ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

পি কে হালদারকে নেওয়া হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের আদালতে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৭ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২২
পি কে হালদারকে নেওয়া হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের আদালতে

কলকাতা: ভারতে গ্রেফতার বাংলাদেশের বহুল আলোচিত অর্থ পাচারকারী প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার ও তার সহযোগীদের মঙ্গলবার (১৭ মে) পশ্চিমবঙ্গের আদালতে তোলা হচ্ছে। তারা দেশটির কেন্দ্রীয় আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) রিমান্ডে ছিল।

 

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে অভিযুক্তদের স্পেশাল সিবিআই কোর্টে হাজিরার জন্য তোলার কথা রয়েছে, যেটি কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্টের মধ্যে।  

এরইমধ্যে আদালতের উদ্দেশে তাদের নিয়ে রওনা হয়েছে ইডি।  

এর আগে সোমবার (১৬ মে) সকালে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। এরপর আবার নিয়ে যাওয়া হয় ইডির পশ্চিমবঙ্গ দফতরে।

তখন পি কে হালদারের কাছে বাংলানিউজ জানতে চায়, তিনি নির্দোষ কি না। তাকে ফাঁসানো হচ্ছে কি না? এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি তিনি।  

তবে তার ছোটভাই প্রাণেশ হালদার বলেন, আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। আমাকে বাংলাদেশ থেকে ফাঁসানো হচ্ছে।  

পাশাপাশি প্রাণেশ বলেন, আমার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের কোনো ঘটনা নেই। আমার সঙ্গে চক্রান্ত করা হচ্ছে।

এরপরই তাদের লিফটে করে ইডি ভবনের ৬তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। তবে এদিন পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের চেহারা ছিল স্বাভাবিক।  

এদিকে পি কে হালদারের ঘটনায় চমকের পর চমক সামনে আসছে। ইডি সূত্রে রোববার (১৫ মে) জানা গিয়েছিল, প্রশান্ত কুমার হালদারদসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে ২০-২২ ধরনের মামলা সাজানো হচ্ছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাক্ট, ফরেন অ্যাক্ট, মানিলন্ডারিং অ্যাক্ট। এছাড়া ভারতীয় নাগরিক না হয়েও ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করা, ভুয়া আধার কার্ডসহ কয়েক ধরনের মামলা।

কিন্তু চিত্র অনেকটা পাল্টে গেছে। মাত্র একটি মামলা দেওয়া হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। সেটি হল 'প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট-২০০২', অর্থাৎ অবৈধভাবে অর্থপাচারের অভিযোগ। এই আইনের ৩ ও ৪ ধারায় মামলা করা হয়েছে গ্রেফতার হওয়া ছয় জনের বিরুদ্ধে।  

কিন্তু কেন একটা মামলা? এর কারণ হিসেবে জানা যাচ্ছে, সম্ভবত শিগগিরই বাংলাদেশের হাতে পি কে হালদার ও সহযোগীদের হস্তান্তর করা হবে।  

২০১৯ সালে বাংলাদেশের একটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার ওরফে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাত ও পাচারের অভিযোগে মামলা করে দেশটির দুর্নীতি দমন কমিশন।

সংস্থাটি জানিয়েছে, ইন্টারপোলের মাধ্যমে পি কে হালদারকে বাংলাদেশে ফেরাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সে কারণে সোমবার (১৬ মে) সকালে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দিল্লিতে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ইডির হানায় উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনাগর কালিমালিপ্ত করার প্রতিবাদে সোমবার (১৭ মে) পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পথে নামে সিপিএম। তাদের মতে শাসকদলের মদদে পি কে হালদারের মতো দুষ্কৃতকারীরা ঠাঁই পাচ্ছে অশোকনগরে। বাংলাদেশে ব্যাংক প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা নিয়ে এসে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে বিলাসবহুল রাজ প্রাসাদের মতো বাড়ি তৈরি করা, একাধিক সম্পত্তির মালিকানা, অর্থাৎ পি কে যা করেছে তা পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের মদদে।

১৬ মে সন্ধ্যায় অশোকনগর শেরপুর থেকে তিন নম্বর রেলগেট হয়ে যশোর রোড ধরে শতাধিক কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে সিপিএম বিল্ডিং মোড়ে এই মিছিল শেষ করে। মিছিল থেকে সিপিএম কর্মীদের মুখে স্লোগান ছিল, ‘শাসকের মদদে অশোকনগরকে আর্থিক অপরাধীদের স্বর্গ বানানো চলবে না। ’

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৮ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২২
ভিএস/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।