ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

অনুদান নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য বিরোধ চরমে

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১২

কলকাতা : বাকযুদ্ধের পর এবার শুরু হয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য পত্রযুদ্ধ। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে রাজ্যকে একটি টাকাও সাহায্য দেওয়া হয়নি বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ করেছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।



সেই অভিযোগের জবাবে এবার পশ্চিমবঙ্গকে কেন্দ্রীয় অনুদানের বিস্তারিত খতিয়ান দিলেন কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিংভি। কেন্দ্রীয় অনুদানের একটি বিস্তারিত খতিয়ান রাজ্য সরকারকে দিয়েছেন সিংভি।

এই বিষয়ে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে চিঠি দিয়ে কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিংভি অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্রীয় সাহায্যকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে খাটো করে দেখাচ্ছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী, এর পিছনে রয়েছে রাজনৈতিক কারণ।
 
তার দেওয়া খতিয়ান অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় যোজনা কমিশনের কাছ থেকে রাজ্য পেয়েছে ছয় হাজার ৭৫৪ কোটি রুপি। গত বছরের ২০ মে থেকে চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যকে মোট ২৩ হাজার ৬৯৫ কোটি রুপি দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া বিআরজিএফ স্কিমের এক হাজার ৪৬ কোটি রুপি ইতিমধ্যেই রাজ্যের কোষাগারে পৌঁছেছে বলে জানানো হয়েছে খতিয়ানে।
বিআরজিএফ স্কিমে রাজ্যের জন্য আরও আট হাজার ৭শ’ কোটি রুপি বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। সেই টাকা রাজ্য এখনও হাতে পায়নি বলেও জানান অভিষেক মনু সিংভি।
 
এখানেই শেষ নয়। চিঠিতে সিংভির দাবি, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক খাতে পশ্চিমবঙ্গের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। সেসব অর্থ রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই হাতে পেয়েছে।

আর্থিক বরাদ্দ, অনুদান এইসব ইস্যুতে অভিষেক মনু সিংভির কোনো কিছু বলা উচিতই নয়, একথা বলে এর আগেই তাকে কটাক্ষ করেছিলেন অমিত মিত্র।

অর্থমন্ত্রীর এই কটাক্ষের জবাবে সিংভির পাল্টা কটাক্ষ করে জানান, তিনি আইনজীবী বলে অর্থনীতির বিষয়ে কিছু বোঝেন না, এমনটা ভাবা ভুল হবে। আইনজীবী বলে যে সত্যিটা বদলে যাবে, এমনটাও নয়। না জেনে কটাক্ষ করা বা আসল তথ্য জেনেও তা গোপন করা কী অপরাধ নয়? এই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।

এদিকে, দু’পক্ষের এই সংঘাতের মাঝেই বুধবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। চিঠিতে কৃষিঋণ মোকুফের আর্জি জানানোর পাশাপাশি সারের ভর্তুকি অব্যাহত রাখতেও কেন্দ্রকে আবেদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

একের পর এক কৃষকের আত্মহত্যা, ফসল বিক্রি না হওয়ায় কৃষকদের বিক্ষোভ নিয়ে এ মুহুর্তে বেশ চাপে রাজ্য সরকার। এই অবস্থায় চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কৃষিঋণ মোকুফের দাবি যথেষ্ট তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
 
ইউপিএ-২ সরকারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিক হওয়া সত্বেও খুচরা ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ, পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, তিস্তাচুক্তি, ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে কেন্দ্রের বিরোধিতা করেছে তৃণমূল। তার সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগ।

সব মিলিয়ে দুই শরিকের সম্পর্কে সাম্প্রতিককালে ফাটল চওড়া হয়েছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। এই প্রেক্ষাপটে আর্থিক অনুদান নিয়ে প্রথমে অমিত-সিংভি বাকযুদ্ধ। তারপর এবার মনু সিংভির পত্র-বোমা রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

বাংলাদেশ সময় : ১৪১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯,

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।