ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২১
কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত

কলকাতা: বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করা হলো কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে। ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধু স্মরণকালের বৃহত্তম জনসভায় ১০ লাখেরও অধিক বাঙালির উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন।

সেদিনের স্থানেই সে ঐতিহাসিক ক্ষণটি স্মরণ করা হলো। ওই দিন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য ভূমিকার জন্য যারা মৈত্রী সম্মাননা পেয়েছিলেন, তাদের আবার সংবর্ধনা জানানো হলো একই মাঠে। মৈত্রী সম্মাননা প্রাপ্ত ১২ জন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

যাদের হাতে স্মারক তুলে দেওয়া হলো, তারা হলেনজাদুকর প্রদীপ চন্দ্র সরকার, সাংবাদিক মানস ঘোষ, সুখরঞ্জন দাসগুপ্ত, পঙ্কজ সাহা, দিলীপ চক্রবর্তী, মানবাধিকার কর্মী উৎপলা মিশ্রা, প্রণবরঞ্জন রায়, ভাষাবিদ পবিত্র সরকার, অধ্যাপক জিষ্ণু দে এবং তার স্ত্রী মীরা দে।

এছাড়া, অনুষ্ঠানে আরও ২২ জনের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পুরস্কার দেওয়া হয় কালজয়ী কবি গোবিন্দ হালদার, কালজয়ী গায়ক মান্না দে, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ও সাবেক পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ রায়, কংগ্রেস নেতা বিজয় সিং নাহার, ঔপন্যাসিক মৈত্রী দেবী, সমাজসেবী লেডি রানু মুখার্জি, সমাজসেবী ইলা মিত্র, সাংবাদিক পান্নালাল দাশগুপ্ত, বাম নেতা রনেন মিত্র, আকাশবাণী ঘোষক দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিক দিলীপ চক্রবর্তী, সাংবাদিক উপেন তরফদার, গায়ক অংশুমান রায়, সাংবাদিক দিলীপ মুখার্জি, লোকসভা ও রাজ্যসভার সাবেক সাংসদ ও সমাজসেবী ফুলরেনু গুহ, সাংবাদিক বাসব সরকার নিবেদিতা নাগ ও নেপাল নাগের মতো মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা প্রাপকদের।

ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের বঙ্গবন্ধুর ভাষণের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান। আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাইমুন সারোয়ার কমলসহ অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের তৌফিক হাসানের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ড. মো. মোফাকখারুল ইকবাল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এ ব্রিগেডের মঞ্চে যারা মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা পেয়েছিলেন, তাদের আবার সম্মান দিতে পেরে গর্বিত বোধ করছি। সেদিনের ঐতিহাসিক ব্রিগেডে গোটা পশ্চিমবঙ্গ মিলিত হয়েছিল।

তিনি বলেন, আমার তথ্য মতে সেদিন ব্রিগেডের ঐতিহাসিক জন সমাবেশে ১৫ লাখ মানুষ ছিলেন। আমি মনে করি, সেদিনের বিগ্রেডে মুজিবের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মিলনের মধ্য দিয়ে আমাদের বিজয় উৎসব সম্পন্ন হয়েছিল।

অতিথি সুব্রত মুখার্জি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু পশ্চিমবঙ্গের কাছের মানুষ ছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর কলকাতার ছাত্রাবস্থা থেকে বর্ণময় জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন। ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১টায় মধ্যে ব্রিগেডে অসংখ্য মানুষ ভিড় জমিয়েছিল। ৩টার সময় রাজভবন থেক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ইন্দিরা গান্ধী এ ব্রিগেডে আসেন। আমি তখন মঞ্চের নীচে ছিলাম। এটা ব্রিগেডে আমার দেখা সর্বকালের সেরা জনসমাবেশ।

বিশেষ অতিথি মোহম্মদ ইমরান বলেন, ‘আজকের দিনটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব সবাই জানেন। আজ আমরা দিনটিকে স্মরণ করে একটি প্রতীকী স্মরণসভা করছি। এর কারণ দুই বাংলার সাহিত্য সংস্কৃতির আদান প্রদান। ’

গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের আমূল পরিবর্তন এসময় পশ্চিমবঙ্গবাসীর কাছে তুলে ধরেন তিনি। তার বক্তব্যে পদ্মা সেতুর বিষয়টি উঠে আসে।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাইমুন সারোয়ার কমল বলেছেন, ‘যে লক্ষাধিক মানুষ সেদিন বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনেছিলেন, তার প্রতীকী স্মরণসভায় আমি উপস্থিত। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক বক্তৃতা অনেক আছে, কিন্তু ব্রিগেডে দাঁড়িয়ে তিনি যে ঐতিহাসিক বক্তব্য রেখেছিলেন তা বাংলাদেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মানুষেরও গর্বের বিষয়।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২১
ভিএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।