলা দেবীর সমাধি।

বছরের প্রতিটি সময়ে কবির অনুগামীসহ অসংখ্য সাধারণ মানুষের পদচারণায় কম্পিত থাকে চুরুলিয়া। একাডেমীর উদ্যোগে প্রতি বছরই কবির জন্মদিনে অনুষ্ঠিত হয় নজরুল মেলা। আসেন অনেক ভিআইপি। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই একাডেমীর কোনো সরকারি স্বীকৃতি মেলেনি।

‘সাবেক বামফ্রন্ট সরকার মেলার জন্য প্রতিবছর ১ লাখ রুপি অনুদান দেওয়া শুরু করে আশির দশক থেকে। এখন আমরা কখনো ৩০, আবার কখনো ৫০ হাজার রুপি পাই। এছাড়া কোনো সরকারি সাহায্য আমরা পাই না। ’ বাংলানিউজকে বলেন নজরুল একাডেমীর সভাপতি নকুল মাহাত।

ক্ষোভের সঙ্গে বললেন, ‘বহু কষ্টে আমরা কবির ব্যবহ্রত সামগ্রীগুলো সংগ্রহ করেছি। কোনো সাহায্য সরকারিভাবে পাইনি। এখন হঠাৎ করে এই অমুল্য সম্পদগুলো কলকাতায় নিয়ে যাওয়া চলবে না। এসব নিয়ে গেলে যারা চুরুলিয়ায় আসেন তারা কী দেখবেন?

এই একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কাজী খায়রুল আলাম সিদ্দিকি বলেন, ‘বহু কষ্টে আমরা এটা গড়ে ছিলাম, যা এখন এলাকাবাসীর গর্বের। স্বীকৃতি পেয়েছে আন্তর্জাতিকভাবে। রাজ্য সরকার কলকাতায় গবেষণাকেন্দ্র করছেন, খুব ভালো কাজ। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এর জন্য যেন চুরুলিয়া গুরুত্ব না হারায়। ’

বাংলাদেশ সময: ১২৫৭ ঘন্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।