জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি বিভাগ গঠন করেছে সরকার। সোমবার রাতে এ-সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
তবে এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, এতে কর্মকর্তাদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই। আর সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন আর্থিক খাতের বিশ্লেষকরা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর বিলুপ্তির সিদ্ধান্তে এনবিআরের কর্মকর্তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এখন দুই বিভাগের যারা সচিব হবেন, তারা প্রশাসন ক্যাডার থেকে আসতে পারেন, সেই পথ তৈরি হলো। এনবিআর থেকে সচিব হবেন কি না, তা বলা যায় না- এমনটাই মনে করেন এনবিআরের (কর নীতি) সাবেক সদস্য সৈয়দ আমিনুল করিম।
গণমাধ্যমকে তিনি জানান, এনবিআর অনেক প্রাচীন প্রতিষ্ঠান। সেই পাকিস্তান আমল থেকেই তা আছে। ফলে এই প্রতিষ্ঠান বিলুপ্তির সিদ্ধান্তে কর্মকর্তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। তবে সরকার যদি মনে করে, দেশের স্বার্থে এই প্রতিষ্ঠান ভেঙে দুটি বিভাগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন, তারা সেটা করতে পারে। কিন্তু আমার কথা হলো, সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে সর্বসম্মতভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার ছিল। কারণ, যারা কাজ করবেন, তাদের আস্থায় নেওয়া সম্ভব না হলে এর মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। তারা হতোদ্যম হয়ে পড়লে কাজ হবে না। সে জন্য আমি মনে করি, কর ও শুল্ক ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং তাঁদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন ছিল।
তার মতে, বোর্ড যখন ভেঙে যাচ্ছে, তখন এনবিআরের যে সদস্যপদ ছিল, তার কী হবে, তা স্পষ্ট নয়। কর ও শুল্ক ক্যাডার থেকে যে ১৬ জন্য কর্মকর্তা এনবিআরের সদস্য ছিলেন, তাদের অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে অস্পষ্টতা আছে। সচিব পদমর্যাদার যেসব পদ ছিল, সেগুলোরই–বা কী হবে। এনবিআর কর্মকর্তাদের শঙ্কা, তাদের পদোন্নতির সুযোগ কমে যাবে।
সৈয়দ আমিনুল করিম আরো জানান, সবচেয়ে বড় কথা, রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনা নামে যে দুটি বিভাগ করা হলো, তাদের সমন্বয় কীভাবে হবে। মূল উদ্দেশ্য তো রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি, সেটা আদৌ করা সম্ভব হবে কি না, অর্থাৎ করজাল বড় করা সম্ভব হবে কি না, তা বুঝতে পারছি না।