ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২, ১০ জুলাই ২০২৫, ১৪ মহররম ১৪৪৭

অর্থনীতি-ব্যবসা

জুলাইশহীদ ও যোদ্ধাদের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগে বিশেষ ফান্ড

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:৪৮, জুলাই ৯, ২০২৫
জুলাইশহীদ ও যোদ্ধাদের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগে বিশেষ ফান্ড

জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার ও আহতদের সহায়তায় ২৫ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে থাকছে আরও কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংক।

তহবিলটি শহীদ পরিবারকে অনুদান এবং আহতদের চিকিৎসা সহায়তায় ব্যয় করা হবে।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় এ কথা জানানো হয়। গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে এ সভায় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি গভর্নর, বিভিন্ন বিভাগের নির্বাহী পরিচালক ও দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা (এমডি)।

সভা শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার এবং আহতদের সহায়তায় একটি ফান্ড গঠনের কথা জানান। তিনি বলেন, এই ফান্ডের আকার হবে প্রায় ২৫ কোটি টাকা।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, এই ফান্ডে বাংলাদেশ ব্যাংক নিজস্ব অর্থ থেকে অবদান রাখবে এবং আরও কয়েকটি ব্যাংক অংশ নেবে।

সভায় জানানো হয়, আমদানি-রপ্তানিতে ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অর্থপাচার হচ্ছে। এর মাধ্যমে সরকার রাজস্ব থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছে, ক্ষতির মুখে পড়ছে দেশের অর্থনীতিও। এ ক্ষতি রোধে বাংলাদেশ ব্যাংকে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। আগামীতে আরও কঠোর হওয়ার কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এসময় সাংবাদিকদের জানান, এলসি দায় পরিশোধের পরও যেসব ব্যাংক গ্রাহকের নামে ফোর্স লোন তৈরি করছে না, তাদের সতর্ক করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, দায় পরিশোধের সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহকের নামে ফোর্স লোন তৈরি করতে হবে। একই সঙ্গে আন্ডার ইনভয়েসিং ও অর্থপাচার ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

মাহবুবুর রহমান আরও জানান, সরকার এখন সঞ্চয়পত্রের চেয়ে ট্রেজারি বিল ও বন্ডে সাধারণ মানুষকে বিনিয়োগে উৎসাহ দিচ্ছে। এজন্য ব্যাংকগুলোকে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। কারণ এসব বিলে সুদের হার এখন বেশি, কর দিতে হয় না, চাইলে বিক্রি করা যায়, এমনকি বিনিয়োগের কোনো সীমাও নেই।

বর্তমানে এক বছর মেয়াদি ট্রেজারি বিলে সুদহার ১১.৬০ শতাংশ এবং দীর্ঘমেয়াদি বন্ডে সর্বোচ্চ ১২.১৭ শতাংশ পর্যন্ত। অন্যদিকে, অনেক ব্যাংক সুদহার বাড়ালেও তারা প্রত্যাশিত হারে আমানত পাচ্ছে না বলে জানান ব্যাংক কর্মকর্তারা।  

সভায় ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে আরও বিস্তৃত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।  

ব্যাংকগুলোকে বলা হয়েছে, যেন গ্রাহকরা অনলাইন বা অ্যাপের মাধ্যমে সেবা পান—যাতে ব্যাংকে না গিয়েও কাজ করা যায়। এতে সময় ও খরচ দুটোই কমবে।

ব্যাংকার্স সভায় জানানো হয়, বর্তমানে ব্যাংকগুলো তাদের মোট ঋণের মাত্র ২ থেকে ৩ শতাংশ হাউজিং লোন হিসেবে বিতরণ করে। এছাড়া একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা পর্যন্ত হাউজ লোন নিতে পারেন।  

ব্যাংকের এমডিরা মনে করেন, এই সীমা সময়োপযোগী নয়, তাই তা বাড়ানো দরকার।

গভর্নর জানান, হাউজ লোনের ঊর্ধ্বসীমা বৃদ্ধি করা হবে এবং এমন কাঠামো তৈরি করা হবে, যাতে একজন গ্রাহক তার প্রয়োজন ও সক্ষমতা অনুযায়ী সহজে গৃহঋণ নিতে পারেন। এছাড়া বর্তমানে গ্রাহকরা ক্রেডিট কার্ডে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারেন। এই সীমাও সময়ের চাহিদা অনুযায়ী পুনর্বিবেচনা করে বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন গভর্নর।

জেডএ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি-ব্যবসা এর সর্বশেষ