ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ফের ২টি গণধর্ষণ পশ্চিমবঙ্গে, গণপ্রহারে নিহত ২

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১২

কলকাতা: পার্কস্ট্রিট, বরাহনগরের পর এবার ধষর্ণকাণ্ডে যুক্ত হলো বর্ধমানের কেতুগ্রাম ও পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার দুগধা গ্রামে। দ্বিতীয় ঘটনায় গণপ্রহারে নিহত হয়েছে ২ জন।



শনিবার সন্ধ্যায় আহমেদপুর-কাটোয়া লাইনে কেতুগ্রামের কাছে চলন্ত ট্রেনে ডাকাতি চালায় একদল সশস্ত্র দুষ্কৃতকারী। ডাকাতির পর এক নারী যাত্রীকে নামিয়ে দুষ্কৃতরা গণধর্ষণ চালায় বলে অভিযোগ। পরে রেল পুলিশ ওই মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

ঘটনার সূত্রপাত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ। জানা গিয়েছে, কাটোয়াগামী আমোদপুর লোকালে ৮ জনের একটি দল লুটপাট চালায়। ন্যারো গেজ লাইনে ঘন্টায় ১৫ কিমি বেগে চলা চার কামরার বিশেষ এই ট্রেনটি এলাকায় ‘ছোট রেল’ বলেই পরিচিত। পাচুন্দি স্টেশন ছাড়িয়ে গোমাই গ্রামের কাছে ঘটনাটি ঘটে।

তারা রেলের চালক ও গার্ডকে আটকে রেখে অবাধে লুটপাট চালায়। ধর্ষিতা ওই নারী গহনা দিতে অস্বীকার করার ‘অপরাধে’ তার মেয়ের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তাকে নামিয়ে নিয়ে রেল লাইনের পাশে গণধর্ষণ করে দুষ্কৃতিরা।

এদিকে ট্রেনটি কাটোয়া স্টেশনে ঢোকার পরে প্রথমে রেলপুলিশের কাছে ডাকাতির অভিযোগ দায়ের করে যাত্রীরা। পরে একজন যাত্রী রেল পুলিশকে ধর্ষণের বিষয়টি জানান।
 
রেল পুলিশের তরফ থেকে পরে ওই নারীটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। রাতেই তাকে কাটোয়া হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। ঘটনার পরই কাটোয়া এসডিপিও ধ্রুবজ্যোতি দাস, আইস(কেতুগ্রাম)রঞ্জন সিংহ এবং রেলপুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা বিশাল বাহিনী নিয়ে ওই গ্রামে যান।
 
এদিকে রোববার রেলপুলিশের ডিজি দিলীপ মিত্র ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান। দোষীদের চিহ্নিত করতে প্রয়োজনীয় সবরকমের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। যদিও ঘটনার জড়িত এখনও কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার দুগধা গ্রামে। এক নারীকে উত্যক্ত করার অভিযোগে ক্ষিপ্ত জনতা দুই যুবককে পিটিয়ে মেরে ফেলল। নিহত দুই যুবকের নাম শিবু জানা ও স্নেহময় ধর। অপর এক অভিযুক্ত পালিয়ে গিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাওয়ার পথে স্থানীয় ঝর্না সাউ নামের এক নারীকে তিন যুবক ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। এই সময় সে চিৎকার করলে গ্রামবাসীরা তাড়া করে ২ যুবককে ধরে ফেলে। শুর হয় গণপিটুনি। ঘটনাস্থলেই ওই ২ যুবক মারা যায়। রাত পর্যন্ত লাশগুলি পড়ে থাকে বলে খবর।

রোববার সকালে পুলিশ গিয়ে লাশ দুটি নিয়ে আসে। যুবকরা স্থানীয় বাসীন্দা বলে জানা গিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আগেও থানায় প্রচুর অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে ওই ঘটনার পর ওই নারীটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে এগরা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এলাকায় প্রবল উত্তেজনা রয়েছে।

এদিকে, কলকাতার বরানগর গণধর্ষণ কান্ডে জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত ব্যক্তির নাম দিলীপ। তাকে বরানগর থানায় এদিন সকাল থেকেই দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে তদন্তের স্বার্থে পুলিশ এখনই এ ব্যাপারে মুখ খুলতে চাইছে না।
 
জানা গিয়েছে, মৃত্যুর আগে ধর্ষিতা ওই মহিলা নিজের ছেলের কাছে দিলীপের নাম জানিয়েছিলেন। সেই সূত্র ধরেই এদিন ভোরে দিলীপকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে বরানগরের ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট লাগোয়া একটি রাস্তা থেকে জোর করে এক মহিলাকে গাড়িতে তুলে ধর্ষণ করে দুই দুষ্কৃতি। ধষর্ণের পর ওই মহিলাকে উত্তরপাড়ার কাছে ফেলে দেয় দুষ্কৃতিরা।
 
শুক্রবার রাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে হাসপাতালে মারা যান ওই মহিলা। জানা গিয়েছে, মৃত্যুর আগে নিজের জবানবন্দীতে ছেলেকে পাশবিক অত্যাচারের কথা জানান। তখন দিলীপের নাম উঠে আসে। ঘটনার পর থেকেই দিলীপ ফেরার ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ০৩২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।