কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক ভবন নবান্ন অভিযানে পুলিশের বেধড়ক লাঠির আঘাতে আহত হয়ে সোমবার (১৫ ফেব্রয়ারি) মৃত্যু হল এক বাম সমর্থিত যুবকের। মৃতের নাম মইদুল ইসলাম মিঁদ্দা।
১১ ফেব্রুয়ারি বামেদের নবান্ন অভিযানে কলকাতায় আসে সে। সেখানেই একাধিক পুলিশের বারেবারে লাঠির আঘাতে আহত হয়। এমনকী রক্ত ঝরছে দেখেও পুলিশ লাঠিচার্জ থামায়নি বলে বামেদের অভিযোগ।
অবশেষে সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।
হাসপাতালের পক্ষ থেকে বলা হয় একাধিক লাঠির আঘাতে শারীরিকভাবে বিধ্বস্ত ছিলেন মইদুল। ধীরে ধীরে অবস্থার অবনতি হয়ে মৃত্যু হয়।
পেশায় চিকিৎসক তথা নেতা ফুয়াদ হালিম জানিয়েছেন, একাধিক লাঠির আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিডনি, পানি জমে ফুসফুসেও। অতিরিক্ত মারধর ছাড়া মৃত্যুর আর অন্য কোনো কারণ নেই।
নবান্ন অভিযানে পুলিশের লাঠিচার্জ প্রসঙ্গে কলঙ্কিত জালিয়ানওয়ালাবাগের সাথে তুলনা করেছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান তথা পলিটব্যুরো সদস্য বিমান বসু।
বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, এটা মৃত্যু নয়, সরকারি পুলিশ গুণ্ডামির জন্য এই খুন। কি দোষ ছিল মইদুলের? বাঁকুড়া থেকে সরকারের কাছে চাকরি চাইতে এসে কলকাতার রাস্তায় পুলিশ প্রশাসনের হাতে খুন হল।
নির্বাচনের আগে প্রথম মৃত্যু। ফলে এই ঘটনার তদন্ত করবে পুলিশ, সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) নবান্ন থেকে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে মইদুলের মৃত্যুর ঘটনায় তিনিও দুঃখ পেয়েছেন বলে জানান।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, যেকোনো মৃত্যুই অতি বেদনাদায়ক ঘটনা। আমারও দুঃখ হয়েছে। প্রয়োজনে মৃত বামকর্মী মইদুলের পরিবারের কোনো সদস্যকে চাকরি ও আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে।
শিক্ষা, শিল্প, চাকরির দাবিতে ১০টি বাম ছাত্র-যুব সংগঠনের নবান্ন অভিযান ঘিরে বৃহস্পতিবার ধুন্ধুমার হয়ে উঠে কলকাতা করপোরেশনের সামনে। পুলিশ এবং মিছিলকারীদের খণ্ডযুদ্ধে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ডোরিনা ক্রসিং এলাকা। ওইদিন বইপাড়া কলেজ স্ট্রিট থেকে মিছিল ডোরিনা ক্রসিংয়ে আসতেই পুলিশ বাধা দেয়।
তারই জেরে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় মিছিলকারীদের। এরপর বেধড়ক লাঠিচার্জ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের হঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। লাঠির ঘায়ে আহত হয়েছিলেন বেশ কিছু বামকর্মী। তারই মধ্যে মৃত্যু হলো মইদুলের।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২১
ভিএস/এইচএডি/