ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১৯ সফর ১৪৪৭

অর্থনীতি-ব্যবসা

কর ফাঁকি রোধে ১৫,৪৯৪ করদাতার রিটার্ন ফাইলের অডিট শুরু

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮:৫৮, আগস্ট ১৪, ২০২৫
কর ফাঁকি রোধে ১৫,৪৯৪ করদাতার রিটার্ন ফাইলের অডিট শুরু ইনকাম ট্যাক্স

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ১৫ হাজার ৪৯৪টি আয়কর রিটার্ন ফাইল নিরীক্ষা শুরু করছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেওয়া আয়কর রিটার্ন থেকে দৈবচয়নের ভিত্তিতে এসব করদাতার আয়কর রিটার্ন ফাইল বেছে নেওয়া হয়েছে।

তথ্য গোপন করে ফাঁকি প্রমাণিত হলে এসব করদাতার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে প্রতিষ্ঠানটি।

বুধবার (১৩ আগস্ট) ইনকাম ট্যাক্স অল অডিট লিস্ট (এসেসমেন্ট ইয়ার ২০২৩-২৪) প্রকাশ করেছে এনবিআর। তালিকায় নির্বাচিত সকল ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) নম্বর উল্লেখ রয়েছে।

বেছে নেওয়া ফাইলগুলোর মধ্যে বরিশাল কর অঞ্চলের বিভিন্ন সার্কেলের ৫১৪টি ফাইল; বগুড়ার ৫৫৪টি; কুমিল্লার ৮৬৪টি; চট্টগ্রামের তিন কর অঞ্চলের দুই হাজার ৬০৪টি; কেন্দ্রীয় সার্কেলের ৬৩টি; ঢাকার ২৫ কর অঞ্চলের সাত হাজার ৩৫৩টি; এছাড়া গাজীপুরের ৬১৮টি; খুলনার জোনের ৮৫১টি; বৃহৎ করদাতার ইউনিটের ৫টি; ময়মনসিংহ কর অঞ্চলের ৬০১টি; নারায়ণগঞ্জ কর অঞ্চলের ৪৪২টি; রাজশাহী কর অঞ্চলের ৭১১টি; রংপুর কর অঞ্চলের ৬১৬টি এবং সিলেট কর অঞ্চলের ৫৬২টি ফাইল নিরীক্ষা করা হবে।

করদাতা ও কোম্পানি করদাতার আয়কর রিটার্ন থেকে এসব আয়কর রিটার্ন ফাইল ব্যক্তি বেছে নেওয়া হয়েছে।

দৈবচয়নের মাধ্যমে এসব ফাইল নিরীক্ষার জন্যে এমন সময় বেছে নেওয়া হয়েছে, যখন ‘শূন্য রিটার্ন শাস্তি হিসাবে পাঁচ বছরের জেল হতে পারে’-এমন একটি খবর করদাতাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। শূন্য রিটার্ন বলে কিছু নেই, আয়কর রিটার্নে তথ্য গোপন করলে এবং নিরীক্ষায় ধরা পড়লে পাঁচ বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে-এনবিআরের এমন একটি বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করদাতার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় না দেখিয়ে এর কোনো একটি শূন্য অথবা সব কটি তথ্য শূন্য হিসেবে দেখানো সম্পূর্ণ বেআইনি এবং এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ।

করদাতার জমা দেওয়া আয়কর রিটার্নে তার আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় সম্পর্কিত সঠিক তথ্য না দেখিয়ে মিথ্যা বা অসত্য তথ্য প্রদান করলে বর্তমান আয়কর আইনের ৩১২ ও ৩১৩ ধারা অনুসারে করদাতাকে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে এনবিআরের চেয়ারম্যান ব্যাখ্যা দেন, করদাতার সচেতনতা বৃদ্ধির জন্যই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।

এনবিআর প্রতিবছর আয়করদাতাদের নির্দিষ্ট সংখ্যক রিটার্ন ফাইল বাছাই করে নিরীক্ষা করে। কোনো করদাতা রিটার্ন ফাইলে তথ্য গোপন করলে বা আয়কর রিটার্ন দেওয়ার পরও যদি কর কম দেয়, এসব করদাতাকে আইন অনুযায়ী শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়। বাছাই করা নির্দিষ্ট ফাইল নিরীক্ষা করার ফলে বাছাই প্রক্রিয়া নিয়ে কর অফিসগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি স্বচ্ছ করতে এনবিআরের চেয়ারম্যান আ. রহমান ঘোষণা দেন, সারা দেশের করদাতার আয়কর ফাইলের মধ্য থেকে দৈবচয়নের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সংখ্যক ফাইল বেছে নিয়ে অডিট করা হবে, যাতে বিশেষ ব্যক্তির ফাইল বারবার নিরীক্ষা করা হয় বলে অভিযোগ না উঠে।

এ বিষয়ে রাজস্ব বোর্ডের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল আমিন শেখ বাংলানিউজকে বলেন, এটা রুটিন ওয়ার্ক। প্রতি বছরই নিরীক্ষা করা হয়, এবারও হচ্ছে। তবে এবার দৈবচয়নের ভিত্তিতে ফাইল বেছে নেওয়া হয়েছে।

এনবিআর সূত্র জানায়, দেশে মোট এক কোটি ২৩ লাখ টিআইএন রয়েছে। এর মধ্যে ব্যক্তি ও কোম্পানি পর্যায়ে করদাতা মিলে আয়কর রিটার্ন দেন ৪০ লাখ করদাতা। যার মধ্যে ৭০ ভাগ করদাতা কর দেন না। অর্থাৎ এসব আয়কর রিটার্নদাতার আয় তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকার নিচে। কর বৃদ্ধিতে তথ্য গোপন না করে আয়কর রিটার্ন দেওয়া ও আয়করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধিতে এর সঠিকতা নিরূপণে নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা হয়। যাতে মানুষ আয়কর রিটার্ন দিতে তথ্য গোপন না করে।

জেডএ/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।