ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৯ মহররম ১৪৪৭

অর্থনীতি-ব্যবসা

জীবন বাঁচাতে বিশুদ্ধ পানি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:২৭, অক্টোবর ৫, ২০১৭
জীবন বাঁচাতে বিশুদ্ধ পানি বাংলাদেশ ওয়াটার এক্সপো-২০১৭। ছবি: সুমন শেখ

ঢাকা: পানির অপর নাম জীবন। এ কথাটি সবারই জানা। সে কারণেই বিশুদ্ধ পানির খোঁজে থাকি আমরা সবাই। বাসা-বাড়িতে ফিল্টার কিংবা ফুটিয়ে পানি পানের অভ্যাস রাজধানীর প্রায় প্রতিটি মানুষেরই। তাই সুস্থ জীবনের আশায় ও পানিবাহিত রোগ এড়িয়ে চলার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কোন বিকল্প নেই।

এছাড়া শিল্প-কারখানাগুলোর অবিশুদ্ধ রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত পানির ক্ষেত্রে ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্টের (ইটিপি) মাধ্যমে বিশুদ্ধ করে অবমুক্ত করার ক্ষেত্রে সরকারের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও তার যথার্থ প্রয়োগ রয়েছে এদেশে। তবে বর্তমানে আবার ইটিপি প্লান্টের মাধ্যমে পানি অবমুক্ত না করে সেই পানিকে পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী করে ব্যবহারের পরিকল্পনায় এগিয়ে যাচ্ছে সরকার ও শিল্প-কারখানার মালিকরা।

সে কারণেই প্রয়োজন পানি পরিশোধনের উন্নতমানের প্রযুক্তি। সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় শুরু হয়েছে ‘বাংলাদেশ ওয়াটার এক্সপো-২০১৭’।

উন্নতমানের প্রযুক্তির সমন্বয়ে পানির সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও রাসায়নিক দ্রব্যাদি দিয়ে বোঝাই এ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছে চীন, ভারত, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানি।

প্রদর্শনীতে চীন থেকে আসা জিংসু হেংফেং ফাইন কেমিক্যালস কো. লি.–এর সেলস ম্যানেজার ডেইজি ক্সিয়া জানান, আমরা উন্নতমানের কেমিক্যালস নিয়ে এই প্রথমবারের মত ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে এসেছি। পলি ইলেক্ট্রোলাইট, সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড, সোডিয়াম লরেল সালফেট পাউডার, ইটিপি কেমিক্যালস, ফেরিক ক্লোরাইডসহ সকল রাসায়নিক পদার্থ আছে আমাদের কাছে।   আর আমরা গবেষণার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত এসব পদার্থের নতুন রুপ উদ্ভাবন করছি যার দাম কম ও ভালো ফলাফল দেয়। এগুলো নিয়ে আমরা বাংলাদেশে আমাদের ব্যবসা পরিচালনা করতে ইচ্ছুক। কেননা এদেশে এ বিষয়ে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

চীনের ফ্রগ পাম্প ইন্ডাসট্রিজ কোম্পানির দ. এশিয়ার সেলস ম্যানেজার ইউলিয়াম এইচ  জানান, চীনে প্রতিনিয়ত নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হচ্ছে। তার মধ্যে আমাদের পাম্প উল্লেখযোগ্য।

পাম্পটি অনেক চিকন আকারের হবার কারণে সহজে মাটির নিচে প্রবেশ করিয়ে পানি উত্তোলন করা সম্ভব। আর দামও তুলনামূলক কম এবং কর্মক্ষমতা ভালো। তবে এটা শিল্প-কারখানার চেয়ে ঘরোয়া ব্যবহারের জন্য বেশি উত্তম।

শ্রীলংকার অ্যাকুয়া মাস্টার্স প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডিএমইউ ডিসানায়াকা বলেন, আমরা শ্রীলংকায় সফলতার সঙ্গে বহুদিন ধরে আমাদের ব্যবসা পরিচালনা করছি। মূলত আমরা ইটিপি প্লান্ট নির্মাণের কাজ করি। আমাদের প্যাকেজে পুরো প্লান্টের ডিজাইন থেকে শুরু করে পরিচালনা পর্যন্ত ও প্রয়োজনে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়ে থাকে। আমরা এদেশে নতুন এসেছি এবং স্থায়ীভাবে ব্যবসা  পরিচালনা  করার ইচ্ছা আছে।

ভারতের স্কাইক্র্যাপার কোম্পানির সিনিয়র মার্কেটিং ম্যানেজার অতনু সোম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের মূল সামগ্রী ঘরোয়া ব্যবহারের জন্য। আমাদের ফিল্টারগুলো সচরাচর ফিল্টার থেকে আলাদা ও রিভার্স অসমোসিস প্রক্রিয়ায় কাজ করে। বাংলাদেশে প্রথম এসেছি ও স্থায়ীভাবে ব্যবসা করতে চাই, তাই ডিলার খুঁজছি। আশা করছি পেয়ে যাবো।

এদিকে বাংলাদেশের গ্রিন ডট লিমিটেডের আয়োজনে রয়েছে ঘরোয়া ও শিল্প-কারখানায় পানি পরিশোধনের জন্য বিভিন্ন যন্ত্রপাতি।  
 
প্রদর্শনীতে ঘুরে বিভিন্ন বিদেশি স্টলের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে জানা যায়, প্রায় প্রত্যেকটি কোম্পানি বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এসেছে এবং ব্যবসা পরিচালনা করতে চায়। তবে তাদের সবচেয়ে বড় চাহিদা সঠিক ডিলার খুঁজে পাওয়া। এবং এ কাজে তারা এদেশের সহযোগিতা চান।

এ বিষয়ে আয়োজক কমিটির সদস্য ড. নাসির উদ্দীন খান বাংলানিউজকে জানান, আমরা এসব বিদেশি কোম্পানিকে এদেশে এনেছি শুধু মেলার লক্ষ্যেই না। তারা এদেশে ব্যবসা পরিচালনা করতে চায় তা জানি এবং সে লক্ষ্যে আমরা সঠিক ডিলারদের খোঁজে আছি। তাদের ব্যবসা পরিচালনার জন্য সকল সহায়তা আমরা করছি। এতে আমাদের দেশেরই মঙ্গল।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১৭
এমএএম/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।